ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সংবাদ সম্মেলনে বিজিবি প্রধান

মিয়ানমার যে আচরণ করেছে বিজিবি একটু ধৈর্য হারালে যুদ্ধ বেধে যেত

প্রকাশিত: ০৫:৫৪, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

 মিয়ানমার যে আচরণ করেছে বিজিবি একটু ধৈর্য হারালে যুদ্ধ বেধে যেত

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আবুল হোসেন জানিয়েছেন, সীমানার পাশের দেশ মিয়ানমার যে আচরণ করেছে তাতে বাংলাদেশ বর্ডার গার্ড (বিজিবি) একটু ধৈর্য হারালে যুদ্ধ বেঁধে যেত। তিনি জানান, মিয়ানমার ১৮ বার এপিসি হেলিকপ্টারে সীমান্ত সীমারেখা লঙ্ঘন করেছে। যা অন্যান্য রাষ্ট্র লক্ষ্যও করেছে। আমরা সহনশীলতার পরিচয় দিয়েছি বলেই রোহিঙ্গা ইস্যুতে বাংলাদেশকে কোন ব্লেম দিতে পারেনি মিয়ানমার। রবিবার দুপুরে বিজিবির দফতরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা জানান। বিজিবির মহাপরিচালক আবুল হোসেন জানান, ওই সময়ে আমরা উত্তেজিত হলে বাংলাদেশ আজকে যুদ্ধে থাকত। মিয়ানমারের উদ্দেশ্য ছিল যুদ্ধ বাঁধিয়ে একটি অশান্ত পরিবেশ তৈরি করা। কিন্তু আমরা তা কৌশলে এড়িয়ে গেছি। তিনি জানান, বিভিন্ন সময় মিয়ানমারের উসকানি সত্ত্বেও আমরা সহনশীলতার পরিচয় দিয়েছি। যে কারণে আমরা আমাদের বর্ডার ম্যানেজমেন্ট ঠিক রাখতে পেরেছি। রোহিঙ্গা ইস্যুতে বিজিবি কার্যকরী ভূমিকা রেখেছে। বিজিবি প্রধান জানান, বিজিবির ২২২ বছরের ইতিহাস চড়াই উতরাই পেরিয়ে এগিয়ে চলেছে। ২০০৯ সালের দুর্ভাগ্যজনক ট্র্যাজেডির পর বাহিনী পুনর্গঠন করা হয়েছে। ২০১০ সালে আইন পুনর্গঠন করা হয়েছে। আমাদের পদোন্নতি পলিসিতে অর্ধেকের মতো ব্যক্তির পদোন্নতি হয়েছে। আমরা এখন বাহিনীটি যুগোপযোগী করার কাজ করছি। বিজিবি ডিজি আবুল হেসেন জানান, মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণ করে চলার জন্য যত কিছু প্রয়োজন এর সবই সরকারের কাছ থেকে আমরা পাচ্ছি। বাংলাদেশের চার হাজার ৪২৭ কিলোমিটার বর্ডারে প্রতিবেশী রাষ্ট্র ভারত ও মিয়ানমারের সীমান্ত বাহিনীর সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ করে লাভ নেই। যাকে দূরে রাখতে কিংবা ঠেলে দিতে পারবেন না। তার সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতির বিকল্প নেই। তিনি জানান, সীমান্তে ছিটমহল ও জনসংখ্যাগত কিছু সমস্যা ছিল। এই সরকার ক্ষমতায় আসার পর তা অধিকাংশই সমাধান হয়েছে। শুধু মুহুরির চর নিয়ে একটা ঝামেলা রয়েছে। আমরা সেটাও মিটিয়ে ফেলার চেষ্টা করছি। দেশের সার্বভৌমত্ব বজায় রাখতে গেলে বর্ডার থাকতে হবে। বিজিবির মহাপরিচালক বলেন, বিজিবি হেঁটে বর্ডারে ডিউটি করে। সেখানে কোন রাস্তা নেই। পতাকা উঠালেই গোলাগুলি বন্ধ হয়ে যায়। এভাবেই পর্যায়ক্রমে সমস্যার সমাধান করা হয়েছে। বিজিবির মহাপরিচালক জানান, ইকুইপমেন্টের মাধ্যমেই বর্ডার সমস্যার সমাধান করা যায়। ৫১১ কিলোমিটার পর্যায়ক্রমে আমরা রাডার ক্যামেরার আওতায় নিয়ে আসব। সরকার আমাদের টাকাও দিয়েছে। তখন আমরা সদর দফতরে বসেই সব নিয়ন্ত্রণ করতে পারব। তিনি জানান, সরকার নারী-শিশু পাচার, চোরাচালান বন্ধ করতে দায়িত্ব দিয়েছে, আমরা সেটা সঠিকভাবে পালন করি। তিনি বলেন, আমরা ১০ লাখ রোহিঙ্গাকে সুন্দরভাবেই ম্যানেজ করেছি। সেজন্য আমাদের ফোর্সের মধ্যে কুইক রিয়েকশন ফোর্স চালু করতে চাচ্ছি। বিজিবি মহাপরিচালক জানান, আমাদের পর্যায়ক্রমে ৫৩৯ কিলোমিটার বর্ডার অরক্ষিত ছিল। আরও ২০টি বিওপি করলে পুরো কভার করবে। আমরা ২০৪১ সালে সমৃদ্ধশালী দেশ হবো। সেভাবেই আমরা ১৫ হাজার ফোর্স দিয়ে তিন বছর চলব। পরে আবারও বাড়াব।
×