স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ সহকারীদের সংখ্যা অনেক- একটা ম্যাচ খেলার জন্য একাদশ গঠন করা সম্ভব। কিন্তু সেই একাদশের অধিনায়ক হবেন কে? মাথাই তো নেই! এ কারণে এবার ত্রিদেশীয় সিরিজ ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে টেস্ট, টি২০ সিরিজে বাংলাদেশ জাতীয় দলের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক, সাবেক সহকারী কোচ খালেদ মাহমুদ সুজন। আসলে পদটার নামকরণ যাই হোক, তিনিই মূলত প্রধান কোচের দায়িত্ব পালন করেছেন। কিন্তু দলের বাজে পারফর্মেন্সের পর সব আগ্রহ শেষ হয়ে গেছে সুজনের। তিনি বেশ আক্ষেপ নিয়েই জানিয়েছেন, আর জাতীয় দলের হয়ে কাজ করতে চান না। এদিকে আগামী মাসেই শ্রীলঙ্কা সফরে ত্রিদেশীয় টি২০ সিরিজ নিদাহাস কাপে অংশ নেবে দল। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) এখন পর্যন্ত হেড কোচ নিয়োগে এগোতে পারেনি। ব্যাটিং কোচ হিসেবে মাইকেল বেভান কিংবা নেইল ম্যাকেঞ্জির কথা শোনা গেলেও শ্রীলঙ্কার সফরের আগে তাদের আসার সম্ভাবনা একেবারেই ক্ষীণ। এমনটাই জানিয়েছেন বিসিবি মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস।
গত ডিসেম্বরে বাংলাদেশ জাতীয় দলের কোচ হিসেবে দায়িত্ব নিতে সাক্ষাতকার দিয়েছিলেন রিচার্ড পাইবাস ও ফিল সিমন্স। তবে তাদের কাউকেই পায়নি বাংলাদেশ। সিমন্স আফগানিস্তানের পরামর্শক হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন আর পাইবাস ওয়েস্ট ইন্ডিজ ক্রিকেটের সঙ্গেই থেকে গেছেন। তাহলে বিসিবি এখন কোন পথে এগোচ্ছে? নতুন করে কারও নামও শোনা যায়নি প্রধান কোচের পদে আসার ব্যাপারে। এ বিষয়ে জালাল বলেন, ‘বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন সোর্সে আমরা চেষ্টা করছি যাতে বাংলাদেশের জন্য যে ধরনের কোচ দরকার সে ধরনের একজনকে নিয়োগ দিতে চাওয়াতেই দেরি হচ্ছে। কোচের যে তালিকা আমাদের কাছে আছে আমরা মনে করি যে অনেকে বাংলাদেশ দলের সঙ্গে হয়ত ওইভাবে মানিয়ে নিতে পারবে না বলে আমরা নিশ্চিত করতে পারছি না। দুটো ব্যাটিং কোচের নাম আপনারা আগেই জানেন বেভান ও ম্যাকেঞ্জি। তো নিদাহাস কাপ পর্যন্ত আমরা যদি তাদের আনতে পারি, কিন্তু সম্ভাবনা খুব কম। এত কম সময়ের মধ্যে কোন ব্যাটিং কোচ হয়ত আনা সম্ভব হবে না। এর মধ্যে এখান থেকে আমরা কাউকে হেড কোচ বানাতে পারি কিনা, সে ধরনের আলাপ-আলোচনা হচ্ছে। সে কে হবে সেটা এখনই বলতে পারছি না। এখনও বিবেচনায়।’
জালাল জানিয়েছেন, শ্রীলঙ্কা সফরের আগে সময় অনেক কম থাকায় এর আগে হেড কোচ আসার সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে। তবে এ বিষয়ে বিসিবি বেশ সিরিয়াস বলেই দাবি করলেন তিনি। কারণ হিসেবে তিনি উদাহরণ টানতে গিয়ে বলেন, ‘একটা স্কুলে সব ধরনের শিক্ষক থাকতে পারেন। অঙ্কের শিক্ষক থাকতে পারেন, ভুগোলের শিক্ষক থাকতে পারেন কিন্তু হেড মাস্টার তো দরকার। সব ধরনের শিক্ষক আছে, হেড মাস্টার নাই। আমাদের একজন হেড কোচ অবশ্যই দরকার। এটা কিন্তু খেলোয়াড়রাও অনুভব করছে। কয়েক দিন আগে কয়েকজন সিনিয়র খেলোয়াড় বলছিল যত শিগগির সম্ভব হেড কোচের প্রয়োজন।’ সেটা আপাতত বিসিবি পারছে না। আবারও কি সুজনের অধীনেই খেলবে বাংলাদেশ দল? এ বিষয়ে অবশ্য সুজন বলেন, ‘নিদাহাস কাপে বোর্ড ঠিক করবে। কারণ পজিশনটা তো বোর্ড আমাকে দিয়েছে। কাজ করব না এই কথা কখনই বলতে চাই না। কিন্তু বাঙালী কেউ কাজ করলে সেটা আসলে সবচেয়ে বড় সমস্যা। আমি এখনও আছি টিকে এটাই সবচেয়ে বড় কথা বাংলাদেশ হেরে যাওয়ার পরেও। চান্দিকা যখন প্রথম আসল। অনেক বড় কোচ আসছে খারাপ ফল হয়েছে শুরুতে। ব্যক্তিগতভাবে আমি আর আগ্রহী না। আমার আসলে বাংলাদেশ ক্রিকেটের সঙ্গেই কাজ করতে ইচ্ছে করছে না। আমার আসলে নোংরা লাগছে সত্যি কথা বলতে গেলে ওইভাবে। এত বছর বাংলাদেশ ক্রিকেটের সঙ্গে কাজ করছি, বাংলাদেশের উন্নতির জন্যই কাজ করছি। এখানে আমার কোন স্বার্থ নাই। আমি আর আগ্রহী না।’ তবে শ্রীলঙ্কা দল বাংলাদেশ সফরে আসার আগে সুজনই বেশ আগ্রহ দেখিয়েছিলেন জাতীয় দলর হয়ে কাজ করার। এই আগ্রহ কমে যাওয়ার কারণ কি? সুজন নিজেই জানালেন বিষয়টি,‘মিডিয়াতে যেভাবে লেখা হয়। মিডিয়াতে ভাল খারাপ সবই হবে। কিন্তু কিছু কিছু জিনিস নেগেটিভ হয়ে যাচ্ছি। ক্রিকেটের জন্য খুব কঠিন। আমি তো গড না। আমি তো খালেদ মাহমুদ সুজন। আমি খুবই সামান্য একটা মানুষ। আমি যখন শুরু করি ১২-১৩ বছর বয়সে। অন্য কিছু নিয়ে কথা বলা আমার মেজাজ খারাপ হইতে পারে। টেকনিক্যাল হয়ত খারাপ হতে পারি। কিন্তু অন্য বিষয় নিয়ে যখন কথা বলে তখন এটা আমাকে খুবই আহত করে। সত্যি কথা বলতে গেলে যখন আসে যে আমি আবাহনীর হেড কোচ। আমি মোসাদ্দেককে খেলাই নাই এই কারণে যে আবাহনীতে খেলার জন্য। যখন ন্যাশনাল ইন্টারেস্ট নিয়ে কথা বলে তখনই এটা খুবই আহত করে। মোসাদ্দেক আর আবাহনী যদি বাংলাদেশের ম্যাচ হারার কারণ হয়ে যায়। তাহলে খুব কঠিন আসলে।’
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: