ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

গানে নৃত্যে আর আবৃত্তিতে বসন্ত উৎসবের দ্বিতীয় সন্ধ্যা

প্রকাশিত: ০৬:০৩, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

গানে নৃত্যে আর আবৃত্তিতে বসন্ত উৎসবের দ্বিতীয় সন্ধ্যা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ শিল্পকলা একাডেমি প্রাঙ্গণজুড়ে ধ্বনিত হচ্ছে রবীন্দ্রনাথের গান ‘রাঙিয়ে দিয়ে যাও যাওগো এবার যাবার আগে’। গানের সঙ্গে পরিবেশিত হচ্ছে দলীয়নৃত্য। উন্মুক্ত মঞ্চের চতুর্দিকে উৎসুক দর্শক উপভোগ করছে এসব নৃত্য ও গান। আবৃত্তি, গান আর নৃত্যের ছন্দে রাজধানীর সেগুনবাগিচার শিল্পকলা একাডেমিতে চলছে বসন্ত উৎসব। শিল্পকলা একাডেমি আয়োজিত তিন দিনব্যাপী এ উৎসবের বুধবার ছিল দ্বিতীয় দিন। সন্ধ্যায় সরকারী সঙ্গীত মহাবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দলীয় পরিবেশনা ‘আহা আজি এ বসন্তে’ গানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় অনুষ্ঠান। পরে তাদের কণ্ঠে পরিবেশিত হয় রবীন্দ্রসঙ্গীত ‘বসন্ত এলো এলো এলোরে’। দীপা খন্দকার ও বেনজীর সালাম সুমীর পরিচালনায় পরিবেশিত হয় পর পর দুটি দলীয় নৃত্য। ‘রাঙিয়ে দিয়ে যাও যাওগো এবার যাবার আগে’ ও ‘আজি কমল মুকুল দল খুলিল’ গানের সঙ্গে নৃত্য পরিবেশন করে শিল্পীরা। মঞ্চে আবৃত্তি নিয়ে আসেন সৈয়দ হাসান ইমাম। বিমুগ্ধচিত্তে তার আবৃত্তি উপভোগ করে দর্শক। শিল্পী ইয়াসমিন মুশতারীর কণ্ঠে পরিবেশিত হয় পর পর তিনটি গান। এগুলো হচ্ছে ‘ও কোকিলারে’, ‘কেন বনবনে মালতী’ ও ‘কুহু কুহু কোয়েলিয়া’। একক সঙ্গীত পরিবেশন করেন শিল্পী কমলিকা ও সালমা আকবর। একক আবৃত্তি পরিবেশন করেন মোঃ হাসানুজ্জামান কল্লোল। এম আর ওয়াসেফ ও ফারজানা চৌধুরী বেবীর পরিচালনায় ‘আজ বসন্তের আগুন লাগে’ ও ‘আমার বসন্ত মন হলো রঙ্গিন’ গানের সঙ্গে পরিবেশিত হয় দলীয় নৃত্য। অনুষ্ঠানে একক সঙ্গীত পরিবেশন করেন শিল্পী ইয়াসমিন আলী, তপন চৌধুরী, প্রিয়াংকা গোপ, বাপ্পা মজুমদার, হৈমন্তি রক্ষিত ও চৈতি চাকমা। আবৃত্তি করেন শিল্পী জয়ন্ত চট্টোপাধ্যায়, ঝর্ণা সরকার ও শিমুল মোস্তফা। মুনমুন আহমেদের পরিচালনায় ‘নীল দিগন্তে সুরের আগুন’ গানের সঙ্গে পরিবেশিত হয় দলীয় নৃত্য। সবশেষে গান পাগল ব্যান্ডের পরিবেশনায় ছিল ব্যান্ড সঙ্গীত। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা ৬টায় শুরু হবে সমাপনী আয়োজন। এতে নৃত্যে অংশ নেবে পল্লভী ডান্স সেন্টার, নৃত্যালোক, দীব্য, স্পন্দন, নান্দনিক নৃত্য সংগঠন, বেণুকা ললিতকলা একাডেমি, জাগোয়ার্ট সেন্টার, বাফা, রেওয়াজ পারফর্মিং আর্টস, কত্থক নৃত্য সম্প্রদায়, ধৃতি নৃত্যানালয়, আঙ্গিকাম, ঘাসফুল নদী ও সামিনা হোসেন প্রেমার দলসহ ২০টি নৃত্যদল। ভালবাসা দিবসে স্বপ্নদলের নাটক ‘চিত্রাঙ্গদা’ মঞ্চস্থ ॥ সারা পৃথিবীর মতো বুধবার দেশে ‘ভ্যালেনটাইন ডে’ পালিত। এ দিবসকে কেন্দ্র করে নাট্যসংগঠন স্বপ্নদলের পক্ষ থেকে ‘চিত্রাঙ্গদায় হোক তবে ভালবাসার দর্শন, রবীন্দ্রনাথে যুগল মজে প্রেমরসে অবগাহন’ স্লোগানে ‘চিত্রাঙ্গদা’ নাটকের পর পর দুটি প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়। শিল্পকলা একাডেমির স্টুডিও থিয়েটার হলে বিকাল থেকে শুরু হয় নাট্য প্রদর্শনী। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চিরায়ত সৃষ্টি ‘চিত্রাঙ্গদা’র গবেষণাগার নাট্যরীতিতে নির্দেশনা দিয়েছেন জাহিদ রিপন। স্বপ্নদলের ‘চিত্রাঙ্গদা’ প্রযোজনাটি নির্মিত হয়েছে রবীন্দ্রনাথের কাব্যনাট্য পা-ুলিপিটি অবলম্বনে। এর নাট্যকাহিনীতে উপস্থাপিত হয় মহাবীর অর্জুন সত্যপালনের জন্য একযুগ ব্রহ্মচর্যব্রত গ্রহণ করে মণিপুর বনে এসেছেন। মণিপুর-রাজকন্যা চিত্রাঙ্গদা, অর্জুনের প্রেমে উদ্বেলিত হলেও অর্জুন রূপহীন চিত্রাঙ্গদাকে প্রত্যাখ্যান করে। অপমানিত চিত্রাঙ্গদা প্রেমের দেবতা মদন এবং যৌবনের দেবতা বসন্তের সহায়তায় এক বছরের জন্য অপরূপ সুন্দরীতে রূপান্তরিত হন। এবারে অর্জুন যথারীতি চিত্রাঙ্গদার প্রেমে পড়েন। কিন্তু অর্জুনকে লাভ করেও চিত্রাঙ্গদার অন্তর দ্বন্দ্বে ক্ষত-বিক্ষত হতে থাকে। অর্জুন প্রকৃতপক্ষে কাকে ভালবাসেন, চিত্রাঙ্গদার বাহ্যিক রূপ নাকি তার প্রকৃত অস্তিত্বকে? এভাবে ‘চিত্রাঙ্গদা’ পৌরাণিক কাহিনীর আড়ালে যেন এ কালেরই নর-নারীর মনোদৈহিক সম্পর্কের টানাপোড়েন এবং পাশাপাশি পারস্পরিক সম্মানাবস্থানের প্রেরণারূপে উপস্থাপিত হয়। নাটকটিতে অভিনয় করেছেন সোনালী, জুয়েনা, শিশির, শ্যামল, রানা, জেবু, সুমাইয়া, সামাদ, ঊষা, অর্ক, স¤্রাট, আলী, বিপুল, অনিন্দ্য, নিসর্গ, মাসুদ, সুকুমার, বিমল প্রমুখ। সপ্তম কিবরিয়া আন্তর্জাতিক ছাপচিত্র মেলা শুরু হচ্ছে আজ ॥ কিবরিয়া আন্তর্জাতিক ছাপচিত্র মেলা শুরু হচ্ছে আজ বৃহস্পতিবার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের জয়নুল গ্যালারিতে বিকেল ৫টায় সপ্তমবারের মতো আয়োজিত এ মেলা উদ্বোধন করবেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। বিশেষ অতিথি থাকবেন বরেণ্য শিল্পী অধ্যাপক রফিকুন নবী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করবেন আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক শিল্পী সৈয়দ আবুল বারক্ আলভী। তিন দিনব্যাপী এ মেলায় দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজের চারুকলা বিভাগ, ছাপচিত্র স্টুডিওসমূহ এবং দেশের বাইরের পাঁচ প্রতিষ্ঠানসহ সর্বমোট ২২টি প্রতিষ্ঠান অংশগ্রহণ করবে। মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে দেশবরেণ্য শিল্পী ও ছাপচিত্রী কালিদাস কর্মকার কে তাঁর সারাজীবনের কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ আজীবন সম্মাননা প্রদান করা হবে। ঢাবিতে ছয় দিনব্যাপী চলচ্চিত্র উৎসব ॥ বিশ্ববিদ্যালয় রিপোর্টার জানান, বাংলা ভাষাভাষী দর্শককে দেশীয় সংস্কৃতির অন্যতম ধারক ও বাহক বাংলা চলচ্চিত্রের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে চলছে ছয় দিনব্যাপী ‘আমার ভাষা চলচ্চিত্র উৎসব’। ১৭তম বারের মতো আয়োজিত এই উৎসব চলবে ১৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদ এই উৎসবের আয়োজন করেছে। এবারের চলচ্চিত্র উৎসবে দুই বাংলার ধ্রুপদী ও সমসাময়িক মিলিয়ে মোট ২০টি চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে। আজ চতুর্থ দিনে প্রদর্শিত হবে সকাল ১০.০০টায় জহির রায়হান পরিচালিত কাঁচের দেয়াল ১৯৬৩, দুপুর ১২.৪৫ এ শামীম আখতার পরিচালিত রীনা ব্রাউন ২০১৭ এরপর ৩.৩০ এ সৈয়দ সালাউদ্দিন জাকী পরিচালিত ঘুড্ডি ১৯৮০ এবং সন্ধ্যা ৬.৩০ এ ঋতুপর্ণ ঘোষ পরিচালিত আবহমান ২০০৯। ১৭ ফেব্রুয়ারি সমাপনী অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চলচ্চিত্র সংসদ এর পক্ষ থেকে ২০১৭ সালে নির্মিত শ্রেষ্ঠ বাংলা চলচ্চিত্রকে প্রদান করা হবে হীরালাল সেনপদক। আমার ভাষার চলচ্চিত্র- ১৪২৪-এর আয়োজনে প্রধান সহযোগী সারাবাংলা ডট নেট। এছাড়াও প্রদর্শন সহযোগী রয়েছে বাংলাদেশ ফিল্ম আর্কাইভ এবং জাজ মাল্টিমিডিয়া। গণমাধ্যম সহযোগী ডিবিসি নিউজ এবং ঢাকা এফএম। প্রতিবছর ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলা ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে বাংলা ভাষার চলচ্চিত্র নিয়ে চলচ্চিত্র সংসদ আয়োজন করে আমার ভাষার চলচ্চিত্র শীর্ষক চলচ্চিত্র উৎসব।
×