ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

কোচ হাতুরার প্রশংসায় রেকর্ডধারী হেরাথ

প্রকাশিত: ০৬:০৬, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

কোচ হাতুরার প্রশংসায় রেকর্ডধারী হেরাথ

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ খুব বাজে সময় কাটছিল, সেখান থেকে যেন এবার বাংলাদেশ সফরে এসে ঘুরেই দাঁড়াল শ্রীলঙ্কা ক্রিকেট। ত্রিদেশীয় ওয়ানডে সিরিজের শিরোপা জেতার পর টেস্ট সিরিজ জিতল ১-০ ব্যবধানে। চান্দিকা হাতুরাসিংহে দলের কোচ হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর প্রথম মিশনেই বদলে গেছে লঙ্কানরা। সে জন্য এই কোচের ভূয়সী প্রশংসা করে অভিজ্ঞ বাঁহাতি স্পিনার রঙ্গনা হেরাথ দাবি করেন চান্দিকা দলে ভাল একটা পরিবেশ ফিরিয়ে এনেছেন। তাই লঙ্কান ক্রিকেটে অচিরেই উজ্জ্বল ভবিষ্যত দেখছেন তিনি। বাংলাদেশের দ্বিতীয় ইনিংসে ৪ উইকেট শিকার করেন হেরাথ, এর মাধ্যমে টেস্ট ইতিহাসে বাঁহাতি বোলারদের মধ্যে সর্বাধিক ৪১৫ টেস্ট উইকেটের মালিক হয়ে গেছেন। তিনি দাবি করেন, মিরপুরের উইকেট যেমন ছিল সেখানে ব্যাটসম্যানদের আক্রমণাত্মক মনোভাবের ব্যাটিং জরুরী ছিল এবং সেই প্রত্যাশা করেই বোলিং পরিকল্পনা সাজিয়েছিল শ্রীলঙ্কা। হেরাথ মনে করেন এমন উইকেটে টিকে থাকার চেষ্টা করে বেশিক্ষণ স্থায়ী হওয়া সম্ভব হতো না। গত বছর তিন ফরমেটের ক্রিকেটেই খুব খারাপ সময় কেটেছে শ্রীলঙ্কা দলের। কিন্তু এবার বাংলাদেশ সফরে এসে সাফল্য ধরা দিয়েছে দলটির। যেন নতুন করে নিজেদের ফিরে পেয়েছে। তবে নতুন করে জেগে ওঠার শুরুটা আগেই হয়েছিল বলে দাবি হেরাথের, ‘শুধু এটাই নয়, এমনকি আমরা যখন দুবাইয়ে পাকিস্তানের বিপক্ষে খেলে ২-০ ব্যবধানে জিতলাম তখনও মনে হয়েছিল আমরা ঘুরে দাঁড়িয়েছি। এরপর ভারতে একটা বাজে সিরিজ গেছে। সুতরাং সার্বিকভাবে আমি অনুভব করছি যে টেস্ট দলের আরেকটি অভিযান শুরু হয়েছে। আশা করছি এটা আমরা অব্যাহত রাখতে পারব।’ দলের এমন ভালভাবে জয় তুলে নেয়ার পেছনে নতুন কোচ হাতুরাসিংহের অবদানটা অনস্বীকার্য। তিনি আগাগোড়া পাল্টে ফেলেছেন দলটিকে। এ বিষয়ে হেরাথ বলেন, ‘যেসব মানুষ এর পেছনে ছিলেন- বিশেষ করে প্রধান কোচ, সহায়ক কর্মকর্তারা- তাদের সবারই কৃতিত্ব পাওয়া উচিত। এমনকি হাতুরাসিংহের বিষয়ে বলতে চাই যে তাকে আমি গত ১৫/১৬ বছর ধরে চিনি। তার সমৃদ্ধ জ্ঞান রয়েছে এবং তিনি জানেন কিভাবে সেই জ্ঞানগুলো আশেপাশের মানুষগুলোকে দিতে হয়। তিনি সবসময় চেষ্টা করেন দলে ভাল একটা পরিবেশ আনার এবং ইতিবাচক থেকে সবগুলো মুহূর্তের মুখোমুখি হওয়ার। এই সাধারণ ব্যাপারগুলোই তিনি দেখতে চান।’ বাংলাদেশ দলের ব্যাটিং বিপর্যয় ছিল উভয় ইনিংসে। তুলনামূলকভাবে উভয় ইনিংসেই ব্যাটিং ভাল করেছে শ্রীলঙ্কা। প্রথম ইনিংসে কোন উইকেট নিতে না পারলেও দ্বিতীয় ইনিংসে ৪ উইকেট শিকার করেন হেরাথ। এর মাধ্যমে ৮৯ টেস্টে ৪১৫ উইকেটের মালিক হয়েছেন তিনি। শ্রীলঙ্কার পক্ষে টেস্ট ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বাধিক উইকেটের মালিক ছাড়িয়ে গেছেন কিংবদন্তি পাকিস্তানী বাঁহাতি পেসার ওয়াসিম আকরামকে। ওয়াসিম ১০৪ টেস্টে নিয়েছেন ৪১৪ উইকেট। আর কোন বাঁহাতি বোলার হেরাথের ওপরে নেই। টেস্ট ইতিহাসে এখন তিনিই বাঁহাতি বোলারদের মধ্যে সর্বাধিক উইকেটের রেকর্ডধারী। এ বিষয়ে হেরাথ বলেন, ‘এই অর্জনের ব্যাপারে বলতে গেলে অবশ্যই বলব যে ওয়াসিম আকরামকে ছাড়িয়ে সেরা বাঁহাতি বোলার হয়ে ওঠা বিশাল ব্যাপার। আমার পুরো ক্যারিয়ারজুড়ে যারা সহায়তা দিয়ে গেছেন তাদের সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ দিতে চাই।’ এমন স্পিনবান্ধব উইকেটে হেরাথ রেকর্ডটা গড়েছেন বাংলাদেশী ব্যাটসম্যানদের আগ্রাসী মনোভাবের ব্যাটিং দেখে। তবে এ বিষয়ে হেরাথ বলেন, ‘এই মাঠটা ব্যাটসম্যানদের তেমন সুবিধা দেয়নি, স্পিনারদের অনেক দিয়েছে। ব্যাট করার জন্য তেমন সহজ উইকেট না এটি। দুই ধরনের মনোভাব থাকে- হয় আক্রমণাত্মক কিংবা রক্ষণাত্মক। কিন্তু আমরা এমনটাই প্রত্যাশা করেছিলাম যে তারা নেমে আমাদের ওপর চড়াও হোক। কারণ এই পিচে টিকে থাকার চেষ্টা করলে তা বেশিক্ষণ স্থায়ী হতো না।’
×