ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

জেলখানা আরাম আয়েশের জায়গা নয় ॥ কাদের

প্রকাশিত: ০৫:৩৪, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

জেলখানা আরাম আয়েশের  জায়গা নয় ॥ কাদের

বিশেষ প্রতিনিধি ॥ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়াকে কোন ধরনের অসম্মান বা অমর্যাদা করা হচ্ছে না। সাবেক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি সব সুযোগ-সুবিধা পাবেন। তবে জেলখানা আরাম আয়েশের জায়গা না, জেল তো জেলই। কিন্তু জেল কোড অনুযায়ী সব সুযোগ সুবিধাই তিনি পাচ্ছেন। রবিবার সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, জেলকোডে গৃহপরিচারিকা অথবা ব্যক্তিগত সহকারী রাখার কোনও বিধান নেই। ওয়ান-ইলেভেনের পর দুই নেত্রীকে (শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়া) যখন মাইনাস করার পরিকল্পনা ছিল, তখনও কাউকে পরিচারিকা এ্যালাউ করা হয়নি। সেটাও তো জেল, সাব-জেল জেল একই তো। এটা জেল কোডের নিয়ম। ওবায়দুল কাদের বলেন, এ পর্যন্ত ইতিহাসে বঙ্গবন্ধু, মওলানা ভাসানী সবাই তো জেলে ছিলেন। কখনও ব্যক্তিগত কোন সাহায্যকারী, আমি কাজের ছেলে কাজের মেয়ে বলব না, ব্যক্তিগত কোন সাহায্যকারীর ভেতরে যাওয়ার কোন সুযোগ নেই। কারাগারে শীতাতপ নিয়ন্ত্রক যন্ত্র দেয়ার কোন নিয়ম নেই জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমরা ডিভিশনে ছিলাম। এসি দেয়ার কোন সুযোগ নেই। এর আগেও উনি জেলে ছিলেন, আমাদের নেত্রীও ছিলেন। তখন কিন্তু এসি দেয়া হয়নি। এটা কেন যে দাবি করছেন, ঠিক জানি না। ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘উনি কয়েকবারের প্রধানমন্ত্রী, একটা বড় দলের চেয়ারপার্সন। কাজেই তার কোন প্রকার অসম্মান, অমর্যাদা বা তার সুযোগ-সুবিধা থেকে তাকে বঞ্চিত করা- সেটা এখন পর্যন্ত হয়নি। আমি যতদূর জানি, বেগম জিয়াকে এখন একটা রুম মেরামত করে (দেয়া হয়েছে), আগের জেল সুপারের রুম ছিল (ওটা)। ওই রুমটা আমরা দেখেছি। ওই রুমটা বসার, জেল থেকে কোর্টে যাওয়ার সময়। তারেক রহমান, আমি (ওবায়দুল কাদের) ওই রুমটাতে বসেছি। এখন সেই রুমটাকে রিনোভেট করে বেগম জিয়াকে রাখা হয়েছে। খালেদা জিয়াকে ডিভিশন দেয়া হচ্ছে না মর্মে বিএনপি নেতাদের এমন অভিযোগের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, আক্ষরিক অর্থে যেটা ডিভিশন বলে, ডিভিশন দেয়ার যে বিষয়, সে বিষয়টা এখনও অনুপস্থিত আছে। হয়ত হয়েও যাবে। তবে তাকে কোন অমর্যাদা করা হচ্ছে না; তিনি যা চাচ্ছেন, তাকে দেয়া হচ্ছে। যেখানে তাকে রাখা হয়েছে সেটি তার থাকার উপযোগী করেই তৈরি করা হয়েছে। তিনি বলেন, ভবনটি পরিত্যক্ত হলেও একজন ভিআইপি আসামিকে রাখার মতো করেই ডেকোরেশন করা হয়েছে। তাছাড়া ভবনটি খুব বেশি দিনের পরিত্যক্ত নয়। জরুরী সেবার গাড়ির লেনের পক্ষে কাদের ॥ সড়কে ভিআইপিদের গাড়ির চলাচলের জন্য নয়, জরুরী সেবা দেয়া সংস্থার গাড়ির জন্য আলাদা লেন করা যেতে পারে বলে মনে করেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। ঢাকায় ভিআইপিদের জন্য আলাদা লেনের বিষয়ে জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে আমার কাছে প্রস্তাব এসেছে। তবে ডিটিসিএ (ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ) বিষয়টা খতিয়ে দেখছে। এটা শুধু ভিআইপিদের জন্য আলাদা লেন নয়, এখানে রোগীদের জন্য এ্যাম্বুলেন্স, জরুরী সেবার বিষয়টা আছে। এগুলো বিশেষভাবে করলে অসুবিধা কি?’ তিনি বলেন, ‘পারসোনালি আমি মনে করি, ওটা ঠিক আছে- এ্যাম্বুলেন্স, জরুরী সেবা, এসব ব্যাপারে এ ধরনের লেন। যদিও আমাদের স্পেস খুব কম, কতটা সম্ভব হবে আমি জানি না। আপাতত ডিটিসিএ এমন কোন ব্যবস্থা করতে পারবে, এই মুহূর্তে সেটা ভাবার কোন কারণ নেই।’ ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘আমি মনে করি, আমাদের ধীরে ধীরে দৃঢ়তার সঙ্গে ভিআইপি সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসা উচিত। এদেশের মানুষ, জনগণের কথা আগে আমাদের ভাবতে হবে। আমরা আলাদা সুযোগ-সুবিধা ভোগ করব, সাধারণ মানুষ সেটা থেকে বঞ্চিত থাকবে। আমরা যেহেতু পলিটিক্যাল গবর্নমেন্ট, আমরা এসব বিষয়ে চিন্তা করব কিনা, গভীরভাবে ভাবতে হবে। আমি মনে করি ভিআইপি কালচার থেকে বেরিয়ে আসলে অনেক সমস্যার সমাধান হবে।’ সেতু ভবনে সাংবাদিক নিষিদ্ধ নয় ॥ সম্প্রতি সড়ক ভবনে ঢুকতে গিয়ে একজন সাংবাদিক হেনস্থার মুখে পড়েছিলেন। এরপর বেশকিছু গণমাধ্যমে ‘সেতু ভবনে সাংবাদিক নিষিদ্ধ’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। এ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, সাংবাদিক নিষিদ্ধ করার কোন কারণ নেই। সাংবাদিককে হয়রানির বিষয়টি নিয়ে সেতু সচিবের সঙ্গে কথা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘সচিবকে বলে দিয়েছি, সাংবাদিকদের সঙ্গে যেন যথাযথ আচরণ করা হয়। তিনি আরও বলেন, ‘আমি সব জানি, আমি অলরেডি নির্দেশ দিয়েছি তারা পরবর্তী সময়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।’
×