ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

নিরাপত্তার নয়াদিগন্ত

প্রকাশিত: ০৪:০৭, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

নিরাপত্তার নয়াদিগন্ত

উন্নয়নে আঞ্চলিক বৈষম্য বলে একটা কথা দীর্ঘদিন প্রচলিত ছিল। কিন্তু গত নয় বছরে শেখ হাসিনার কল্যাণে ‘আঞ্চলিক বৈষম্য’ অপবাদটি অনেকটাই লাঘব হয়েছে, হচ্ছে। তাই দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নের কথা বলতে হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় অতি দ্রুত বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চল আজ উন্নয়নের স্বর্ণশিখরে পৌঁছেছে। তিনি এ অঞ্চলের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য সংগ্রাম করছেন। নিজেদের অর্থে পদ্মা সেতু হচ্ছে। হচ্ছে পায়রা বন্দর। এই পদ্মা সেতু ও পায়রা বন্দরকে ঘিরে বিদেশীদের দক্ষিণাঞ্চলে কল-কারখানা গড়ে তোলার চিন্তা হচ্ছে। বলা চলে দক্ষিণাঞ্চল একদিন অর্থনৈতিক উন্নয়নের অন্যতম স্তম্ভে পরিণত হবে। উন্নয়নের সেই ধারাবাহিকতায় দেশের ৩১তম ‘শেখ হাসিনা সেনানিবাস’-এর উদ্বোধন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার পটুয়াখালী জেলার লেবুখালীতে সেনানিবাসের উদ্বোধন করেন তিনি। এটি দক্ষিণাঞ্চলের নিরাপত্তার নয়াদিগন্ত হিসেবে চিহ্নিত হবে তাতে সন্দেহ নেই। প্রধানমন্ত্রী নতুন এ সেনানিবাস উদ্বোধনের পাশাপাশি সেনানিবাসের মাল্টিপার্পাস হল, এসএম ব্যারাক, অফিস ভবনসহ ১৫টি স্থাপনার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। বিকালে তিনি বরিশালের ঐতিহাসিক বঙ্গবন্ধু উদ্যানে স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় বক্তব্য রাখেন। এদিন ৩৯টি উন্নয়ন প্রকল্প উদ্বোধন ও ৩৩টি ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন প্রধানমন্ত্রী। সেনাবাহিনীর ৯টি ডিভিশনের আওতায় দেশে ৩০টি সেনানিবাস থাকলেও এতদিন দক্ষিণাঞ্চলের উপকূলীয় এলাকায় কোন সেনানিবাস ছিল না। দক্ষিণাঞ্চলের ছয়টি জেলায় বড় ধরনের কোন প্রাকৃতিক দুর্যোগ হলে ২০০ কিলোমিটার দূরের যশোর সেনানিবাসের সহায়তা নিতে হতো। সেই বাস্তবতায় জাতীয় ও জনগুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তাসহ দক্ষিণ উপকূলের ৬ জেলার প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় দেড় হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে বরিশাল ও পটুয়াখালী জেলার দেড় হাজার একর ভূমিতে সূচনা হলো ১৭ হাজার জনবলের নবনির্মিত এই সেনানিবাস। এছাড়া পটুয়াখালীর পায়রায় গভীর সমুদ্রবন্দর নির্মাণের কাজ চলছে। তিন হাজার ৬০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন দেশের সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কাজও পায়রায় চলছে। চলছে দুটি অর্থনৈতিক অঞ্চল নির্মাণের কাজও। একই সঙ্গে একটি বিমানবন্দর নির্মাণের পরিকল্পনাও রয়েছে সরকারের। দক্ষিণাঞ্চলজুড়ে সরকারের নেয়া এসব মেগা প্রকল্পের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সেনানিবাসটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। ২০০৯ সালে শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করে দীর্ঘমেয়াদী অনেক প্রকল্প হাতে নিয়েছেন। আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারেও স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি ছিল, যার ফলশ্রুতিতে দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের ক্ষেত্রে আসে ব্যাপক সাফল্য। এসব ক্ষেত্রে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রীয় প্রতিনিধি এবং আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও বাংলাদেশের উন্নয়নের ভূয়সী প্রশংসা করা হয়। বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে। এতে শেখ হাসিনার প্রতি দেশের আপামর মানুষের আস্থা বেড়ে যায়। আসলে স্বল্পোন্নত একটি দেশকে উন্নয়নশীল দেশে রূপান্তরের নেপথ্য কারিগর শেখ হাসিনা। এই মুহূর্তে তাঁর ওপরই দেশের সিংহভাগ মানুষের আস্থা। পদ্মা সেতুর মতো বড় প্রকল্প এক সময় ছিল স্বপ্ন। সেই স্বপ্ন পূরণের দ্রষ্টা তিনি। ভাল কাজের মূল্যায়ন সব দেশেই হয়। দেশের উন্নয়নে কাজ করলে অবশ্যই জনসমর্থন পাওয়া যায়। শেখ হাসিনা সেই পথেই এগোচ্ছেন। আগামী দিনে পদ্মা সেতু, পায়রা সমুদ্রবন্দর, শেখ হাসিনা সেনানিবাস দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নের মূল সোপান হিসেবে চিহ্নিত হবে তাতে সন্দেহ নেই।
×