ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

গড়াইয়ের মাটি ও বালি লুট ॥ হুমকির মুখে বাঁধ

প্রকাশিত: ০৩:৫৩, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

গড়াইয়ের মাটি ও বালি লুট ॥ হুমকির মুখে বাঁধ

নিজস্ব সংবাদদাতা, কুষ্টিয়া, ১১ ফেব্রুয়ারি ॥ কুমারখালী উপজেলায় গড়াই নদী থেকে মাটি ও বালি প্রকাশ্যে হরিলুট হচ্ছে। স্থানীয় এক শ্রেণীর প্রভাবশালী মাটি ও বালি লুটেরা প্রতিদিন নদী তীরের জমির মাটি কেটে ইটভাঁটির মালিকদের কাছে বিক্রি করে দিচ্ছে। এতে সরকার মোটা অঙ্কের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এছাড়া সড়কের তুলনায় অধিক লোডের মাটি ও বালি ভর্তি ড্রাম ট্রাকের চলাচলে সড়কের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। উপজেলার সদকী ইউনিয়নের জিলাপীতলা হিজলাকর এলাকায় গড়াই নদীর তীর থেকে অবৈধপন্থায় এই মাটি ও বালি উত্তোলন অবিলম্বে বন্ধের দবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায়, জিলাপীতলা হিজলাকর এলাকায় গড়াই নদীর গ্রামরক্ষা বাঁধের পাশ থেকে গভীরভাবে মাটি কেটে ইটভাঁটির মালিকদের কাছে বিক্রি করে দেয়া হচ্ছে। এভাবে বাঁশ বাগান, পানের বরজ, কলার বাগান, ফল ও বনজ গাছ থাকাবস্থায় ওই জমির চারপাশ ঘেঁষে খননযন্ত্রের (এক্সেভেটর) সাহায্যে গভীর করে মাটি কেটে নেয়া হচ্ছে। কিন্তু স্থানীয়রা কেউ এ ব্যাপারে মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন বলেন, আমার মতো অনেকেরই জমি আছে এখানে। কিন্তু ইচ্ছে থাকলেও কিছুই করার নেই। ওরা জমির চারপাশ থেকে গভীর ভাবে মাটি কেটে নিচ্ছে। ফলে ওই জমিতে আর চাষাবাদ করা সম্ভব হয় না। তাই বাধ্য হয়েই নামমাত্র টাকায় ওদের কাছে মাটি বিক্রি করে দিতে হচ্ছে। এলাকাবাসীর আশঙ্কা, গ্রামরক্ষা বাঁধের পাশ থেকে এভাবে জমির মাটি কেটে নেয়া হলে বর্ষা মৌসুমে গ্রামরক্ষা বাঁধ ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের আশ্রয়ণ বাস্তবায়ন সংস্থার অর্থায়নে নদীর তীরে নির্মিত হিজলাকর আশ্রয়ণ প্রকল্পের ব্যারাকগুলো হুমকির মুখে পড়বে। গেল বছর গড়াই নদী খননের সময় গ্রামরক্ষা বাঁধের পাশ দিয়ে বালির স্তূপ তৈরি করে এলাকার মানুষ নদী ভাঙ্গনের হাত থেকে মুক্তি পায়। স্থানীয়দের অভিযোগ, জিলাপীতলা মোড় এলাকার মাটি ও বালির কারবারি প্রভাবশালী মাসুদ ও কিবরিয়ার লোকজন ভোর থেকে রাত পর্যন্ত একাধিক খননযন্ত্রের সাহায্যে মাটি ও বালি উত্তোলন করে ছোট বড় ট্রাকে করে নিয়ে যাচ্ছে। এতে জিলাপীতলা হিজলাকর এলাকার মানুষের চলাচলের একমাত্র পাকা রাস্তটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। এছাড়া রাস্তার ধুলোয় আশপাশের মানুষের জীবনযাত্রা দুর্বিষহ করে তুলেছে। সদকী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদ বলেন, নদী তীরের জমির মাটি কেটে স্থানীয় প্রভাবশালীরা ইটভাঁটির মালিকদের কছে বিক্রি করে দিচ্ছে। প্রকাশ্যে এই হরিলুট হলেও দেখার কেউ নেই। এতে সরকারও মোটা অংকের রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তিনি নদীর তীর থেকে অবৈধপন্থায় এই মাটি ও বালি উত্তোলন অবিলম্বে বন্ধের দবি জানান। বালির করাবারি মাসুদ জানান, বহু কাঠখড় পুড়িয়ে বালির ব্যবসা করতে হচ্ছে। সবাইকে ম্যানেজ করেই এ ব্যবসা করছি। এ ব্যাপারে কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার শাহীনুজ্জামান বলেন, বালি উত্তোলনের জন্য কাউকে অনুমতি দেয়া হয়নি। অবৈধভাবে বালি উত্তোলনের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
×