ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে নির্যাতন ॥ ঘরে উঠতে দিচ্ছে না

প্রকাশিত: ০৪:১১, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

যৌতুকের জন্য স্ত্রীকে নির্যাতন ॥ ঘরে উঠতে দিচ্ছে না

নিজস্ব সংবাদদাতা, বাউফল, ১১ ফেব্রুয়ারি ॥ বাউফলের সূর্যমনি ইউনিয়নের নুরাইনপুর গ্রামে যৌতুকের জন্য মনি আক্তার নামের এক প্রবাসী গৃহবধূকে নির্যাতন করা হয়েছে। তিন দিন ধরে তাকে ঘরে উঠতে দেয়া হচ্ছে না। ওই গৃহবধূ বর্তমানে ঘরের বাইরে মানবেতর দিন কাটাচ্ছেন। রবিবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ওই গৃহবধূ তালাবদ্ধ ঘরের দরজার সামনে বসে আছেন। সঙ্গে মালামাল বোঝাই কয়েকটি লাগেজ রয়েছে। গৃহবধূ মনি আক্তার অভিযোগ করেন, তাঁর বাড়ি মাগুরা জেলা সদরের রামচন্দ্রপুর গ্রামে। বাবার নাম আমজেদ আলী মোল্লা। তিনি দীর্ঘদিন ধরে মরিশাস থাকতেন। সেখানে একটি বহুজাতিক কোম্পানিতে চাকরিকালীন বাংলাদেশী যুবক সাইফুল খানের সাথে ২০১৩ সালের ৫ নবেম্বর তার বিয়ে হয়। সাইফুলের বাড়ি পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার সূর্যমনি ইউনিয়নের নুরাইনপুর গ্রামে। তাঁর বাবার নাম শাহজাহান খান। মরিশাসে সাইফুল একটি ডেকোরেটরের দোকানে চাকরি করতেন। বিয়ের কিছুদিন পর সাইফুলের চাকরি চলে যায়। তার টাকায় সংসার চলতো। এ ছাড়া তিনি সাইফুলের বিধবা মা শাহনাজ বেগম ও ছোট দুই ভাই মাসুম ও রাকিবের জন্যও গ্রামের বাড়িতে সংসার খরচের টাকা পাঠাতেন। একপর্যায়ে সাইফুল গ্রামের বাড়িতে ঘর উঠানোর কথা বলে তার কাছ থেকে তিন লাখ টাকা নিয়ে দেশে চলে আসে। এরপর থেকে সাইফুল তার সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। নিরুপায় হয়ে তিনি ২০১৭ সালের ৭ মার্চ বাংলাদেশে চলে আসেন এবং স্বামীর বাড়িতে গিয়ে ওঠেন। আসার সময় তিনি ৭০ হাজার টাকা ও ১৬ ভরি স্বর্নালংকার নিয়ে আসেন। প্রায় পাঁচ মাস ওই বাড়িইে থাকেন। একপর্যায়ে সাইফুল তার কাছে দুই লাখ টাকা দাবি করেন। এতে তিনি রাজি না হওয়ায় জোরপূর্বক ৫০ হাজার টাকা ও ৪ ভরি স্বর্ণালংকার নিয়ে যায়। স্থানীয় পর্যায়ে সালিশ বৈঠকে বিষয়টি নিষ্পত্তি হলে তারা সিদ্ধান্ত নেন দুইজন ঢাকা চলে যাবেন। সে অনুযায়ী ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে তারা ঢাকার সাভারে চলে যান। তিনি সেখানে গার্মেন্টসে চাকরি নেন। আর সাইফুল রাজমিস্ত্রীর কাজ নেয়। তিনি বাড়িতে শাশুড়ি ও দুই দেবরের জন্য প্রতিমাসে পাঁচ হাজার টাকা পাঠাতেন।
×