ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

বজ্র আঁটুনি ফসকা গেরো

প্রশ্নফাঁসের কূলকিনারা হয় না যে কারণে-

প্রকাশিত: ০৫:০৭, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

প্রশ্নফাঁসের কূলকিনারা হয় না যে কারণে-

বিভাষ বাড়ৈ ॥ একের পর এক প্রশ্ন নির্বিঘ্ন ফাঁস করে যাচ্ছে অপরাধীরা। অথচ মন্ত্রণালয়, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, শিক্ষা বোর্ড এমনকি বিটিআরসি কেউই কূলকিনারা পাচ্ছে না। প্রশ্ন ফাঁসে জড়িত অপরাধীরা গ্রেফতারও হচ্ছে প্রতিদিন। গত ছয় মাসে গ্রেফতার হয়েছে শতাধিক। তবু প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগমুক্ত করা যাচ্ছে না পরীক্ষাকে। চলমান এসএসসি পরীক্ষায় সঙ্কট কাটাতে অর্ধশত আটক ও পরীক্ষার আগে রবিবার পৌনে এক ঘণ্টা মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ করেও শেষ রক্ষা হয়নি। এদিকে আটকের পর প্রশ্ন ফাঁসের অভিনব সব কৌশল নিয়ে অপরাধীদের দেয়া তথ্যে রীতিমতো চোখ কপালে ওঠার দশা। পরীক্ষা শুরুর ৩০ থেকে ৪০ মিনিট আগে প্রশ্নপত্র ফাঁস হয় বলে জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। বেড়িয়ে এসেছে প্রশ্ন ফাঁসে অপরাধীদের বিশেষ বাহিনী। যার নাম ‘উল্লাহ বাহিনী’। প্রশ্ন উঠেছে, দিনের পর দিন প্রশ্ন ফাঁস কি হতেই থাকবে, নাকি বন্ধ হবে প্রশ্ন ফাঁস ? প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্কট কাটাতে বিভিন্ন পরামর্শ দিচ্ছেন শিক্ষাবিদসহ সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, প্রশ্ন ফাঁসে সরকারী বেসরকারী কর্মকর্তা-শিক্ষক ছাড়াও জড়িয়ে পড়েছেন অভিভাবকরাও। এটি এখন একটি সামাজিক ব্যধিতে রুপ নিয়েছে। তাই এই সঙ্কট কাটাতে কেবল সরকারের পদক্ষেপ যথেষ্ট নয়। একই সঙ্গে সচেতন হতে হবে অভিভাবকদেরও। ভাল কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে ভর্তিও ক্ষেত্রে ন্যূনতম যোগ্যতার স্কোর জিপিএ-৫ থেকে কমিয়ে আনাসহ শিক্ষা ও পরীক্ষা পদ্ধতির পরিবর্তনের পরামর্শও দিয়েছেন অনেকে। এর ফলে সর্বোচ্চ ভাল ফলের আশায় শিক্ষার্থী ও প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অসুস্থ প্রতিযোগিতা কমবে বলে আশা করছেন শিক্ষাবিদরা। তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বদৌলতে সৃষ্ট এবারের সঙ্কট কাটাতে পরামর্শ দিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রথমেই মনে রাখতে হবে অন্য যে কোনভাবে প্রশ্নফাঁস আর ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশ্ন ফাঁসের প্রক্রিয়া, ধরন সব আলাদা। সামাজিক মাধ্যমে অপকর্ম বন্ধ করতেও তাই চিন্তা হতে হবে আলাদা। এখানে প্রশ্ন সরবরাহকারী বিজ্ঞাপনদাতাদের ফেসবুক এ্যাকাউন্ট রিপোর্ট করে বন্ধ করানো হলেও, তা কোনও স্থায়ী সমাধান নয়। অপরাধ বন্ধে চেষ্টা, ইন্টারনেট বন্ধ তবু প্রশ্ন ফাঁস! ॥ রবিবার আইসিটি বিষয়ের পরীক্ষা শুরুর সময় প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে বিটিআরসির নির্দেশনায় আধা ঘণ্টারও বেশি সময় বন্ধ ছিল মোবাইল ইন্টারনেট। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এই নির্দেশনা কেবল মোবাইল অপারেটরগুলোকেই দেয়া হয়েছিল। আজ পরীক্ষা শুরুর আগে সকাল ৯টা থেকে ১০টা পর্যন্ত ইন্টারনেট বন্ধ রাখতে বলা হয়েছিল। তবে এসএসসির বাকি পরীক্ষাগুলোর সকালেও মোবাইল ইন্টারনেট বন্ধ থাকবে কি না, সে বিষয়ে এখনও কিছু যানানো হয়নি। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিটিআরসির ইঞ্জিনিয়ারিং এ্যান্ড অপারেটরস বিভাগ থেকে চিঠি দিয়ে মোবাইল অপারেরটরদেরও সকাল ৯টায় ইন্টারনেট বন্ধ করতে বলা হয়েছিল। কিন্তু প্রযুক্তিগত কারণে বন্ধ করতে সাড়ে ৯টা বেজে যায়। তবে ওই সময় আইএসপিগুলোর ইন্টারনেট সেবায় কোন বিঘ্ন ঘটেনি। বিটিআরসির হিসাবে ডিসেম্বর পর্যন্ত দেশে ইন্টারনেট গ্রাহক আট কোটির বেশি। এর মধ্যে সাড়ে ৭ কোটি গ্রাহকই মোবাইল ইন্টারনেট ব্যবহার করেন। তবে ইন্টারনেট নিয়ে নতুন এ পদক্ষেপেও ফল মেলেনি। রবিবার আইসিটি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত অনুষ্ঠিত ৭টি বিষয়ের প্রশ্নই পরীক্ষা শুরুর ঠিক আগ মুহূর্তে ফাঁসের ঘটনা ঘটেছে। রবিবার সকাল ৮টা ৫১ মিনিটে হোয়াটসএ্যাপের একটি গ্রুপে আইসিটির ‘ক সেট’ প্রশ্ন পাওয়া যায়। সকাল ৯টা ৩ মিনিটে ‘গ সেট’ প্রশ্নও ফাঁস হয়। এরপর তা অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। পরীক্ষা শেষে এই দুই সেট প্রশ্নের সঙ্গে মিলিয়ে ফাঁস হওয়া সেটের হুবহু মিল পাওয়া যায়। ৩০ থেকে ৪০ মিনিট আগে ফাঁস, সক্রিয় ‘উল্লাহ বাহিনী’! ॥ পরীক্ষা শুরু হওয়ার সর্বোচ্চ ৩০ থেকে ৪০ মিনিট আগেই আসল প্রশ্নপত্র ফাঁস হয় বলে জানিয়েছে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। তবে তার আগে অনলাইনে যেসব প্রশ্নপত্র পাওয়া যায় এগুলো সাধারণত ভুয়া। রবিবার দুপুরে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে ডিবির যুগ্ম-কমিশনার আব্দুল বাতেন এসব তথ্য জানান। শনিবার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগে আটক ১৪ জনের বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়েছিল। আটকরা হলেন- রাহাত ইসলাম, সালাহউদ্দিন, সুজন, জাহিদ হোসেন, সুফল রায়, আলামিন, সাইদুল ইসলাম, আবির ইসলাম নোমান, আমান উল্লাহ, বরকত উল্লাহ, আহসান উল্লাহ, শাহাদাত হোসেন, ফাহিম ইসলাম ও তাহসিব রহমান। এ সময় তাদের কাছ থেকে একটি ল্যাপটপ, ২৩টি মোবাইল ও ২ লাখ ২৪শ’ টাকা উদ্ধার করা হয়। আব্দুল বাতেন বলেন, প্রশ্নপত্র সিলগালা থেকে শুরু করে কেন্দ্র পর্যন্ত সাধারণত ফাঁসের কোন সুযোগ নেই। কেন্দ্রে যাওয়ার পর পরীক্ষা শুরু হওয়ার ৩০-৪০ মিনিট আগে কেন্দ্র সংশ্লিষ্টদের সহায়তায় প্রশ্নফাঁস হয়। তারা মোবাইলে ছবি তুলে বাইরে পাঠান। আমি শিওর, এই প্রশ্ন ফাঁসের পর যদি কেউ কেন্দ্র থেকে শিক্ষার্থীকে সহায়তা না করে তাহলে ওই শিক্ষার্থীর বেনিফিট পাওয়ার সম্ভাবনা নেই। কারণ তখন শিক্ষার্থীরা পরীক্ষার হলেই থাকে। যেভাবে প্রচার হয় এবং রিউমার ছড়ানো হয় সে তুলনায় প্রশ্নফাঁসের ব্যাপকতাও অনেক কম। আসলে কার মাধ্যমে প্রশ্নফাঁস হচ্ছে? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কেন্দ্রের শিক্ষক থেকে ক্লার্ক পর্যন্ত যে কারও মাধ্যমে এটা হতে পারে। এ বিষয়ে আমরা এখনও নিশ্চিত নই। আটকদের বিষয়ে তিনি বলেন, এরা সাধারণত ‘প্রশ্নফাঁস করবোই’ এমন ঘোষণা দিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন গ্রুপ চালু করে। এমনকি বিভিন্ন সাবজেক্টভিত্তিক গ্রুপ চালু রয়েছে। তারপর প্রতি গ্রুপে হাজার হাজার পরীক্ষার্থীকে যুক্ত করা হয়। হাজার হাজার কেন্দ্র রয়েছে। এর মধ্যে কোন কেন্দ্র থেকে এ ঘটনা ঘটে তা শনাক্ত করা কঠিন। একেক সময় একেক জায়গা থেকে ফাঁসের ঘটনা ঘটে। তাই মূল হোতাদের গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। তবে তাদের খুঁজে পেতে চেষ্টা চলছে। বেরিয়ে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য ॥ গত কয়েক মাসে পাবলিক পরীক্ষা, নিয়োগ ও বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় আটক করা হয়েছে শতাধিক অপরাধীকে। আটকের পর প্রশ্ন ফাঁসের অভিনব সব কৌশল নিয়ে অপরাধীদের দেয়া তথ্য রীতিমতো চোঁখ কপালে ওঠার দশা। অপরাধীরাই বলছেন, ফেসবুক, হোয়াটসএ্যাপে পাঠিয়ে দেয়া হতো প্রশ্নপত্রের লিংক। ‘এমএলএম পদ্ধতিতে চলানো হচ্ছে প্রতারণা। এটিএম কার্ড ও ক্রেডিট কার্ডকে বানানো হয়েছে প্রশ্ন ফাঁসের অস্ত্র! অনেকে ক্ষেত্রে প্রশ্নফাঁস না হলেও ভুয়া প্রশ্নের বিনিময়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন প্রতারকরা। পঞ্চম শ্রেণীর সমাপনী পরীক্ষা থেকে শুরু করে, সকল নিয়োগ পরীক্ষা, বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষা কোনটিই এখন সঙ্কটমুক্ত নয়। অন্যদের তুলনায় ভাল ফল দেখাতে স্কুল, কলেজ থেকেই প্রশ্নফাঁস! ॥ স্ব স্ব শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের রেজাল্ট ভাল করানোর জন্য স্কুল ও কলেজ শিক্ষকরাই প্রশ্নপ্রত্র ফাঁস করে তাদের হাতে তুলে দিচ্ছেন। রেজাল্ট নিয়ে তীব্র প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে ও সুনাম অর্জন করতে এই অবৈধপথ বেছে নিচ্ছেন কিছু শিক্ষক ও গবর্নিং বডির চেয়ারম্যান ও সদস্যরা। প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত একটি চক্রকে গ্রেফতারের পর তদন্ত করে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিবি) কর্মকর্তারা এসব তথ্য জানিয়েছেন। বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করে ইতোমধ্যেই আদালতে জবানবন্দী দিয়েছেন কমলাপুর শের-ই-বাংলা রেলওয়ে উচ্চ বিদ্যালয়ের ইংরেজীর শিক্ষক রফিকুল ইসলাম। স্বীকারোক্তিতে তিনি জানিয়েছেন, স্কুলে প্রশ্ন পৌঁছে যাওয়ার পর ওই স্কুলের অধ্যক্ষ আব্দুল আলিমের নির্দেশে তিনি সেগুলোর ছবি মোবাইল ফোনে তুলতেন, তারপর উত্তরসহ শিক্ষার্থীদের দিতেন। শিক্ষার্থীরা যেন ভাল রেজাল্ট করে এবং স্কুলের সুনামও বৃদ্ধি পায় সেজন্য এই পন্থা বেছে নেন বলেও স্বীকারোক্তিতে জানান তিনি। শাস্তিহীনতাই প্রশ্ন ফাঁসের বড় কারণ ॥ ‘প্রশ্নপত্র ফাঁস, প্রকাশ বা বিতরণের সঙ্গে জড়িত থাকলে শাস্তি নুন্যতম তিন বছর থেকে সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদ-সহ অর্থদ-।’ পাবলিক পরীক্ষাসমূহ (অপরাধ) আইন ১৯৮০ এবং সংশোধনী ১৯৯২-এর চার নম্বর ধারায় স্পষ্ট করে এই শাস্তির বিধান রাখা হয়েছে। কিন্তু বাস্তবতা হলো আইন প্রণয়নের পর পাবলিক, মেডিক্যাল, বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি, বিসিএসসহ বিভিন্ন পরীক্ষায় শতাধিকবার প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা ঘটলেও এক মাস শাস্তিরও নজির নেই কোন অপরাধীর। কেলেঙ্কারির পর পরীক্ষা স্থগিত করে অন্তত ৪০ বার তদন্ত কমিটি গঠন করে সঙ্কট সমাধানের সুপারিশ করা হলেও আজ পর্যন্ত কার্যকর হয়নি একটি সুপারিশও। শিক্ষাবিদদের পরামর্শ ॥ সরকারের সাফল্যকে অনেকটাই প্রশ্নবিদ্ধ করেছে ‘প্রশ্নফাঁস’। শিক্ষাবিদরা বলছেন, এই অবস্থা অব্যাহত থাকলে ভবিষ্যত অন্ধকার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ছিদ্দিকুর রহমান বলেন, যে কোন পরীক্ষাতেই প্রশ্নফাঁস কোনভাবেই মেনে নেয়া যায় না। আজ যেসব শিক্ষার্থী ভাল রেজাল্ট করল তাদেরও মন ভার কেন? কারণ অনেকেই তাদের টিপ্পনি কেটে বলবে, তোমরা ফাঁস হওয়া প্রশ্নে পরীক্ষা দিয়ে ভাল ফল করেছ! কিন্তু আসলে সব শিক্ষার্থী তো ফাঁস হওয়া প্রশ্নে পরীক্ষা দেয়নি। তাহলে তাদের কেন এমন কথা শুনতে হবে ?’ তিনি বলেন, প্রশ্ন ফাঁসের ফলে শিক্ষার্থীরা লেখাপড়ার প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলবে, যা একটা জাতিকে মেরুদ-হীন করে দেবে। কী বলছেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ॥ গোয়েন্দা পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) শেখ নাজমুল আলম বলছিলেন, এবারের মেডিক্যালের প্রশ্ন কিনতে আসা কয়েকজন পরীক্ষার্থী ও তাদের বাবা-মাকে গ্রেফতার করা হয়। পরে পরীক্ষার্থী ও তাদের মায়েদের ছেড়ে দিলেও বাবাদের নামে মামলা করা হয়। মায়েরা বাচ্চাদের নিয়ে রাতে প্রশ্ন নিতে না গেলে রক্ষা পেতে পারতেন বলেই ইঙ্গিত দিলেন এ কর্মকর্তা। সিআইডির অতিরিক্ত ডিআইজি মোখলেছুর রহমান বলেন, পরীক্ষার দিন সকালে কেন্দ্র সচিব ছাড়া কারও কাছেই মোবাইল থাকবে না- এটা নিশ্চিত করতে পারলেই প্রশ্নফাঁস হবে না। কারণ ফোনে ছবি তুলে তারা বাইরে প্রশ্ন পাঠিয়ে দেন। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশ্নফাঁস সামলাতে পরামর্শ ॥ এটা এখন পরিষ্কার যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশ্নপত্র ফাঁস কোনভাবে রোধ করতে পারছে না শিক্ষা মন্ত্রণালয়, বিটিআরসি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। অপরাধীদের নাগাল না পাওয়ায় এখনও প্রশ্ন সরবরাহের বিজ্ঞাপনে সয়লাব ভার্চুয়াল জগত। প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা থেকে শুরু করে জেএসসি, এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষাসহ চাকরির নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নপত্র বিজ্ঞাপন আকারে প্রচার করা হলেও অপরাধীদের চিহ্নিত করার মাত্রা নগন্য। মাঝে মাঝে কয়েকজনের আটকের খবর আসলেও তৎপর আরও অসংখ্য অপরাধী। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ধারণা, সরকারকে বিপাকে ফেলতে বারবার চক্রটি প্রশ্নপত্র ফাঁস করছে। প্রশ্নপত্র ফাঁসের সঙ্গে কোচিং সেন্টারের শিক্ষক, রাজনৈতিক নেতা ও পরীক্ষা কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষকরা জড়িত। প্রশ্ন ফাঁসের স্থল হতে পাতে জেলা প্রশাসনের ট্রেজারি কিংবা সরকারের অন্যান্য ট্রেজারি। হতে পারে পরীক্ষা কেন্দ্র। বিভিন্ন জেলায় আটক, অভিযান ॥ ময়মনসিংহ থেকে আমাদের স্টাফ রিপোর্টার জানিয়েছেন, প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে তিন শিক্ষার্থীসহ আটজনকে গ্রেফতার করেছে ময়মনসিংহ গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এদের মধ্যে তিনজন এসএসসি পরীক্ষার্থী ও মহিলাসহ পাঁচজন অভিভাবক রয়েছেন। গ্রেফতার হওয়া আটজন হচ্ছে মোঃ ইসরাত জাহান (২৫), আরিফুল ইসলাম (১৮), রাকিব মিয়া (১৮), রফিকুল ইসলাম (২০), খায়রুল ইসলাম (১৬), জাকারিয়া (১৬), ফজলে রাব্বি রুমি (১৬) ও সৌরভ বর্মন (১৬)। রবিবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ এই তথ্য জানায়।
×