ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মাঠে নামছে বিধ্বস্ত বাংলাদেশ!

প্রকাশিত: ০৪:০৫, ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে মাঠে নামছে বিধ্বস্ত বাংলাদেশ!

মিথুন আশরাফ ॥ সাকিব আল হাসান নেই। ইনজুরিতে আগেই প্রথম টি২০ থেকে বাদ পড়েছেন। আজ শুরু হতে যাওয়া টি২০ সিরিজের প্রথম ম্যাচটির একাদশে তো তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহীমেরও না থাকার সম্ভাবনা জেগে উঠেছে। দুইজনেই আছেন ইনজুরিতে। তামিমের পিঠের পেশিতে টান পড়েছে। আর মুশফিক কব্জির চোটে ভুগছেন। দল বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছে। যে বিধ্বস্ত অবস্থা আগে থেকেই লেগে আছে। এই অবস্থাতেই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে স্বল্প পরিসরের খেলার সিরিজ খেলতে নামবে বাংলাদেশ। ত্রিদেশীয় সিরিজে শ্রীলঙ্কার কাছে ফাইনালে হেরে শিরোপা হাতছাড়া হয়েছে বাংলাদেশের। সিরিজে এত সুন্দর খেলতে থেকেও শেষ দুই ম্যাচেই সব গুলিয়ে গেছে। এমনভাবে হেরেছে, বাংলাদেশ দলটিকে চেনাই যায়নি। যেন বিধ্বস্ত একটি দল খেলেছে। ত্রিদেশীয় সিরিজ শেষে টেস্ট সিরিজ শুরু হলো। প্রথম টেস্টে হারের সম্ভাবনা থেকে দল ড্র করেছে। কিন্তু দ্বিতীয় টেস্টে বড় ব্যবধানে হার হয়েছে। এমন অবস্থাই দেখা গেছে যেন ব্যাটসম্যানরা ব্যাটিংই করতে ভুলে গেছেন। ত্রিদেশীয় সিরিজ ও টেস্ট সিরিজ জিততে না পারার পরই দলের ক্রিকেটাররা বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছেন। শ্রীলঙ্কা যেন মহা পরাক্রমশালী দল হয়ে উঠেছে। এই দলের বিপক্ষে টি২০তে খেলতে নামবে বাংলাদেশ। এমন মুহূর্তে আবার দলের সেরা ক্রিকেটারদের মধ্যে যদি তিনজন না থাকেন তাহলে দলের বেহাল দশা না হওয়ার সম্ভাবনাই কম। সাকিবের পর তামিম ও মুশফিকও ইনজুরিতে পড়ে আছেন। সাকিবের ব্যাকআপ হিসেবে নাজমুল ইসলাম অপুকে আগেই নেয়া হয়েছে। তামিম ও মুশফিকের ব্যাকআপ হিসেবে নেয়া হয়েছে মোহাম্মদ মিঠুনকে। তামিমের ইনজুরি ততটা মারাত্মক নয়। তবে মুশফিকের ইনজুরিটা যেহেতু কব্জিতে, মুশফিক একজন ব্যাটসম্যান, তাই মুশফিকের না খেলার সম্ভাবনাই বেশি দেখা হচ্ছে। যদিও অধিনায়ক মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ আশায় আছেন। তিনি জানিয়েছেন, ‘একটু ইনজুরি কনসার্ন ছিল। তারপরও কালকে (আজ) পর্যন্ত আমরা অপেক্ষা করব।’ অপেক্ষা করার মতো অবশ্য যথেষ্ট সময়ও পাওয়া যাচ্ছে। মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে আজ যে প্রথম টি২০ শুরু হবে, সেটি বিকেল ৫টায় শুরু হবে। এরপর ১৮ ফেব্রুয়ারি সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে যে দ্বিতীয় ও শেষ টি২০ ম্যাচটি হবে সেটিও বিকেল ৫টায় শুরু হবে। বিকেল ৫টায় ম্যাচ শুরু হবে বলেই সময় আছে। সকালে খেলা নয়। এমনকি দুপুরেও না। তাই যথেষ্ট সময় মিলছে। আর তাতে করে যদি তামিম ও মুশফিক সুস্থ হয়ে ওঠেন তাহলে খেলতেও পারেন। তবে তামিমের পিঠের পেশির টান মারাত্মক না হলেও খেলতে নামলে যদি আবার ব্যথা অনুভূত হয়। সমস্যা আরও বেড়ে যাবে। তাহলে শ্রীলঙ্কায় যে টি২০ টুর্নামেন্ট রয়েছে সেটিতেও সমস্যা হয়ে যেতে পারে। যদিও ৬ মার্চ শুরু হবে নিদাহাস ট্রফি। অনেক সময় আছে। তারপরও তামিমের মতো ওপেনারের বেলাতে কী আর ঝুঁকি নেয়া যাবে? মুশফিকের বেলাতেও একই বিষয় প্রযোজ্য। মুশফিকের কব্জিতে সমস্যা থাকায় মুশফিকের একাদশে না থাকার সম্ভাবনাই বেশি থাকছে। যদি ঠিক না হয়ে উঠতে পারেন তাহলে পরের টি২০তেও খেলার সম্ভাবনা নাও থাকতে পারে। এমন অবস্থায় শ্রীলঙ্কা স্বাভাবিকভাবেই বাংলাদেশকে ঘিরে ধরতে চাইবে। সাকিব না থাকাতেই তারা সিরিজে এগিয়ে থাকছে। আবার যদি তামিম ও মুশফিকও না খেলেন তাহলে তো টি২০ সিরিজে শ্রীলঙ্কাই ফেবারিট হয়ে নামবে। মাহমুদুল্লাহ অবশ্য সবকিছুকে পেছনে ফেলে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টার কথাই জানালেন। এমনকি মাহমুদুল্লাহ বিপিএলে পারর্ফম করা দলের তরুণ ক্রিকেটারদের নিয়েও অনেক আত্মবিশ্বাসী। বুধবার ম্যাচপূর্ব সংবাদ সম্মেলনে বললেন, ‘সবাই ওয়েল ডিজার্ভিং। বিপিএলে বড় ক্রিকেটারের মতো পারফর্ম করেছে। প্রত্যাশা থাকবে তারা যেন সেই ধারাবাহিকতাটা ধরে রাখতে পারে।’ সঙ্গে ঘুরে দাঁড়ানোর কথা বললেন, ‘আমি সবসময় বিশ্বাস করি যে কোন ফরমেটেই নিজেদের মাটিতে আমরা এগিয়ে। টেস্ট ও ওয়ানডেতে হয়নি। আশাকরি টি২০তে আমরা ঘুরে দাঁড়াব এবং খুব ভালভাবেই ঘুরে দাঁড়াব।’ এখন দল ঘুরে দাঁড়াতে পারলেই হলো। টি২০তে অবশ্য শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সর্বশেষ ম্যাচটিতে বাংলাদেশই জিতেছে। দেশের মাটিতে কিংবা শ্রীলঙ্কার মাটিতে বাংলাদেশই দুই দলের মধ্যকার শেষ ম্যাচটিতে জিতেছে। সবমিলিয়ে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৭ ম্যাচের ৫টিতে হেরেছে বাংলাদেশ। দুটিতে জিতেছে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে তাই জেতার সম্ভাবনা এবারও উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছে না। সাকিব যেমন কয়েকদিন আগে বলেছিলেন, টি২০তে দুই দলের মধ্যে পার্থক্য খুবই কম থাকে। দিনটিতে যে দল ভাল করে তারাই জিতে। ২০ ওভারের খেলা। তাই খুব দ্রুত সিদ্ধান্তগুলো নিতে হয়। আসলেই তাই। বাংলাদেশের জেতার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছে না এখানেই। দলে পাঁচ নতুন ক্রিকেটার যুক্ত হয়েছেন। যদি সাকিবের সঙ্গে তামিম ও মুশফিকের খেলা শেষ পর্যন্ত না হয় তাহলে নতুনদের সুযোগ ভালভাবেই মিলতে পারে। তারা সবাই বিপিএলে দুর্দান্ত নৈপুণ্য দেখিয়েই দলে সুযোগ পেয়েছে। যদি বিপিএলের মতো খেলা উপস্থাপন করতে পারেন তাহলে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেও জয় সম্ভব। তবে শঙ্কা শুধু একটি জায়গাতেই। বাংলাদেশ দল যে এ মুহূর্তে সবদিক দিয়েই ‘বিধ্বস্ত’ হয়ে আছে। আর এই বিধ্বস্ত অবস্থা নিয়েই শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুই ম্যাচের টি২০ সিরিজ খেলতে নামছে আজ বাংলাদেশ।
×