ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১

এলএনজি দিয়ে বিদ্যুত

প্রতি ইউনিটের উৎপাদন খরচ হবে প্রায় ৩০ টাকা

প্রকাশিত: ০৪:৪৭, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

প্রতি ইউনিটের উৎপাদন খরচ হবে প্রায় ৩০ টাকা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ এলএনজি দিয়ে সরাসরি বিদ্যুত তৈরি করা হলে প্রতি ইউনিটের খরচ দাঁড়াবে প্রায় ত্রিশ টাকা। যা ডিজেলের চেয়েও বেশি। অথচ, আমদানি করা এই জ্বালানির ওপর ভর করেই সরকার নিচ্ছে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা। যা ভয়াবহ বিপদে ফেলবে এই খাতকে- এমন মত বিশ্লেষকদের। এ রকম ছোট ছোট সেলাইয়ে গেল দেড় দশক ধরে রবিউজ্জামান গেথেছেন সাফল্যের গল্প। সৌখিন চামড়াজাত পণ্য তৈরি করে, বিক্রি করছেন বিদেশে। একই সঙ্গে, দেশের বাজারেও। কিন্তু, এই সময়ে বড় বাধা হিসেবে তার সামনে এসেছে বিদ্যুতের দাম। যা গেল আট বছরে ভোক্তা পর্যায়ে বেড়েছে অন্তত সাতবার। আর এটি, সমন্বয় করতে গিয়ে ছোট হয়েছে লাভের অঙ্ক। এমন অবস্থায়, ভবিষ্যতে এলএনজি কিংবা কয়লার তৈরি বিদ্যুত কয়েকগুণ বেশি দামে কিনতে হলে প্রতিযোগিতায় টিকে থাকা নিয়েই তার যত দুশ্চিন্তা। ব্যবসায়ীদের এই দুশ্চিন্তা আরও বড় হওয়ার শঙ্কা রয়েছে সামনের দিনগুলোতেও। কেননা, বিদ্যুত উৎপাদনের যেসব প্রকল্প নেয়া হয়েছে, তাতে কম দামে পাওয়ার সম্ভাবনা নেই একেবারেই। এলএনজির কথায় আসা যাক। আন্তর্জাতিক বাজার থেকে প্রতি হাজার ঘনফুট ১০ ডলার করে কিনে তার সঙ্গে আনুষঙ্গিক খরচ যোগ করলে মোট দাম পড়বে প্রায় ১৩ ডলার করে। যা জ্বালানি হিসেবে ব্যবহার করলে দেশী গ্যাসের চেয়ে খরচ বাড়বে অন্তত ১২ গুণ। ফলে, বর্তমানে গ্যাসভিত্তিক কেন্দ্র থেকে প্রতি ইউনিট বিদ্যুত আড়াই টাকায় মিললেও, ২০২১ সাল নাগাদ দাঁড়াবে প্রায় ত্রিশ টাকায়। যা বর্তমানে ডিজেল পুড়িয়ে পাওয়া বিদ্যুতের চেয়েও বেশি। সঙ্কট এখানেই শেষ নয়। পরিকল্পনা ঠিকমতো কাজ না করায়, ২০৩০ পর্যন্ত নয় হাজার মেগাওয়াট উৎপাদনের লক্ষ্য ধরা হয়েছে কেবল এলএনজি থেকেই। যার মধ্যে ২০২২ সালে উৎপাদনে আসার শর্তে পায়রায় তিন হাজার ৬শ’ মেগাওয়াটের জন্য প্রাথমিক চুক্তিও সেরে ফেলেছে সরকার। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে, প্রতি এক হাজার মেগাওয়াটের জন্য ১৫ কোটি ঘনফুট হারে গ্যাসের হিসাব ধরলে সেগুলো চালাতে দৈনিক লাগবে অন্তত ১৩৫ কোটি ঘনফুট। এই সময়ের মধ্যে যার আমদানি করাও প্রায় অসম্ভব। তার ওপর দুশ্চিন্তা রয়েছে প্রাথমিক বিনিয়োগ নিয়েও। এমন অবস্থায়, দীর্ঘমেয়াদে এই জ্বালানির ভবিষ্যত নিয়েও শঙ্কা বাড়ছে নানা মহলে।
×