ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

প্রশিক্ষণ কর্মসূচী বাস্তবায়ন করা হচ্ছে

রেমিটেন্স বাড়াতে বিদেশে দক্ষ জনশক্তি পাঠানোর উদ্যোগ

প্রকাশিত: ০৫:৩৭, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

রেমিটেন্স বাড়াতে বিদেশে দক্ষ জনশক্তি পাঠানোর উদ্যোগ

ফিরোজ মান্না ॥ দক্ষ প্রশিক্ষিত কর্মী নিয়োগে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় প্রশিক্ষণের ওপর গুরুত্ব দিয়েছে। এ জন্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) ও আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থা (আইওএম) যৌথভাবে ‘এক্টিভিটি প্লান ফর স্কিলস ডেভেলপমেন্ট এ্যান্ড মাইগ্রেশন ম্যানেজমেন্ট’ নামে একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে। কর্মীদের দক্ষতা উন্নয়নে প্রতিষ্ঠান দুটি ২০২১ সাল পর্যন্ত এক সঙ্গে কাজ করবে। দক্ষ জনশক্তি রফতানি হলে প্রবাসী আয় অনেক বাড়বে বলে মনে করা হচ্ছে। দেশের প্রায় এক কোটি মানুষ বিদেশে চাকরি করে যে পরিমাণ রেমিটেন্স দেশে পাঠাচ্ছেন তার প্রায় সম পরিমাণ অর্থ বিদেশী দক্ষকর্মীরা বাংলাদেশ থেকে নিয়ে যাচ্ছে। মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, প্রতি বছর দেশ থেকে ৮ থেকে ৯ লাখ কর্মী বিভিন্ন দেশে চাকরি নিয়ে যাচ্ছে। দক্ষতার অভাবে তারা অনেক কম বেতনে চাকরি করছেন। অথচ অন্যদেশের কর্মীরা দক্ষতার কারণে বেশি বেতন পাচ্ছেন। দেশের প্রায় এক কোটি কর্মী বিদেশে চাকরি করলেও রেমিটেন্সের পরিমাণ বাড়ছে না। সর্বশেষ ২০১৬-১৭ অর্থবছরে রেমিটেন্স এসেছে সাড়ে ১৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। তার আগের অর্থবছরে রেমিটেন্স প্রবাহ ছিল প্রায় ১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। অদক্ষ জনশক্তি রফতানির কারণে রেমিটেন্স প্রবাহ দিন দিন কমে যাচ্ছে। অথচ বাংলাদেশে বিদেশী ৫ থেকে ৬ লাখ দক্ষ জনশক্তি কাজ করছেন। তারা প্রায় সম পরিমাণ অর্থ দেশ থেকে নিয়ে যাচ্ছেন। এ কারণে মন্ত্রণালয় দক্ষতা বাড়ানোর জন্য আইওএমর সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করে যাচ্ছে। জানা গেছে, দালাল চক্রের মাধ্যমে বিদেশে বিপুলসংখ্যক অদক্ষ কর্মী যাওয়ার ফলে শুধু প্রবাসীর সংখ্যা বাড়ছে। কিন্তু রেমিটেন্স বাড়ছে না। এই অদক্ষ কর্মীরা বেশিরভাগই গ্রামের দরিদ্র জনগোষ্ঠী থেকে আসা। তাদের নানাভাবে প্রলোভনে ফেলে মধ্যস্বত্বভোগীরা হাতিয়ে নিচ্ছে বড় অংকের টাকা। তারা বিদেশে হাড় ভাঙ্গা খাটুনি খেটেও যে টাকায় বিদেশ গেছেন সেই টাকাই তুলতে পারেন না। এর মধ্যে ওই কর্মীর কাজ করার সময়সীমা শেষ হয়ে গেছে। পরে বাড়তি কিছু টাকা আয়ের আশায় তারা অবৈধ হয়ে লুকিয়ে কাজ করে। পুলিশী ভয় সারাক্ষণ মাথায় নিয়ে তাদের কাজ করতে হয়। কেউ আবার পুলিশের হাতে আটক হয়ে বছরের পর বছর জেলখানায় মানবেতর জীবন যাপন করছেন। দালালদের লোভনীয় প্রস্তাবে অনেক বাংলাদেশী কোন ধরনের কাজ ছাড়াই এভাবে বিদেশ গিয়ে বিপদে পড়ছেন। আন্তর্জাতিক মানদন্ডে বাংলাদেশের কর্মীদের মান অনেক নিচে। এ অবস্থার পরিবর্তন ঘটাতে না পারলে লাখ লাখ কর্মী বিদেশ গেলেও রেমিটেন্স প্রবাহ বাড়বে না। গুণগতমান ঠিক করতে না পারলে দেশের শ্রমবাজারগুলো হারাতে হতে পারে।
×