স্টাফ রিপোর্টার ॥ সাশ্রয়ী যন্ত্রাংশ ব্যবহারে শিল্পকারখানায় ৩৫ শতাংশ বিদ্যুত অপচয় রোধ করা সম্ভব। এখন দেশের শিল্প কারখানায় দৈনিক সাড়ে তিন হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুত ব্যবহার হয়। সাশ্রয়ী উদ্যোগ নিলে অন্তত ১ হাজার ২০০ মেগাওয়াট কম বিদ্যুতে কারখানা চালানো যাবে। রবিবার রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
রবিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে বিদ্যুতের সাশ্রয়ী ব্যবহার সংক্রান্ত দেশব্যাপী প্রচার কার্যক্রমে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ সোলার এন্ড রিনিউঅ্যাবল এনার্জি এ্যাসোসিয়েশন (বিএসআরইএ) এবং ফোরাম ফর এনার্জি রিপোর্টার্স বাংলাদেশ (এফইআরবি) যৌথভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক অধ্যাপক মিজান আর খান। এতে টেকসই ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (স্রেডা) বরাতে জানানো হয়, শিল্পকারখানায় বিদ্যুতের চাহিদা সাড়ে তিন হাজার মেগাওয়াট। প্রযুক্তি ও আচরণগত পরিবর্তনের এই চাহিদার ৩৫ শতাংশ সাশ্রয় সম্ভব। এতে দিনে এক হাজার ২২৫ মেগাওয়াট বিদ্যুত সাশ্রয় হবে। আচরণগত পরিবর্তন বলতে অপ্রয়োজনে বিদ্যুতের ব্যবহারকে বোঝানো হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানিবিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহি চৌধুরী বীরবিক্রম বলেন, বিদ্যুত সাশ্রয়ে সরকারী ও বেসরকারী খাতকে এক সঙ্গে কাজ করতে হবে। উপদেষ্টা বলেন, আমরা পশ্চিমা চিন্তাধারায় জীবনযাপন করতে চাই এটা ঠিক না। সকল জায়গায় আমাদের সাশ্রয়ী হতে হবে। বাংলাদেশকে নিজেদের মডেল তৈরি করতে হবে। তিনি বলেন, দীর্ঘদিন ধরে সরকার বিদ্যুতের সরবরাহ দিকটি নিয়ে কাজ করছে। বিদ্যুতের সাশ্রয়ী ব্যবহার নিয়ে কাজ কম হয়েছে। এখন সময় হয়েছে এ নিয়ে কাজ করতে হবে।
বিদ্যুত প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, অনেক উন্নত দেশই এখন বিদ্যুত সাশ্রয় করছে। কিন্তু নিম্ন আয়ের দেশগুলো বিদ্যুত সাশ্রয় না করে অপচয় করছে। এসময় তিনি সুইডেনের উদাহরণ টেনে বলেন, সুইডেনে সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের বিদ্যুত বিক্রি করতে পারছে না। কারণ সেখানকার ব্যবহারকারীরা বিদ্যুত সাশ্রয় করায় তাদের বিদ্যুত কম লাগছে। বিদ্যুত সাশ্রয়ী বিল্ডিং কোড সংশোধন এবং এর বাস্তবায়নের ওপর জোর দেন প্রতিমন্ত্রী। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিদ্যুত সচিব ড. আহমদ কায়কাউস, স্রেডা চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিন, বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ড-পিডিবির চেয়ারম্যান প্রকৌশলী খালেদ মাহমুদ, পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড-আরইবি চেয়ারম্যান মঈন উদ্দিন, পাওয়ার সেলে মহাপরিচালক মোহাম্মদ হোসাইন, এফইআরবি চেয়ারম্যান অরুণ কর্মকার, বিএসআরইএ সভাপতি দীপাল সি. বড়ুয়া প্রমুখ। অনুষ্ঠান শেষে বিদ্যুত সাশ্রয়ের বিভিন্ন স্লোগান সম্পর্কিত পোস্টারের মোড়ক উন্মোচন করা হয়।