ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

অবশ্যই বিচার হবে ॥ দুর্নীতিবাজ সন্ত্রাসী ও জঙ্গী

প্রকাশিত: ০৫:৪৯, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

অবশ্যই বিচার হবে ॥ দুর্নীতিবাজ সন্ত্রাসী ও জঙ্গী

ওবায়দুল কবীর, রোম (ইতালি) থেকে ॥ প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা দুর্নীতিবাজ এবং সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে বিচার চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়ে বলেছেন, বাংলাদেশের উন্নয়নের স্বার্থে দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের সঙ্গে জড়িতদের বিচার হতেই হবে। যারা দুর্নীতি, সন্ত্রাস করবে এবং জঙ্গীবাদে জড়াবে তাদের অবশ্যই বিচার করতে হবে। দেশের শান্তি ও উন্নয়ন নিশ্চিত করতে এটা প্রয়োজন। আর আমরা দেশে একটি শান্তিপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি করতে চাই। আমরা দেশকে উন্নত এবং জনগণের ভাগ্যের পরিবর্তন করতে চাই। আর এটা তখনই সম্ভব হবে যখন আমরা দুর্নীতি, জঙ্গীবাদ ও স্বজনপ্রীতি নিয়ন্ত্রণ এবং অপসারণ করতে পারব। মঙ্গলবার স্থানীয় সময় রাতে রোমের পার্কো দ্য প্রিনসিপি গ্রান্ড হোটেল এ্যন্ডি এসপিএ’তে আওয়ামী লীগের ইতালি শাখা আয়োজিত এক গণসংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার রায় প্রসঙ্গ তুলে ধরে বলেন, দেশের বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীন। বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার দুর্নীতির প্রমাণ হয়েছে আদালতে। আদালত রায় নিয়ে আমাদের তো করার কিছু নেই। আর আমরা যদি কিছু করতামই তাহলে ১০ বছর ধরে তো মামলা চলতে দিতাম না। ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের নির্বাচনে জনগণের ম্যান্ডেট নিয়ে যখন ক্ষমতায় আসলাম, তখনই তো শেষ করতে পারতাম। ইতালি আওয়ামী লীগের সভাপতি হাজী মোহাম্মদ ইদ্রিসের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী, পররাষ্ট্রমন্ত্রী এএইচ মাহমুদ আলী, সর্ব ইউরোপীয় আওয়ামী লীগের সভাপতি অনিল দাসগুপ্ত, বেলজিয়াম আওয়ামী লীগের সভাপতি শহীদুল হক, সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর চৌধুরী রতন, সহ-সভাপতি মনির হোসেন, প্রচার সম্পাদক আক্তারুজ্জামান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। প্রধান অতিথির বক্তব্যে রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার মামলার রায় প্রসঙ্গে আরও বলেন, আদালত যখন দেখেছে বিএনপি নেত্রীর মাধ্যমে এতিমের টাকার সম্পূর্ণ অপব্যবহার হয়েছে তখন আদালত তাকে এই শাস্তির রায় দেয়। এক্ষেত্রে আমাকে তিরস্কার এবং সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন গড়ে তোলার কি যুুক্তি থাকতে পারে? তিনি বলেন, আজকে যে মামলায় খালেদা জিয়ার শাস্তি হয়েছে সে মামলা কে দিয়েছে? খালেদা জিয়ার প্রিয় ব্যক্তিত্বরা দিয়েছেন। সেনা বাহিনীর ৯ জেনারেলকে ডিঙিয়ে মঈন উ আহমেদকে খালেদা জিয়াই সেনাপ্রধান করেছিলে। আর বিশ্ব ব্যাংকে চাকরি করত ফখরুদ্দীন সাহেবকে নিয়ে এসে বাংলাদেশ ব্যাংকের গবর্নর করেছিলেন। তাদের দলীয় লোক ইয়াজ উদ্দীন সাহেবকে বানিয়েছিলেন রাষ্ট্রপতি। ফখরুদ্দীন, মইন উদ্দিন, ইয়াজ উদ্দীন এই তিনজনই তো তার (খালেদা জিয়া) বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা দিল। এ মামলা তো আওয়ামী লীগ দেয়নি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৭ সালে এই মামলা হয় এবং পরের বছরই এর বিচার কার্যক্রম শুরু হয়। এই মামলা ১০ বছর ধরে চলে এবং মামলার শুনানির জন্য ২৩৬ কার্যদিবস ধার্য হয়। কিন্তু খালেদা জিয়া আদালতে গেছেন মাত্র ৪০ দিন। খালেদা জিয়ার আপত্তির কারণে এই মামলায় তিনবার আদালত পরিবর্তন করা হয় এবং তিনি এর বিরুদ্ধে ২২ থেকে ২৪টি রিট করেন। তিনি বলেন, তিনবার আদালত পরিবর্তন করে মামলাকে দীর্ঘায়িত করার পরেও যখন আদালত খালেদা জিয়াকে শাস্তি দিল তখন বিএনপি এই স্বল্প পরিমাণ টাকার জন্য খালেদা জিয়াকে শান্তি দেয়ার যৌক্তিকতার প্রশ্ন তুলছে। যে টাকা খালেদা জিয়া এবং সংশ্লিষ্টরা অপব্যবহার করেছেন সে টাকা এতিমদের জন্য এসেছিল। কিন্তু এতিমদের পরিবর্তে সে টাকা তাদের নিজেদের তহবিলে চলে যায়। বিএনপি নেতারা বলেন, সেই টাকা তাদের তহবিলে রাখার ফলে দুই কোটি থেকে বেড়ে তিন কোটি হয়েছে। কিন্তু এতিমরা এ থেকে কি লাভটা পেল? প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার তার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত কোন মামলা প্রত্যাহার করেনি। তিনি আগেই প্রত্যেক মামলার তদন্ত করে রিপোর্ট প্রদানের জন্য বলেছিলেন। আমি প্রত্যেকটি মামলার তদন্ত করে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলেছিলাম। মামলাগুলোর প্রকৃত অবস্থা আমরা যাচাই করে দেখতে চেয়েছিলাম। তিনি বলেন, প্রত্যেকটি মামলার তদন্ত হয়েছে এবং এর রিপোর্ট জমা দেয়া হয়েছে। আমি কোন মামলা প্রত্যাহার করিনি এবং এর অনুমতিও দেইনি। কেন আমি এটা করব? আমি জানতাম, আমি তো কোন দুর্নীতি করিনি। এ সময় প্রধানমন্ত্রী পদ্মা সেতু নির্মাণ নিয়ে বিশ্ব ব্যাংকের কল্পিত দুর্নীতির অভিযোগের প্রসঙ্গ উত্থাপন করে বলেন, হিলারি ক্লিনটন সে সময় যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ছিলেন এবং ড. মুহাম্মদ ইউনূস সে সময় তাকে পদ্মা সেতু প্রকল্পের দোষ ধরতে মুখিয়ে ছিলেন। যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্ট ওই সময় তিন তিনবার আমার ছেলেকে এ ব্যাপারে হুমকিও দেয়। তিনি বলেন, এটি কানাডার আদালতেই প্রমাণ হয়েছে যে, পদ্মা সেতু প্রকল্পে কোন দুর্নীতি হয়নি। আমি বলেছিলাম আমি দুর্নীতি করার জন্য ক্ষমতায় আসিনি। আমি জনগণের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্যই ক্ষমতায় এসেছি। নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য নয়। বিএনপি-জামায়াত জোটের ভয়াল অগ্নিসন্ত্রাস ও নাশকতার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৪ ও ২০১৫ সালে নির্বাচন প্রতিরোধ এবং সরকার পতনের নামে এই বিএনপি জ্বালাও-পোড়াও ও অগ্নিসংযোগ শুরু করে। ২০১৩ সালে ঠিক একইভাবে তারা সন্ত্রাসী কর্মকা- শুরু করে দেয়। তারা আগুন দিয়ে মানুষ পুড়িয়েছে। প্রায় তিন হাজারের ওপরে মানুষকে তারা আগুন দিয়ে ঝলসে দিয়েছে। ওই তিন বছরে প্রায় পাঁচ শ’র কাছাকাছি মানুষ মৃত্যুবরণ করেছে। পুলিশ, বিজিবি, সেনাসদস্যকে পুড়িয়ে মেরেছে। কত অন্যায় তারা করেছে একটু চিন্তা করুন। সারা বাংলাদেশে এক ধরনের তা-ব চালায়। তিনি বলেন, ২০০১ থেকে ২০০৬ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকার সময় আওয়ামী লীগ নেত্রী আইভি রহমান, শাহ এএমএস কিবরিয়া. আহসানউল্লাহ মাস্টার এমপিসহ অসংখ্য নেতাকর্মীকে হত্যা করেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, খালেদা জিয়ার দুই ছেলে অর্থ পাচারের সঙ্গে জড়িত। তাদের পাচারকৃত টাকা আমরা ফেরত এনেছিলাম। তারেকের বিরুদ্ধে এফবিআই আদালতে জবানবন্দী দিয়েছে। এছাড়া উনি (খালেদা জিয়া) প্রধানমন্ত্রী হয়ে কালো টাকা সাদা করেছেন। পাশাপাশি তার দুই ছেলেও কালো টাকা সাদা করেছেন। এত টাকা আসল কোথায় থেকে? দেশটাকে দুর্নীতির আখড়া করে দিয়েছিল তারা। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া ক্ষমতায় থাকাকালে বাংলাদেশ দুর্নীতিতে পর পর ৫ বার চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। বিএনপি-জামায়াত জোটের সীমাহীন দুর্নীতি, সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদের কঠোর সমালোচনা করে তিনি বলেন, তারা জনগণের জন্য কিছুই করে নাই, শুধু ক্ষমতা কুক্ষিগত করা ছাড়া। খালেদা জিয়ার সাজা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বিএনপি লোকেরা বলে এতটুকু টাকার জন্য এই শাস্তি দেয়ার কি দরকার ছিল? এতটুকু মানে দুই কোটি টাকার জন্য এই শাস্তি কেন দেয়া হলো? টাকাটা কোন এতিমের কাছে গেছে এমন প্রশ্ন রেখে তিনি বলেন, যদি খালেদা জিয়া বল তো আমার দুই ছেলে এতিম, তাদের জন্য রেখেছি। তারও একটা যৌক্তিকতা ছিল। সেটাও উনি করেননি। যখন মামলাটি করা হয় (ব্যারিস্টার) রফিকুল হক সে সময় বলেছিলেন খালেদা জিয়া ওই পরিমাণ টাকা জমা করে দিলেই মামলাটি প্রত্যাহার হয়ে যাবে। কিন্তু তিনি (খালেদা জিয়া) টাকার মায়া ছাড়তে পারেননি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওই দুই কোটি টাকায় ধানম-িতে চারটি ফ্ল্যাট কেনা যেত। বিএনপি নেত্রী টাকার মায়া ছাড়তে পারেনি। নিজের কাছে কুক্ষিগত করতে গিয়ে ধরা খেয়েছেন। এখন যারা বিএনপির দরদি, আঁতেলরা আছেন তারাও বলেন দুই কোটি টাকার জন্য কেন এত মামলা। তাহলে আমার এখানে একটা প্রশ্ন আছে, দুর্নীতির করার জন্য কি একটা সিলিং থাকবে যে, এত কোটি পর্যন্ত দুর্নীতি করা জায়েজ। তারা কি সেটা বলতে চায়? বিএনপি তাহলে একটা দাবি করুক যে এত কোটি পর্যন্ত তারা দুর্নীতি করতে পারবে। সেটা নিয়ে আদালতে একটা রিট করুক। রায় বাতিলের জন্য বিএনপির চলমান আন্দোলনের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, বিএনপি প্রধান বিচারপতির দরজায় লাথি মেরেছে। বিএনপির একটি অভ্যাস আছে টাকা দিয়ে সবকিছু কিনে নেয়ার কিংবা বিচারকদের দরজায় লাথি মারার এবং মাস্তানি করার, আমরা সেটা জানি। শেখ হাসিনা বলেন, ২১ বছর পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসে। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ পর্যন্ত বলা যায়, সেই সময় ছিল উন্নয়নের ‘স্বর্ণযুগ’। সবকিছুতে এগিয়ে যাচ্ছিল বাংলাদেশ। ২০০১ এ বিএনপি আসল, আবার সব থেমে গেল। আবার সব খুন, হত্যা, জঙ্গী-সন্ত্রাস, বাংলা ভাই সৃষ্টি এগুলো শুরু হলো। বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের অপকর্মের কারণেই ২০০৭ সালে দেশে জরুরী অবস্থা জারি হয়েছিল। বিএনপি দেশে সন্ত্রাস ও জঙ্গীবাদ সৃষ্টি করে, দুর্নীতি ও বাংলা ভাই সৃষ্টি করে এবং এই প্রেক্ষাপটেই আমরা জরুরী অবস্থা দেখেছি। বিএনপির নেতৃত্বের উদ্দেশে তিনি বলেন, খাসলত যায় না মরলে, অভ্যাস যায় না ধুলে। বিএনপি ও আওয়ামী লীগের শাষণামলের পার্থক্য উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা উন্নয়ন করি দেশের মানুষের। আর বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন ভাগ্য ফিরেছে কার? ১৯৮১ সালে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান নিহত হওয়ার পর ভাঙ্গা স্যুটকেস ও ছেড়া গেঞ্জি রেখে যাওয়ার প্রচারের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, তার পরবর্তীতে আমরা কী দেখলাম? ভাঙ্গা স্যুটকেস কী জাদুর বাক্স হয়ে গেলো? সেখান থেকে কোকো ১, ২, ৩, ৪ লঞ্চ বের হচ্ছে। সেখান থেকে ইন্ডাস্ট্রি বের হচ্ছে। সেখান থেকে নানান ধরনের সম্পদের পাহাড় গড়ছে দেশে-বিদেশে এবং মানি লন্ডারিং করে যাচ্ছে। আর ছেড়া গেঞ্জির ফুটো দিয়ে ফ্রেঞ্চ শিপন বের হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী তার সরকারের সফলতা তুলে ধরে বলেন, দুর্নীতি করতে আসিনি, বাংলাদেশের জনগণের ভাগ্য গড়তে এসেছি। নিজেদের ভাগ্য না। বিএনপি ও তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় নিজের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি মামলার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, প্রত্যেকটা মামলা তদন্ত হয়েছিল এবং সেই মামলায় কিছু পায়নি। পদ্মা সেতু নিয়ে বিশ্ব ব্যাংকের অভিযোগের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ জানানোর বিষয়টি তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কানাডার ফেডারেল কোর্ট ঘোষণাই দিয়েছে যে, বিশ্ব ব্যাংকের এই অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। আমি বলতেই পারি, আমি আমার ছোট বোন এবং আমাদের ছেলেমেয়ে কখনও এমন কোন কাজ করিনি, যাতে বাংলাদেশের মানুষের ভাবমূর্তি নষ্ট হয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৭৫ সালের ১৫ অগাস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হতাকা-ের পর অবৈধভাবে ক্ষমতা দখলকারীরা হত্যা, ক্যু ষড়যন্ত্রের রাজনীতি করেছিল। বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্রের নামে যুদ্ধাপরাধীদের রাজনীতি করার সুযোগ করে দেয়। ব্যাংকে ঋণ খেলাফি সংস্কৃতি, দুর্নীতি ও লুটপাট করার সুযোগ করে দিয়ে একটা এলিট শ্রেণী তৈরি করার মাধ্যমে সে (জিয়া) তার ক্ষমতাটাকে কুক্ষিগত করতে চেয়েছিল। এটাই জাতির জন্য দুর্ভাগ্য। শেখ হাসিনা বলেন, ২০০১ সালে আমরা ক্ষমতায় আসতে পারলাম না। ষড়যন্ত্র করে আসতে দেয়া হয়নি। তার কারণ ছিল- গ্যাসের মালিক বাংলাদেশ, বিক্রি করবে আমেরিকা আর তা কিনবে ভারত। আমি এই মুচলেকায় সই দিই নাই, এই প্রস্তাবে রাজি হইনি। তিনি বলেন, খালেদা জিয়া দেশের সম্পদ বিক্রির মুচলেকায় সই দিয়েছিল বলেই ক্ষমতায় আসতে পেরেছিল। আর খালেদা জিয়া ক্ষমতায় এসে জিয়া ও এরশাদের মতো একই কাজ করে। প্রধানমন্ত্রী তার ভাষণে সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকা- বিশেষ করে কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, তথ্য প্রযুক্তি এবং কূটনৈতিক খাতে সাফল্যের খ- চিত্র তুলে ধরেন। প্রবাসী বাংলাদেশীদের বিভিন্ন দাবির প্রেক্ষিতে দেশীয় অর্থনীতিতে রেমিটেন্স পাঠানোর মাধ্যমে তাদের অবদানের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধিতেও তাদের বড় অবদান রয়েছে। তিনি এ সময় প্রবাসীদের কল্যাণে তার সরকার গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপও তুলে ধরেন। ঢাকা-রোম সরাসরি বিমান ফ্লাইট পুনরায় চালুর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বিএনপি সরকারের দুর্নীতি এবং তাদের ভুল সিদ্ধান্ত বিমানকে ধ্বংস করে দিয়েছে (বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স)। লাভজনক হলে আমরা পুনরায় ঢাকা-রোম ফ্লাইট চালু করব। প্রধানমন্ত্রী কাল ফিরছেন ॥ ইতালি ও ভ্যাটিকান সিটিতে ৪ দিনের সরকারী সফর শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বুধবার রাতে দেশের উদ্দেশ্যে রোম ত্যাগ করার কথা। প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী ইতিহাদ এয়ারলাইন্সের একটি বিমানের স্থানীয় সময় রাত ১০টায় (বাংলাদেশ সময় বুধবার দিবা রাত ৩টা) রোমের লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি ফিউমিসিনো বিমানবন্দর থেকে আবুধাবীর উদ্দেশ্যে যাত্রা করার কথা। দেশে ফেরার পথে শেখ হাসিনা সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবিতে একদিনের যাত্রাবিরতি করবেন। শুক্রবার সকাল ৮টায় তিনি ঢাকা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছবেন। প্রধানমন্ত্রী আন্তর্জাতিক কৃষি উন্নয়ন তহবিলের (ইফাদ) ৪১তম পরিচালনা পর্ষদের অধিবেশনে যোগ দিতে রবিবার রোম পৌঁছেন।
×