ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে কাজ করছে অপরাধীরা

প্রকাশিত: ০৫:৩০, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে কাজ করছে অপরাধীরা

স্টাফ রিপোর্টার ॥ একের পর এক অপরাধী গ্রেফতার, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর নজরদারির পরও বন্ধ করা যাচ্ছে না চলমান এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস। শনিবার প্রশ্নপত্র ফাঁস ও ফাঁসের চেষ্টাকালে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় গ্রেফতার করা হয়েছে দুই শিক্ষকসহ কয়েক অপরাধীকে। রাজধানীতে আটক অপরাধীদের প্রশ্ন ফাঁসচক্রের সদস্য বলে ধারণা করছে পুলিশ। তাদের নিয়ে বিভিন্ন স্থানে অভিযানও শুরু করেছে পুলিশ। তবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর এ্যাকশনের মধ্যেও গণিত পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ উঠেছে। আগের পরীক্ষাগুলোর মতো এবারও পরীক্ষার আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এসেছে প্রশ্ন। শনিবার সকাল ৮টা ৩৫ মিনিটে কয়েকটি ফেসবুক গ্রুপে দেয়া হয় গণিতের বহুনির্বাচনী ‘খ’ সেট ‘চাঁপা’ নামের প্রশ্নপত্রের উত্তরসহ ছবি। একটি ফেসবুক মেসেঞ্জার গ্রুপে সকাল ৮টা ৫৬ মিনিটে প্রশ্নপত্রটি দেখতে পাওয়া যায়। হোয়াটস এ্যাপের ‘ঝঝঈ ফ্রি প্রশ্নের দুকান’ নামের একটি গ্রুপে গণিতের বহুনির্বাচনী অভীক্ষার ‘খ’ সেটের প্রশ্নপত্রটি পাওয়া যায়। এর সঙ্গে ছিল হাতে লেখা উত্তরপত্র। ফারহান আদনান নামের একটি আইডি থেকে এই প্রশ্নপত্রটি গ্রুপে দেয়া হয়। এরপর ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রশ্নপত্রটি ছড়িয়ে পড়ে। আগের পরীক্ষাগুলোর মতোই পরীক্ষা শেষে দেখা যায় আসল প্রশ্নের সঙ্গে ফেসবুকে আসা প্রশ্নের হুবহু মিল। এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় বাংলা এবং ইংরেজী (প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র), ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষার পর এবার গণিতের প্রশ্নপত্রও ফাঁস হয়েছে। এ নিয়ে টানা ছয়টি পরীক্ষার প্রশ্নই ফাঁস হলো। শনিবার (১০ ফেব্রুয়ারি) সকাল ৮টা ৫৯ মিনিটে হোয়াটস এ্যাপের একটি গ্রুপে গণিতের ‘খ-চাঁপা’ সেটের প্রশ্নপত্রটি পাওয়া যায়, যা অনুষ্ঠিত পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের সঙ্গে হুবহু মিলে গেছে। এর আগে বাংলা প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র, ইংরেজী প্রথম ও দ্বিতীয় পত্র, ধর্ম ও নৈতিক শিক্ষা পরীক্ষার প্রায় এক ঘণ্টা আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কিছু প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ আসে। পরীক্ষার আগ মুহূর্তে কিছু ফেসবুক আইডি থেকে প্রশ্ন ছড়ালে তা শিক্ষার্থীদের হাতে না গেলেও সরকারকে সমালোচনার মুখে ফেলছে একটি বিশেষ গ্রুপ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এটা পরিষ্কার যে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে কাজে লাগিয়ে সরকারকে বেকায়দায় ফেলতে কাজ করছে অপরাধীরা। প্রশাসন ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সম্পৃক্ত সরকারবিরোধীরা পরিকল্পিত-ভাবেই এ ঘটনা ঘটাচ্ছে। তবে পরীক্ষার ঠিক আগ মুহূর্তে হলেও সরকার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নজরদারি করতে ব্যর্থ হচ্ছে বলে বলছেন বিশেষজ্ঞরা। এ ব্যর্থতাকে কাজে লাগিয়েই সরকারবিরোধীরা সফল হচ্ছে। এছাড়া প্রশ্ন ফাঁসের এমন সঙ্কটের মধ্যে সকল বোর্ডে অভিন্ন প্রশ্ন করায় ফাঁসের ঝুঁকি আরও বেড়ে গেছে বলেও জানান বিশেষজ্ঞরা। ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক তপন কুমার সরকার বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁসের বিষয়ে একটি কমিটি কাজ করছে। বিষয়টি নিয়ে মন্ত্রণালয়সহ আমরাও তদারকিতে আছি। তবে গণিতের একটি প্রশ্ন আমরাও পেয়েছিলাম। কিন্তু সেটা তো মেলেনি, ফেইক প্রশ্ন ছিল। এদিকে প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা নিয়ে প্রথমে প্রশাসনের নীবরতার অভিযোগ উঠলেও কদিন ধরেই কঠোর অবস্থানের আছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নজরদারির বাইরেও মাঠে সক্রিয় র‌্যাব, পুলিশসহ সরকারের বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার সদস্যরা। শনিবার গণিত পরীক্ষাকে ঘিরে অপরাধীরা সক্রিয় হয়ে ওঠার প্রেক্ষাপটে রাজধানীতে অভিযান চালিয়ে আটক করা হয়েছে প্রশ্ন ফাঁস চক্রের দুজনকে। ডিএমপির মিডিয়া বিভাগের উপকমিশনার মাসুদুর রহমান সন্ধ্যায় জনকণ্ঠকে দুজনের আটকের কথা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেছেন, আটককৃতদের নিয়ে অভিযান চলছে। আটকের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। গাজীপুরে ৫ ছাত্র-শিক্ষক আটক ॥ ঢাকার বাইরে গাজীপুর থেকে আমাদের স্টাফ রিপোর্টার জানিয়েছেন, কালীগঞ্জ উপজেলার একটি কেন্দ্রে শনিবার মোবাইল ফোনে গণিতের ফাঁস হওয়া প্রশ্ন পাওয়া গেছে। ফাঁস হওয়া প্রশ্ন নিয়ে পরীক্ষা দেয়ার সময় তিন ছাত্র এবং দায়িত্বে অবহেলার জন্য দুই শিক্ষককে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নেয়া হয়েছে। এছাড়া আরও ছয় ছাত্রকে এক বছরের জন্য বাহিষ্কার করা হয়েছে। অপর ঘটনায় প্রশ্নপত্র নিয়ে কেন্দ্রের বাইরে যাওয়ার সময় জেলার শ্রীপুর উপজেলার মাওনা বহমুখী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রের গেট থেকে ওই কেন্দ্রের সহকারী কেন্দ্র সচিবকে পুলিশ আটক করেছে। আটককৃত আমজাদ হোসেন নাহীন শ্রীপুরের রেড়াইদেরচালা আলহাজ ধনাই বেপারি মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। তিনি মাওনা বহমুখী উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে সহকারী কেন্দ্র সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করছিলেন। এছাড়া কালীগঞ্জে আটককৃতরা হলেন ওই উপজেলার চুপাইর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক সঞ্জীব কুমার দেব নাথ ওরফে সবুজ ও জাঙ্গালিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক নজরুল ইসলাম ওরফে মানিক। ছাত্ররা হলো প্রণয় দাস, সঞ্জয় শীল ও সজীব দাস। শ্রীপুর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মাহমুদুল হাসান জানান, নৈর্ব্যক্তিক পরীক্ষা শেষ হওয়ার পর সকাল পৌনে ১১টার দিকে আমজাদ হোসেন নাহীন কেন্দ্রের বাইরে যাচ্ছিলেন। এ সময় গেটের কাছে সন্দেহজনকভাবে তাকে তল্লাশি করে তার কাছে রচনামূলক (গণিত) প্রশ্নপত্র পাওয়া যায়। এ ব্যাপারে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি। পরে কেন্দ্র সচিব ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে বিষয়টি অবহিত করা হয়। যশোরে কলেজছাত্র আটক ॥ যশোর অফিস থেকে স্টাফ রিপোর্টার জানিয়েছেন, যশোরে পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস প্রতারণার অভিযোগে এক কলেজছাত্রকে আটক করেছে পুলিশ। যশোর জিলা স্কুল কেন্দ্রের সামনে অভিভাবকদের মোবাইল ফোনে প্রশ্ন দেখানোর সময় তারা তাকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে। গণিত বিষয়ের পরীক্ষা ‘খ’ সেটের প্রশ্নে হলেও তার মোবাইল ফোনে পাওয়া গেছে ‘ক’ সেটের প্রশ্ন। আটক মনিরুজ্জামান যশোর সরকারী এমএম কলেজের মাস্টার্স শেষ বর্ষের ছাত্র ও ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ উপজেলার ছোট ধোপাদী গ্রামের সানাউল্লাহর ছেলে। যশোর শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মাধব চন্দ্র রুদ্র বলেন, সকাল পোনে দশটার দিকে এক যুবক জিলা স্কুল পরীক্ষা কেন্দ্রের সামনে তার মোবাইল ফোনে অভিভাবকদের এ বিষয়ের প্রশ্ন দেখাচ্ছিল। এ সময় অভিভাবকরা তাকে আটক করে পরীক্ষা কেন্দ্রে দায়িত্বরত পুলিশের কাছে সোপর্দ করে। এ সময় দেখা যায় আজ ‘খ’ সেটে পরীক্ষা হলেও সে ‘ক’ সেটের প্রশ্ন প্রদর্শন করছিল। রাজশাহীতে কলেজছাত্রী ॥ রাজশাহীতে প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগে এক কলেজছাত্রীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আমাদের স্টাফ রিপোর্টার জানিয়েছেন, শনিবার সকাল ১০টায় পরীক্ষা শুরুর আগে নগরীর পিএন গার্লস স্কুল কেন্দ্রের সামনে থেকে অভিভাবকরা কলেজছাত্রীকে আটক করে পুলিশে দেয়। পরে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে যায়। গণিত পরীক্ষার প্রশ্নের সঙ্গে ওই কলেজছাত্রীর মোবাইলে পাওয়া প্রশ্নের মিল পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। আটক কলেজছাত্রীর নাম রাবিয়া ইসলাম রিয়া। তিনি রাজশাহী সরকারী সিটি কলেজের গণিত বিভাগের অনার্স প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী। নগরীর বোয়ালিয়া থানার ওসি আমান উল্লাহ বলেন, প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগে রিয়া নামের এক কলেজছাত্রীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তার মোবাইল ফোনে পাওয়ার ‘ঘ সেট’ প্রশ্নের সঙ্গে পরীক্ষার প্রশ্নের মিল পাওয়া গেছে। তার এক ফেসবুক বন্ধু পরীক্ষা শুরুর প্রায় পৌনে এক ঘণ্টা আগে প্রশ্নটি ফেসবুকের ম্যাসেঞ্জারে পাঠিয়েছে বলে রিয়া পুলিশকে জানিয়েছে। তবে বিষয়টি যাচাই-বাছাই করে দেখে হচ্ছে। রিয়ার বিরুদ্ধে মামলা করা হবে। তার বন্ধুর সন্ধানে পুলিশ কাজ শুরু করেছে বলে জানান ওসি। শেরপুরে যুবক আটক ॥ শেরপুর মডেল গার্লস ইনস্টিটিউট কেন্দ্র থেকে প্রশ্নফাঁসের অভিযোগে এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে মোবাইল থেকে বিভিন্নজনকে প্রশ্ন সরবরাহ করার সময় পুলিশ তাকে আটক করে। আটককৃত সোলাইমান মিয়া (২২) সদর উপজেলার লছমনপুর গ্রামের আমিনুল ইসলাম খোকা মিয়ার ছেলে। পীরগঞ্জে দুজন আটক ॥ ঠাকুরগাঁও থেকে নিজস্ব সংবাদদাতা জানিয়েছেন, জেলার পীরগঞ্জ উপজেলার জাবরহাট হেমচন্দ্র উচ্চ বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্রে শনিবার এসএসসি পরীক্ষার গণিত বিষয়ে প্রশ্নপত্র ফাঁস করার অভিযোগে দুইজনকে আটক করেছে পুলিশ। সকালে পরীক্ষা শুরুর আগে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে প্রশ্ন ও উত্তরপত্র আদান প্রদানকালে সাইদুর রহমান নামে এক ব্যাংক কর্মকর্তা ও ইউনুস আলী নামে এক শিক্ষককে আটক করে পুলিশ। কেন্দ্রের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সোহাগ চন্দ্র সাহা জানান, আটককৃতদের মোবাইল ফোনে পাওয়া প্রশ্নের সঙ্গে পরীক্ষার প্রশ্নের মিল পাওয়া গেছে। তাদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে। তবে তদন্তের স্বার্থে আটককৃতদের ছবি এখনই প্রকাশ করা যাবে না। সাইদুর আল আরাফা ইসলামী ব্যাংকের কর্মকর্তা ও ইউনুস জগন্নাথপুর বুদ্ধি প্রতিবন্ধী ও অটিজম বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক বলে জানায় পুলিশ। সিরাজগঞ্জে দুজন গ্রেফতার ॥ সিরাজগঞ্জ থেকে স্টাফ রিপোর্টার জানিয়েছেন, উল্লাপাড়া এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্রের মোমেনা আলী বিজ্ঞান স্কুল উপকেন্দ্রে গণিত পরীক্ষা চলাকালে দুই এমএলএসএস কর্মীকে নকল সরবরাহের অপরাধে গ্রেফতার করে ভ্রাম্যমাণ আদালতে ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এরা হলেন এই স্কুলে এমএলএসএস পদে চাকরিরত আমিরুল ইসলাম ও আব্দুল মমিন। পরীক্ষা শেষে এদের এ সাজা দেয়া হয়। চার ঘণ্টার পরীক্ষা ॥ বরিশাল থেকে স্টাফ রিপোর্টার জানিয়েছেন, জেলার আগৈলঝাড়া উপজেলা সদরের শ্রীমতি মাতৃমঙ্গল বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রের কেন্দ্র সচিব ও হল সুপারের দায়িত্বে অবহেলার কারণে তিন ঘণ্টার এসএসসির গণিত পরীক্ষা চার ঘণ্টা দিয়েছে শিক্ষার্থীরা। এমসিকিউ পরীক্ষার প্রশ্ন ভুল, সৃজনশীল পরীক্ষার প্রশ্ন সঙ্কটে ফটোকপি প্রশ্ন সরবরাহ করা হয়েছে। পুরান বছরের ভুল প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা দিলেও ফলাফল নিয়ে উদ্বিগ্ন ও হতাশা প্রকাশ করছেন পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা। সূত্রমতে, তিন ঘণ্টার পরীক্ষা চার ঘণ্টাব্যাপী নেয়ার ঘটনা মুহূর্তের মধ্যে ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয় সংবাদ কর্মীরা সংবাদ সংগ্রহের জন্য কেন্দ্রের সামনে গেলে সেখানে উপস্থিত পরীক্ষা পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার আশ্রাফ আহম্মেদ রাসেল কোন সাংবাদিককে পরীক্ষা কেন্দ্রে প্রবেশ করতে দেননি। তিনি কেন্দ্রের প্রধান ফটকে তালা ঝুঁলিয়ে দিয়ে পরীক্ষা নিচ্ছিলেন। তিনি চার ঘণ্টা পরীক্ষা নেয়ার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, প্রশ্নপত্র দেরিতে দেয়ায় তাদের পরীক্ষার সময় বাড়ানো হয়েছে। অবশ্য তিনি প্রথমে ভুল প্রশ্নে পরীক্ষা নেয়ার কথা অস্বীকার করলেও পরে পরীক্ষা দিয়ে বের হওয়া শিক্ষার্থীদের বরাত দিয়ে তার কাছে পুনরায় ফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিষয়টি অনিচ্ছাকৃত ভুল। বিষয়টি তাৎক্ষণিক বরিশাল শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানকে অবহিত করা হয়েছে। বোর্ডের বরাত দিয়ে ইউএনও রাসেল আরও জানান, বোর্ড কর্তৃপক্ষ তাকে মৌখিকভাবে বলেছেন উত্তরপত্র দেখার সময় ওই ভাবেই মূল্যায়ন করা হবে। ইউএনও অবরুদ্ধ ॥ এদিকে কুড়িগ্রামের রৌমারী উপজেলার যাদুরচর উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে নকল প্রতিরোধ করায় বহিরাগতরাসহ বিক্ষুব্ধ পরীক্ষার্থীরা পরীক্ষা শেষে কেন্দ্রে তা-ব চালিয়ে ইউএনওকে দেড় ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখে। আমাদের স্টাফ রিপোর্টার জানিয়েছেন, বহিরাগতরাসহ বিক্ষুব্ধ পরীক্ষার্থীরা ইউএনওর গাড়ি, শিক্ষকদের মোটরসাইকেল, সিসি ক্যামেরা, বিদ্যালয়ের নিরাপত্তা দেয়ালসহ দরজা-জানালা ও চেয়ার-টেবিল ভাংচুর করে। রোষানল থেকে বাঁচাতে শিক্ষকরা ইউএনওকে দোতলায় নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় এক পুলিশ সদস্যসহ ১০/১২ জন আহত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ। পরীক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, রৌমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অন্য কোন কেন্দ্রে না গিয়ে শুধু যাদুরচর উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে কর্তব্য পালন করেন। এ সময় কোন কারণ ছাড়াই পরীক্ষার্থীদের নানাভাবে হয়রানি করায় সবাই বিক্ষুব্ধ হয়। ফলে এ ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে রৌমারীর ইউএনও দীপংকর রায় জানান, পরীক্ষা শুরু হওয়ার দশ মিনিট পর আমি কেন্দ্রে উপস্থিত হই। পরীক্ষা শেষে বাচ্চারা মূলত হট্টগোল করে। এ সময় তারা আমার গাড়ি, শিক্ষকদের ১৩টি মোটরসাইকেলসহ বিদ্যালয়ে লাগানো ১৫টি সিসি ক্যামেরা ভাংচুর করে। ভেঙ্গে ফেলা হয় দেড়শ ফিট বিদ্যালয়ের নিরাপত্তা দেয়াল, পরীক্ষা কেন্দ্রের দরজা জানালা। তাদের তা-বে স্থানীয়রাও অংশ নেয়।
×