ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

টি২০ সিরিজেও নেই সাকিব

প্রকাশিত: ০৬:২৮, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

টি২০ সিরিজেও নেই সাকিব

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু জানতেন, প্রথম টি২০তে সাকিব আল হাসান খেলতে পারবেন না। এরপরও কেন সাকিবকে প্রথম টি২০র দলে রাখা হলো? এই প্রশ্নই এখন চতুর্দিকে ঘুরছে। এখন যে অবস্থা দেখা যাচ্ছে তাতে সাকিব তো শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুই ম্যাচের টি২০ সিরিজেই খেলতে পারবেন না। সাকিব নিজেই সেই ইঙ্গিত দিয়েছেন। তিনি নিজেই বলেছেন, ‘আনুষ্ঠানিকভাবে জানানো হয়েছে কিনা জানি না। তবে টি২০ সিরিজ খেলার সম্ভাবনা বোধহয় আমার নেই। ডাক্তার বলেছেন যে কমপক্ষে আরও দুই সপ্তাহ সময় লাগবে। তার মানে এই সিরিজ খেলা হচ্ছে না। দুই সপ্তাহের ভেতরে সুস্থ হয়ে আবার রিহ্যাব করে পুরো অনুশীলন করে শ্রীলঙ্কাতে আমাদের যে ত্রিদেশীয় টি২০ টুর্নামেন্ট হবে সেটাতে খেলতে পারব।’ সাকিবের কথাতেই স্পষ্ট, টি২০ সিরিজে থাকতে পারছেন না। খেলতেও পারবেন না। দুই সপ্তাহ যদি লাগে তাহলে ১৫ ফেব্রুয়ারি প্রথম ও ১৮ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় টি২০ ম্যাচে কোনভাবেই খেলার কথা নয়। ১০ ফেব্রুয়ারি সেলাই খোলার পর দুই সপ্তাহ হিসেবে ধরলে ২৪ ফেব্রুয়ারির আগে ব্যাট-বল হাতে ধরতে পারবেন না সাকিব। যদি ধরেনও আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার মতো পুরোপুরি প্রস্তুত থাকবেন না। কোনভাবে ঝুঁকি নিয়ে দ্বিতীয় টি২০ খেলে ফেললেও এরপর যে আবার বড় কোন ইনজুরি ঘিরে ধরবে না, তা বলা কঠিন। এসব হিসেবে সাকিব যে টি২০ সিরিজ খেলতেই পারবেন না, তা নিশ্চিতই হয়ে যাচ্ছে। সাকিব চাচ্ছেন, ৬ মার্চ থেকে ১৮ মার্চ শ্রীলঙ্কার মাটিতে, শ্রীলঙ্কার স্বাধীনতার ৭০ বছর পূর্তি উপলক্ষে বাংলাদেশ, ভারত ও শ্রীলঙ্কাকে নিয়ে যে নিদাহাস টি২০ ট্রফি হবে সেটিকে খেলার জন্য পুরো প্রস্তুত হয়ে থাকতে। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) শুভেচ্ছাদূত হয়েছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব। রবিবার দুদক কার্যালয়ে চুক্তিস্বাক্ষর অনুষ্ঠানের মাধ্যমে তাকে শুভেচ্ছাদূত করা হয়। চুক্তিস্বাক্ষর শেষে দুদকের যে কোন কর্মসূচীতে থাকার অঙ্গীকার করার সঙ্গে টি২০ সিরিজ নিয়ে নিজের না থাকার বিষয়টি জানান সাকিব। ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে আঙ্গুলে চোট পেয়ে মাঠ ছাড়ার পর টেস্ট সিরিজ খেলতে না পারা সাকিব বলেন, ‘পেশাদার ক্রিকেটার হিসেবে মাঠে থাকতে না পারলে তো খারাপ লাগেই। এটার ওপর আমার হাতও নেই যে কিছু করতে পারব। চিন্তা করেছি যে, এটাই হয়তো নিয়তিতে ছিল। কিছু কিছু ব্যাপারে আসলে কি হলে কি হতো, এটা চিন্তা করা যাবে না। ভাগ্যের ওপর ছেড়ে দিতে হয়। তবে একজন খেলোয়াড় যদি খেলতে না পারে সেই অনুভূতি বলে বোঝানোর নয়।’ প্রথম টেস্টে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ড্র করা গেছে। কিন্তু দ্বিতীয় টেস্টে আড়াইদিনেই হেরে গেছে বাংলাদেশ ২১৫ রানের বড় ব্যবধানে। হতাশা সবার ভেতরই আছে। ক্রিকেটারদেরও সেই হতাশা স্বাভাবিকভাবে ছুয়ে গেছে। সাকিবও তাতে হতাশ হয়েছেন। টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে এবারই দায়িত্ব নেয়ার কথা ছিল। কিন্তু চোট তাকে সেই দায়িত্ব নিতে দেয়নি। টি২০তেও তিনিই অধিনায়ক। কিন্তু এই ফরমেটেও তার থাকা হচ্ছে না। টেস্ট সিরিজ হার নিয়ে হতাশার কথা সাকিব জানিয়েছেন এভাবে, ‘টেস্টে আমাদের সবারই লক্ষ্য ছিল জয়। অবশ্যই একটু হতাশ। আমার মনে হয় ক্রিকেটাররা সবাই হতাশ। কিন্তু ক্রিকেটে সবসময় চাওয়ামতো ফল আসে না।’ সাকিবের বিশ্বাস, সামনে যে টি২০ সিরিজ রয়েছে তাতে ঘুরে দাঁড়াবে দল। কিভাবে? সাকিব বললেন, ‘আমি খুবই আশাবাদী যে টি২০ দিয়ে ঘুরে দাঁড়াব। এখানে একটা ওভারই খেলা বদলে দিতে পারে। টি২০তে কেউ ফেবারিট হয়ে নামে না। আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়া বা ভারত যদি খেলে তাও ফেবারিট না। টি২০র মজাটাই এখানে। আমি বলব এখানে কেউ ফেবারিট না, যারা ভাল খেলবে তারাই জিতবে।’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘আমি আমার দল নিয়ে আশাবাদী। কারণ এই দল ভাল করার সামর্থ্য রাখে। এখানে যারা আছেন, সবাই পারফর্মার। বিশেষ করে যারা নতুন এসেছে তারা বিপিএলে খুব ভাল করেছে বলে এসেছে। বিপিএলে আন্তর্জাতিক খেলোয়াড়দের সঙ্গে খেলে অবস্থাটা বুঝে গেছে। তাদের ভয় পাওয়ার কোন কারণ নেই। আমি চাই সবাই স্বাধীনতা নিয়ে খেলুক, দলের জন্য ভাল কিছু করার চেষ্টা থাকুক।’ সাকিব সেই চেষ্টায় থাকছেন না। সাকিব না থাকা যে কতটা সমস্যার তা ভালভাবেই বুঝেছে বাংলাদেশ দল। টেস্ট, ওয়ানডের চেয়েও যেন টি২০তে সাকিবের গুরুত্ব বেশি। কারণ তিনি যে টি২০র ফেরিওয়ালা। দেশ-বিদেশের সব ফ্র্যাঞ্চাইজি টি২০ ক্রিকেটে দেশ থেকে শুধু সাকিবকেই দেখা যায়। সেই তিনিই এবার নেই টি২০ সিরিজে। প্রধান নির্বাচক নান্নু অবশ্য আশায় আছেন, যদি দ্বিতীয় টি২০তে পাওয়া যায় সাকিবকে। নান্নু তাই বলেছেন, ‘শুনেছি এত স্বল্প সময়ে পুনর্বাসন প্রক্রিয়া সে (সাকিব) শেষও করতে পারবে না। অন্তত সাতদিন লাগবে। আশাকরি, টি২০ সিরিজের শেষ ম্যাচটা খেলতে পারবে। যেহেতু সে বাংলাদেশ অধিনায়ক এই ফরমেটে, বাকিটা তার সেরে ওঠার ওপর নির্ভর করছে।’ সঙ্গে যোগ করেন, ‘১৫ তারিখে সাকিব যে খেলতে পারবে না সেটা তো জানতামই। প্রথম টি২০তে তাকে পাচ্ছি না। তবে পরেরটিতে প্ল্যান আছে তাকে নিয়ে।’ কিন্তু সাকিবের কথাতেই স্পষ্ট তিনি টি২০ সিরিজেও খেলতে পারবেন না। টি২০ সিরিজেও তাকে পাচ্ছে না বাংলাদেশ ক্রিকেট দল।
×