ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

পত্নীতলায় বনভূমির জমি অন্যের নামে রেজিস্ট্রির অভিযোগ

প্রকাশিত: ০৮:৩২, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

পত্নীতলায় বনভূমির জমি অন্যের নামে রেজিস্ট্রির অভিযোগ

নিজস্ব সংবাদদাতা, নওগাঁ, ৯ ফেব্রুয়ারি ॥ সামাজিক বন বিভাগ রাজশাহীর পাইকবান্দা রেঞ্জের প্রায় তিন একর জমি এলাকার কুচক্রী মহল উপজেলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের অসাধু কর্মকর্তা, কর্মচারী ও দালালদের যোগসাজসে ব্যক্তি মালিকানায় জমি রেজিস্ট্রি করার অভিযোগ রয়েছে। জানা গেছে, সামাজিক বন বিভাগ রাজশাহীর পাইকবান্দা রেঞ্জের অধীনে পত্নীতলা, ধামইরহাট, সাপাহার ও পোরশা উপজেলায় ৭১৮৯.৯৩ একর সংরক্ষিত, রক্ষিত ও অর্পিত বনভূমি বিদ্যমান। উক্ত সংরক্ষিত বনভূমির শতকরা প্রায় ৫০ভাগ বন বিভাগের নামে আরএস রেকর্ড না হওয়ায় একটি কুচক্রী মহল বনবিভাগের উক্ত জমিগুলো জবর দখল করে প্রাকৃতিক পরিবেশ বিনষ্টের সঙ্গে সরকারী অধিকার খর্ব করছে। যা ইতোপূর্বে আইনী জটিলতায় বনবিভাগ কর্তৃপক্ষ কোন ব্যবস্থা নিতে পারেনি। সম্প্রতি একটি কুচক্রী মহল সুযোগ বুঝে জাল জালিয়াতির মাধ্যমে ভূমি অফিসের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা, কর্মচারীর মাধ্যমে ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে পতœীতলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের অসাধু কর্মকর্তা, কর্মচারী ও দালালদের যোগসাজসে ব্যক্তি মালিকানায় জমি রেজিস্ট্রি করার কথা বন বিভাগ কর্তৃপক্ষ জানতে পেরে পতœীতলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে উপজেলার আলপাকা মৌজার ৩নং খতিয়ানের ২৪৯নং দাগে (আরএস ৪৭৭, ৪৭৯) বন বিভাগের প্রায় তিন একর রক্ষিত বনভূমি রেজিস্ট্রির তথ্য নেয়ার আবেদন জানান। পতœীতলা সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের তথ্য অনুযায়ী দুটি দলিল নং ৬৪৭০/২০১৬, তারিখ ২১/১১/২০১৬ এবং ৫৫৬২/২০১৫, তারিখ ২৪/৮/২০১৫। জমির পরিমাণ ০.২৫ একর ও ০.৪৯ একর। এ বিষয়ে পাইকবান্দা রেঞ্জের রেঞ্জার রবিউল ইসলাম জানান, বন বিভাগের আলপাকা মৌজার উক্ত ভূমি সম্পূর্ণভাবে রক্ষিত বনভূমি। যার খতিয়ান বন বিভাগের নামে এবং ১৪২৪ সাল (বাংলা) পর্যন্ত বন বিভাগ যার খাজনা পরিশোধ করেছে। বনবিভাগ কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট রাজস্ব অফিস ও সাব-রেজিস্ট্রি অফিসকে বহু পূর্ব থেকেই সরকারী বনভূমির গেজেট নোটিফিকেশনের কপি সরবরাহ করেছে। পরবর্তীতে পুনরায় বন বিভাগ লিখিত পত্রের মাধ্যমেও সংশ্লিষ্ট দফতরে উক্ত গেজেট নোটিফিকেশনের কপি সরবরাহ করেছে। বন বিভাগ কর্তৃপক্ষ ২৬ ডিসেম্বর ২০১৭ আবারও উপরোক্ত বিষয়গুলো জানিয়ে সাব-রেজিস্ট্রি অফিসে বনবিভাগের কোন জমি রেজিস্ট্রি না করার জন্য অনুরোধ জানিয়ে পত্র প্রেরণ করলেও সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের অসাধু কর্মকর্তা, কর্মচারী ও দালালদের যোগসাজসে উক্ত কুচক্রী মহল আবারও ২৮ ডিসেম্বর ২০১৭ দুটি দলিল এবং ৩০ জানুয়ারি ২০১৮ একটি দলিল সম্পন্ন করেছে বলে জানা গেছে। বিশ্বস্থ সূত্রে বিষয়টি জানতে পেরে, বনবিভাগ কর্তৃপক্ষ পুনরায় উক্ত তথ্য চেয়ে সাব-রেজিস্ট্রারের কাছে আবেদন করলেও অদ্যাবধি সাব-রেজিস্ট্রি অফিস থেকে কোন তথ্য সরবরাহ করা হয়নি বলে তিনি জানান। তিনি আরও জানান, উক্ত বিষয়ে বন বিভাগের এককভাবে জাল-জালিয়াতি প্রতিরোধ করা সম্ভব নয়। এরুপ ভুয়া কাগজপত্রের মাধ্যমে কুচক্রী মহল জাল দলিল সম্পাদন করলে পরবর্তীতে ভূমি অফিসে ব্যক্তি নামে নামজারি হতে পারে। এ বিষয়ে পতœীতলা সাব-রেজিস্ট্রার বসু প্রদীপ কুমারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে বনবিভাগের অভিযোগের কথা স্বীকার করে বলেন, বিষয়টি তিনি দেখবেন।
×