ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

গ্রামীণ অর্থনীতিতে বিনিয়োগের আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর;###;রোমে ইফাদ পরিচালনা পর্ষদের উদ্বোধনী অধিবেশনে ভাষণ

দারিদ্র্য বিমোচন চাই

প্রকাশিত: ০৫:৩৮, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

দারিদ্র্য বিমোচন চাই

ওবায়দুল কবীর, রোম (ইতালি) থেকে ॥ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ক্ষুধা ও দারিদ্র্য দূর করতে গ্রামীণ অর্থনীতিতে বিনিয়োগের জন্য উন্নয়ন সহযোগীদের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানিয়ে বলেছেন, এক্ষেত্রে উন্নয়ন সহযোগীদের আরও একটু উদার হতে হবে। আমরা বিশ্বাস করি, স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার জন্য গ্রামীণ অর্থনীতিতে বিনিয়োগ একটি প্রধান বিবেচ্য বিষয় এবং বিশ্বব্যাপী অংশীদারিত্ব ও সহযোগিতা ছাড়া এটি অর্জন করা যাবে না। মঙ্গলবার স্থানীয় সময় সকালে ইন্টারন্যাশনাল ফান্ড ফর এ্যাগ্রিকালচার ডেভেলপমেন্ট (ইফাদ)’র ৪১তম পরিচালনা পর্ষদের বার্ষিক অধিবেশনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ ও উন্নয়ন সহযোগীদের মধ্যে সহায়তা অব্যাহত থাকার ব্যাপারে আশা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অগ্রগতির এই ধারা অব্যাহত রাখতে ইফাদ গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখবে বলে আমাদের প্রত্যাশা। শেখ হাসিনা বলেন, ইফাদ-এর সহায়তার ও সহযোগিতার মডেলটি জাতিসংঘের অন্যান্য সংস্থা থেকে অনেক ভিন্ন। ইফাদ-এর এই মডেলটি মানবতায় এখনকার মতো অনাগত দিনগুলোতেও কাজ করে যাবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দীর্ঘমেয়াদি স্থিতিশীলতা স্থাপন ছাড়া টেকসই উন্নয়ন অর্জন করা যাবে না। গ্রামীণ সামাজিক ও জলবায়ুগত স্থিতিশীলতার উন্নয়নে একটি ব্যাপকভিত্তিক টেকসই গ্রামীণ অর্থনীতি প্রয়োজন। টেকসই গ্রামীণ অর্থনীতি তৈরিতে বিনিয়োগের মাধ্যমে দীর্ঘমেয়াদিভাবে স্থিতিশীলতা আনার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, প্রায় এক দশক ধরে সুশাসন থাকায় বাংলাদেশ ভাগ্যবান। শেখ হাসিনা বলেন, আমরা সতর্কতার সঙ্গে চার বছরের আর্থসামাজিক প্রবৃদ্ধি হিসেব করে আমাদের কৌশল নির্ধারণ করেছি এবং গত নয় বছর ধরে এটি বাস্তবায়নের চেষ্টা করছি। আমরা খুবই সতর্কতার সঙ্গে পারিপার্শ্বিক অবস্থা বিবেচনা করে চাহিদা ও প্রয়োজনের মধ্যে সমন্বয় করেছি। তিনি বলেন, ‘ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের রিপোর্ট অনুযায়ী ২০৫০ সাল নাগাদ বিশ্বের জনসংখ্যা ৯ বিলিয়ন ছাড়িয়ে যাবে এবং এর অর্ধেক হবে মধ্যবিত্ত। এর ফলে বিশ্বের আবাদি জমি, বনভূমি এবং পানির ওপর প্রচ- চাপ পড়বে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সমুদ্রপৃষ্ঠের পানির উচ্চতা বৃদ্ধিতে অনেক দেশের আবাদি জমি ব্যাপকভাবে হ্রাস পাবে এবং ‘সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধিতে ছাড়াই আমরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হব। ২০৫০ সালে বিশ্বের খাদ্য চাহিদা ২০০৬ সালের অবস্থান থেকে অন্তত ৬০ শতাংশ ছাড়িয়ে যাবে এবং খাদ্য মূল্য বৃদ্ধি পেয়ে ৮৪ শতাংশ দাঁড়াতে পারে। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, আমরা কিভাবে এ ধরনের বিরূপ পরিস্থিতি মোকাবেলা করব? আমি আপনাদের আমার দেশের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে কৃষি প্রবৃদ্ধির কথা তুলে ধরব, যা আমরা বৈশ্বিক পর্যায়ে মানব উন্নয়নের জন্য অন্যান্য দেশ গ্রহণ করতে পারে অথবা আরও কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করতে পারি। সরকারপ্রধান শেখ হাসিনা আরও বলেন, আমরা আরেকটি ১৯৮১ সালের মুখোমুখি হতে চাই না, তখন আমরা বুঝতে পারি কৃষি প্রবৃদ্ধিকে উপেক্ষা করা মানবজাতির জন্য অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। প্রথমে আমি আপনাদের বলব, প্রতিবছর জলবায়ুর বিরুপ প্রভাবের কারণে দেশে খাদ্য সংকট এবং খাদ্য উৎপাদন হ্রাসের যে কোন সংকট মোকাবেলায় বাংলাদেশী জনগণ স্বাভাবিকভাবে সক্ষম। তিনি বলেন, সংকট মোকাবেলায় বাংলাদেশীরা আস্থার সঙ্গে শক্তভাবে লড়াই করে সমস্যার সমাধান এবং সংকট কাটিয়ে উঠতে বিকল্প উপায় গ্রহণের মাধ্যমে সফলতা অর্জন করে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ প্রায় এক দশক ধরে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ এবং চলতি বছর অসময়ে বারবার বন্যার কারণে অপ্রত্যাশিতভাবে খাদ্য ঘাটতি দেখা দিয়েছিল। এই ঘাটতি মোকাবেলায় গ্রাহকদের কাছে পর্যাপ্ত খাদ্য সরবরাহ নিশ্চিত করতে সঙ্গে সঙ্গেই খাদ্য আমদানি নীতি গ্রহণ করা হয়। তিনি বলেন, ‘আপনারা নোট রাখতে পারেন যে, আমরা খাদ্য উৎপাদন ১৯৭১ সালের ১১ মিলিয়ন টন থেকে ২০১৭ সালে ৩৯ মিলিয়ন টনে উন্নীত করেছি। যদিও এসময় এক-তৃতীয়াংশ আবাদি জমি হারিয়েছি।’ ২০০৮ সালে খাদ্য উৎপাদন ৯ মিলিয়ন টন বৃদ্ধি পেয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটি সম্ভব হয়েছে সরকার কৃষকদের বিপুল ভর্তুকি, সহজ শর্তে ও সুদমুক্ত ঋণ প্রদানসহ কৃষকদের কাছে কৃষি উপকরণ পৌঁছানের কারণে। তিনি বলেন, সংকট কাটিয়ে উঠতে আমরা আইসিটি’র সকল সুযোগ কাজে লাগিয়েছি। বর্তমানে দক্ষতা উন্নয়নে এবং গবেষণায় বিশেষ করে জলবায়ু পরিবর্তন সংশ্লিষ্ট ইস্যুগুলোর ব্যাপারে আইসিটি সহায়ক ভূমিকা রাখছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, উপগ্রহের মাধ্যমে নতুন ম্যাপিং কৌশল এবং জিআইএস জলবায়ু পরিবর্তনের ঝুঁকি সম্পর্কে ধারণা পেতে সরকারের জন্য সহায়ক হয়েছে। এটি নতুন উদ্ভাবিত শস্যজাতের জন্য কার্যকরভাবে পানি সংরক্ষণ, এলাকা চিহ্নিতকরণ, উপযুক্ত মানচিত্র তৈরিতে সহায়ক হয়েছে। তিনি বলেন, এর ফলে আমরা এখন খাদ্য ও কৃষিতে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের পাশাপাশি কিছু বাড়তি খাদ্য রফতানির সক্ষমতা অর্জন করেছি। শেখ হাসিনা বলেন, টেকসই উন্নয়ন এজেন্ডা- ২০৩০ গ্রহণের পর ‘কাউকে পেছনে ফেলে রাখা যাবে না’ এ লক্ষ্যে আমাদের দেশে সপ্তম পঞ্চ-বার্ষিক পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। ভবিষ্যতের জন্য আমাদের লক্ষ্য একই এবং তা পরবর্তী পঞ্চ-বার্ষিক পরিকল্পনায় অন্তর্ভুক্ত করা হবে। আমাদের প্রথম লক্ষ্য হচ্ছে, ক্ষুধা ও দারিদ্র্য দূর এবং সবার জন্য পুষ্টিকর খাবার নিশ্চিত করা। তিনি বলেন, প্রাগৈতিহাসিককাল থেকে বাংলাদেশ উর্বর ভূখ- হিসেবে পরিচিত যেখানে সব ধরনের কৃষিপণ্য সহজেই উৎপাদিত হয়। কিন্তু ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠাকালে দেশ কঠিন খাদ্য ঘাটতির মুখে পড়ে। তখন দেশে সাড়ে সাত কোটি মানুষের জন্য খাদ্য উৎপাদন হতো মাত্র এক কোটি দশ লাখ টন। তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর পরই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির ওপর জোর দেন এবং দেশে সবুজ বিপ্লব’-এর ডাক দেন। উৎপাদন বৃদ্ধির জন্য বঙ্গবন্ধু ভূমি সংস্কার, খাজনা কমানো, গবেষণা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা, সেচ পাম্প স্থাপন, কৃষি উপকরণ বিনামূল্যে বিতরণসহ কিছু বাস্তবসম্মত পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। ইতালির রাজধানী রোমে ইফাদ’র সদর দফতরে শুরু হওয়া এ অধিবেশনের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় ‘ফ্রম ফ্র্যাগিলিটি টু লং টার্ম রিসিয়েন্স : ইনভেস্টিং ইন সাসটেইনেবল রুরাল ইকোনোমিক্স।’ ইফাদ প্রেসিডেন্ট গিলবার্ট এফ হোংবো অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য রাখেন। উদ্বোধনী অধিবেশনে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেজের ভিডিও বার্তা প্রচার করা হয়। ভিডিও বার্তায় তিনি সংস্থাটির ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অভিনন্দন জানান এবং উত্তরোত্তর সাফল্য কামনা করেন। ইফাদের প্রেসিডেন্ট গিলবার্ট ফাউসন হোউংবোর সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে পেরুর প্রেসিডেন্টের পক্ষে পেরু প্রজাতন্ত্রের কৃষি ও সেচমন্ত্রী জোস বেরলে আরিস্তা আরবিডলোও বক্তৃতা করবেন। অধিবেশনের বাইরে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে আগামী দুই বছরের জন্য নেদারল্যান্ডের হ্যান্স হোগেরভোরস্টকে ইফাদের নতুন চেয়ারপার্সন নির্বাচিত করা হয়। বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলে নেতৃত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বাংলাদেশের অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, কৃষিমন্ত্রী বেগম মতিয়া চৌধুরী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ এইচ মাহমুদ আলী অধিবেশনে যোগ দেন। ইফাদ’র পরিচালনা পর্ষদ এই সংস্থার মূল সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে থাকে। ইফাদের সদস্য রাষ্ট্র থেকে এই পর্ষদ গঠিত হয় এবং বার্ষিক বৈঠকে মিলিত হয়। এতে সদস্য রাষ্ট্রের প্রতিনিধিরা যেমন-গবর্নর, বিকল্প গবর্নর এবং অন্য কোন পরামর্শক পদবির ব্যক্তিগণ যোগ দেন। অধিবেশনে যোগ দেয়ার জন্য পর্যবেক্ষকগণকেও আমন্ত্রণ জানানো হয়। তহবিল প্রদানের সকল ক্ষমতা পরিচালনা পর্ষদের ওপর ন্যস্ত থাকে। এই পর্ষদ সদস্যপদ প্রদান, ইফাদের প্রেসিডেন্ট নিয়োগ, স্থায়ী তহবিলের অবস্থান সংক্রান্ত বিষয়াদি, প্রশাসনিক বাজেট অনুমোদন এবং বড় ধরনের নীতমালাসমূহ, মানদ- ও আইন-কানুন তৈরি করে। রোহিঙ্গাদের খাদ্য সরবরাহে দাতাগোষ্ঠীর আগ্রহ কমছে : ডব্লিউএফপি নির্বাহী পরিচালক ॥ বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচীর (ডব্লিউএফপি) নির্বাহী পরিচালক ডেভিড বিসলে বলেছেন, রোহিঙ্গা ইস্যু সম্পর্কে দাতা সংস্থাগুলোর আগ্রহ হ্রাস পাওয়ায় বিশ্বের সবচেয়ে বড় এই মানবিক সংস্থাটি বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় গ্রহণকারী রোহিঙ্গাদের খাদ্য সরবরাহের ক্ষেত্রে সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। রোম সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে সোমবার স্থানীয় সময় সন্ধ্যায় তার হোটেলে বৈঠককালে ডেভিড বিসলে আরও বলেন, রোহিঙ্গাদের খাওয়ানোর ব্যাপারে দাতা সংস্থার আগ্রহ কমে যচ্ছে। তবে আমরা জাতিসংঘের ব্যবস্থার আওতায় দাতা সংস্থার মধ্যে এই আগ্রহটা ধরে রাখতে রাখতে চেষ্টা করছি। কিন্তু এটি চালিয়ে যাওয়া ক্রমশই কঠিন হয়ে পড়ছে। তবে বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচী (ডব্লিউএফপি) আগের মতই পাশে থাকবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। বৈঠক শেষে পররাষ্ট্র সচিব মোঃ শহীদুল হক সাংবাদিকদের ব্রিফিংকালে ডেভিড বিসলেকে উদ্ধৃত করে একথা বলেন। পররাষ্ট্র সচিব বলেন, ডব্লিউএফপি বাংলাদেশে বসবাসরত প্রায় ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে খাওয়ানোর ক্ষেত্রে প্রধান ভূমিকা পালন করছে। গত ছয় মাসে রোহিঙ্গাদের মধ্যে ৮০ মিলিয়ন ডলার মূল্যের খাবার বিতরণ করেছে ডব্লিউএফপি। ডব্লিউএফপি’র পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী তিনি বলেন, প্রতি মাসে রোহিঙ্গাদের খাবার সরবরাহ করতে ২০ থেকে ২৫ মিলিয়ন ডলারের প্রয়োজন পড়ে। রোহিঙ্গা ইস্যুতে আরেকটি বিষয়ের প্রতিও দৃষ্টি আকর্ষণ করেন ডব্লিউএফপি’র নির্বাহী পরিচালক- সেটি হচ্ছে, বর্ষাকালে বাংলাদেশের যেস্থানে রোহিঙ্গারা আশ্রয় নিয়েছে সেখানে ভূমিধসের সৃষ্টি হতে পারে। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রয়োজন হলে কিছুসংখ্যক রোহিঙ্গাদের অস্থায়ীভাবে ভাসানচর এলাকায় স্থানান্তর করা হবে। ডব্লিউএফপি’র নির্বাহী পরিচালক রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন প্রচারণার প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ‘আমি এই বিষয়ে ইতোমধ্যেই দু’বার যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টকে অবহিত করেছি। তিনি এ প্রসঙ্গে উল্লেখ করেন ডব্লিউএফপি মনে করে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় রোহিঙ্গাদের ওপর সংঘটিত অত্যাচারের বিষয়ে পদক্ষেপ নেবে। প্রধানমন্ত্রী এ সময় তার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের সর্বশেষ অধিবেশনে প্রদত্ত ভাষণে রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে তুলে ধরা ৫টি পয়েন্টেরও পুনরোল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী ডেভিড বিসলেকে বলেন, বাংলাদেশ রোহিঙ্গাদের নিজভূমিতে সফল প্রত্যাবাসনের জন্য ইতোমধ্যে মিয়ানমারের সঙ্গে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করেছে এবং তিনি এই চুক্তির সফল বাস্তবায়নের জন্য মিয়ানমারের প্রতি চাপ প্রয়োগ অব্যাহত রাখতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি অনুরোধ করেছেন। পররাষ্ট্র সচিব বলেন, বর্তমানে ২০১৭ থেকে ২০২০ মেয়াদে বাংলাদেশে ডব্লিউএফপি’র ১৩টি প্রকল্প বাস্তবায়নাধীন রয়েছে, যাতে ব্যয়ের পরিমাণ ৩৪৩ মিলিয়ন ডলার। ডেভিড বিসলে এ সময় প্রধানমন্ত্রীকে বিভিন্ন সাফল্যের বিশেষ করে কৃষিক্ষেত্রে এবং খাদ্য নিরাপত্তা অর্জনের প্রশংসা করেন। তিনি আশ্বস্ত করেন যে, ডব্লিউএফপি বাংলাদেশের সঙ্গে খাদ্য নিরাপত্তার বিষয়ে তাদের সহযোগিতা অব্যাহত রাখবে। পরে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর হোটেল কক্ষে রোমে বাংলাদেশের অনারারি কনসালও সাক্ষাত করেন। শেখ হাসিনা এসময় ইতালিতে বসবাসরত প্রবাসী বাংলাদেশীদের স্বার্থ সংরক্ষণে তাদেরকে আন্তরিকভাবে কাজ করে যাবার আহ্বান জানান।
×