ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

উন্নয়নে সঠিক পরিকল্পনা প্রণয়ন ও দ্রুত বাস্তবায়নে জোর তাগিদ

প্রকাশিত: ০৫:৪১, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

উন্নয়নে সঠিক পরিকল্পনা প্রণয়ন ও দ্রুত বাস্তবায়নে জোর তাগিদ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলাদেশের উন্নয়নে সঠিক পরিকল্পনা প্রণয়ন ও দ্রুত বাস্তবায়নে সরকারের প্রতি জোর তাগিদ দিয়েছেন নগর পরিকল্পনাবিদ ও নগরবিষয়ক সংবাদকর্মীরা। দেশজুড়ে যে নির্মাণযজ্ঞ চলছে, তা অনেক ক্ষেত্রেই অপরিকল্পিত। পরিকল্পনার অভাবেই আজ ঢাকা শহর বসবাসের অযোগ্য নগরীতে পরিণত হয়েছে। পরিকল্পিত উন্নয়নে সোচ্চার না হলে রাজধানীর মতো পুরো দেশও ইট-কংক্রিটের জঞ্জালে পরিণত হয়ে বসবাসের অযোগ্য হয়ে যেতে পারে। এ ক্ষেত্রে সঠিক পরিকল্পনা প্রণয়ন করে তা বাস্তবায়নে সরকারের ওপর চাপ সৃষ্টি করা প্রয়োজন। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বিআইপি) ও নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরাম, বাংলাদেশ আয়োজিত ‘নগর উন্নয়ন পরিকল্পনায় সাংবাদিকতার ভূমিকা’ শীর্ষক পরিকল্পনা সংলাপে এমন অভিমত উঠে আসে। শনিবার রাজধানীর বাংলামোটর সংলগ্ন প্ল্যানার্স টাওয়ারে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন বিআইপির সহসভাপতি অধ্যাপক আখতার মাহমুদ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন বিআইপির সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীরনগর বিশ^বিদ্যালয়ের নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান। অনুষ্ঠানে মূল ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন ইংরেজি দৈনিক ডেইলি স্টারের সিনিয়র রিপোর্টার তৌফিক আলী। ধারণাপত্রে ঢাকা শহরের বাসযোগ্যতা হারানোর পেছনে কারণ হিসেবে সরকারের সঠিক পরিকল্পনার অভাব, ভাল পরিকল্পনাগুলোকে কেটে ছিঁড়ে তছনছ করা, বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রভাবশালীদের সঙ্গে সরকারের জনস্বার্থবিরোধী আপোষরফা প্রভৃতি বিষয় উঠে আসে। মতবিনিময় সভায় বক্তব্য দেন নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি অমিতোষ পাল, সাধারণ সম্পাদক মতিন আব্দুল্লাহ, বিআইপির সহসভাপতি পরিকল্পনাবিদ ফজলে রেজা সুমন প্রমুখ। অনুষ্ঠানে বিআইপি ও নগর উন্নয়ন সাংবাদিক ফোরামের পক্ষ থেকে নগরবিষয়ক প্রতিবেদনের ওপর কয়েকটি ক্যাটাগরিতে সেরা রিপোর্টের পুরস্কার প্রদানের ঘোষণা দেয়া হয়। প্রতি বছরে ৮ নবেম্বর নগর পরিকল্পনা দিবসে এ পুরস্কার দেয়া হবে বলে জানানো হয়। নগরবিষয়ক প্রতিবেদকরা মতবিনিময় অনুষ্ঠানে রাজধানীতে রেল যোগাযোগ বৃদ্ধি, শহরের বিকেন্দ্রীকরণ, যোগাযোগ ব্যবস্থার আধুনিকায়ন, খাল-নদী-জলাশয় রক্ষা প্রভৃতি পরমার্শ দেন। তারা বলেন, তুরাগ-বালু-বুড়িগঙ্গা-ধলেশ^রী নদীর পানির মান ঠিক না করে অর্ধশত কিলোমিটার দূর থেকে রাজধানীতে পানি আনার জন্য হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করা হচ্ছে। অথচ ওই টাকা দিয়ে এসব নদীকে ভাল করে নগরীতে পানি সরবরাহ করা সম্ভব ছিল। এতে রাজধানীর চারপাশের নদীগুলোও বাঁচত। অথচ নদীগুলোকে ধ্বংস করে মেঘনা-পদ্মা থেকে পানি আনার প্রকল্প হাতে নেয়া হচ্ছে। রাজধানীর জলাশয়-খালগুলোকে একের পর এক ধ্বংস করা হচ্ছে। অনৈতিকভাবে একের পর এক প্রভাবশালীদের আবাসন কোম্পানির অনুমোদন দেয়া হচ্ছে নদী খালগুলোকে ধ্বংস করার জন্য। অনুষ্ঠানে বিআইপির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক গোলাম রহমান বলেন, এক সময় বুড়িগঙ্গার পানি হাতে নিয়ে পান করা যেত। এখন সেই বুড়িগঙ্গার পাশ দিয়ে নাকে রুমাল দিয়ে হাঁটতে হয়। তিনি ঢাকা শহরের ওপর চাপ কমানোর জন্য স্থানীয় সরকার পর্যায়ে নগরায়নের পরামর্শ দেন। সভাপতির বক্তব্যে আখতার মাহমুদ বলেন, সরকারী যে প্রকল্পগুলো বাস্তবায়ন করা হয়, সেগুলো কতটা সফলতা পেল সে বিষয়ে কোন অডিট হয় না। এগুলো অডিটের আওতায় এনে পর্যালোচনা করা প্রয়োজন।
×