নিজস্ব সংবাদদাতা, রূপগঞ্জ, ১০ ফেব্রুয়ারি ॥ নারায়ণগঞ্জে রূপগঞ্জ উপজেলার হাবিবনগর এলাকার কাঞ্চন-কুড়িল বিশ^রোড সড়কে আওয়ামী লীগের দু’পক্ষ ও পুলিশ ত্রিমুখী সংঘর্ষে স্বেচ্ছাসেবক লীগ কর্মী সুমন মিয়া নিহতের ঘটনায় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষ পাল্টা পাল্টি সংবাদ সম্মেলন করেছে। শনিবার বিকেলে উপজেলার রূপসী ও মঠেরঘাট এলাকায় রূপগঞ্জ প্রেসক্লাব কার্যালয়ে পৃথক সংবাদ সম্মেলন করে তারা।
রূপসী এলাকার সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন মোল্লা, সহ-সভাপতি শেখ সাইফুল ইসলাম, উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফেরদৌসি আলম নিলা, যুবলীগ সভাপতি কামরুল হাসান তুহিন, নিহত সুমন মিয়ার বাবা মনু মিয়া, মা সাহিদা বেগম, মামলার বাদী ও নিহতের শাশুড়ি কাজল রেখাসহ আরও অনেকে।
সুমনের বাবা মনু মিয়া বলেন, আমি শুনেছি, চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম রফিকের লোকজন আমার ছেলেকে গুলি করে হত্যা করেছে। ছেলে হত্যার সংবাদ পেয়ে শোকে কাতর হয়ে আমি অসুস্থ হয়ে পড়ায় ছেলের শাশুড়ি কাজল রেখা আমার পরিবারের অন্য সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করে এবং আমার অনুমতিক্রমে এজাহার দেন এবং মামলা রুজু হয়। আমি সুস্থ হওয়ার পর এজাহার পড়ে দেখতে পাই, আমার বক্তব্যের সঙ্গে এজাহারের হুবহু মিল রয়েছে এবং এ বিষয়ে আমি বাদী হয়ে রূপগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছি। আমি ছেলে হত্যার বিচার দাবি করছি প্রশাসনের কাছে।
উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি তোফাজ্জল হোসেন মোল্লা বলেন, একটি অংশ তাদের থেকে বিচ্ছিন্ন রয়েছে। এর কারণ হিসেবে তিনি বলেন, ওই পক্ষটিতে নেতৃত্ব দিচ্ছেন রফিক চেয়ারম্যান। নিরীহ মানুষের জমি জবরদখল, ভূমিদস্যুতাসহ নানা অপরাধের সঙ্গে জড়িয়ে আছে তারা। আর এসবকে আশ্রয়-প্রশ্রয় দেয়া হয়না বলেই তারা আমাদের কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন রয়েছে এবং সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজী (বীর প্রতীক) এর বিরুদ্ধে নানাভাবে ষড়যন্ত্র করার চেষ্টা করছে। এখন এ বিরোধিতাকে কাজে লাগিয়ে একটি হত্যাকা-কে আড়াল করার চেষ্টা চালাচ্ছে পক্ষটি। এছাড়া ধর্ষণ, হত্যা, অস্ত্রবাজি, জমিদখলসহ অপরাধমূলক কর্মকা- করার অভিযোগে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কেউ যদি মামলা করেন, সেই অপরাধের দায়ভার তো আওয়ামী নেবেনা। উন্নয়নের ধারাকে বাধাগ্রস্ত করতেই ওই পক্ষ উঠে-পড়ে লেগেছে।
অপরদিকে, রূপগঞ্জ প্রেসক্লাব কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ শাহজাহান ভূইয়া, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান হারেজ, জেলা পরিষদের সদস্য মিজানুর রহমান মিজান, ইউপি চেয়ারম্যান আবু হোসেন ভূইয়া রানু, উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি আবুল বাশার টুকুসহ আরও অনেকে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ শাহজাহান ভূইয়া বলেন, হাবিবনগর এলাকায় সুমন হত্যাকা-ের ঘটনাটিতে স্থানীয় এমপি গোলাম দস্তগীর গাজী (বীর প্রতীক) রাজনৈতিক ফায়দা লুটতে পরিকল্পিতভাবে চেয়ারম্যান রফিকসহ আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছেন। যা এমপি হীনমন্যতার পরিচয় দিয়েছেন। এসব ঘটনা ছাড়াও রাজনৈতিক প্রতিহিংসাবশত আওয়ামী লীগের ১২ শত নেতা কর্মীর বিরুদ্ধে প্রায় দেড় শতাধিক মামলা দেয়া হয়েছে। এসব মামলায় উপজেলার আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতা থেকে ওয়ার্ড পর্যায়ের নেতা কর্মীও রেহাই পায়নি। সর্বশেষ সুমন হত্যাকা-ের ঘটনায় রফিকুল ইাসলাম রফিকসহ অসংখ্য আওয়ামী লীগের নেতা কর্মীদের বিরুদ্ধে মিথ্যা, ভিত্তিহীন, বানোয়াট মামলা দায়ের করা হয়েছে।
সুমন হত্যা মামলাটিতে চেয়ারম্যান রফিককে জড়িয়ে হুকুমের আসামি করে যে মিথ্যা মামলাটি দেয়া হয়েছে তা অত্যন্ত নিন্দনীয় ও ন্যক্কারজনক। তিনি আরও বলেন, নিহত সুমনের বাবা, মা, বেঁচে থাকলেও একটি বিশেষ উদ্দেশে তার শাশুড়িকে দিয়ে এ মামলার বাদী করা হয়।