ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

কমিউনিটি ভিত্তিক বীজতলা ॥ উন্নত চারায় ফলন বেশি

প্রকাশিত: ০৮:৩১, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

কমিউনিটি ভিত্তিক বীজতলা ॥  উন্নত চারায় ফলন বেশি

স্টাফ রিপোর্টার, বগুড়া ॥ জাতীয় কৃষি প্রযুক্তি কর্মসূচীর (এনএটিপি) আওতায় দেশে কমিউনিটি ভিত্তিক বীজতলা তৈরি হচ্ছে। এর সঙ্গে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের আওতায় আদর্শ বীজতলা তৈরির কার্যক্রম চালু রয়েছে। গত মৌসুমে কমিউনিটি ভিত্তিক বীজতলার প্রথম পর্যায়ের সাফল্যের পর চলতি বোরো মৌসুমে দ্বিতীয় পর্যায়ের দেশের সকল উপজেলাকে আওতাভুক্ত করা হয়েছে। এ বিষয়ে বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের (ডিএই) উপপরিচালক প্রতুল চন্দ্র সরকার জানান, কমিউনিটি ভিত্তিক বীজতলা তৈরি করছে প্রতিটি গ্রামের কৃষকদের ‘কমন ইন্টারেস্ট গ্রুপ’। এই গ্রুপে ৩০ জন মহিলা ও ৩০ জন পুরুষ কৃষক আছে। তারা বিচ্ছিন্নভাবে অল্প ভূমিতে বীজতলা তৈরি করে না। এরা সম্মিলিতভাবে বেশি ভূমি নিয়ে বড় পরিসরে বীজতলা তৈরি করে। বীজ, শ্রম, সার, সেচ কম লাগার কারণে এতে খরচও কম। পরিচর্যা করা সহজ। চারাগুলো হয় মান সম্পন্ন, সুস্থ ও সবল। এই পদ্ধতিতে বীজের অপচয় রোধ হয়। দুর্যোগে নষ্ট হওয়ার সম্ভাবনা কম। ভাল চারার কারণে ফলন বেশি মেলে। প্রতি একরে ১০ থেকে ১২ মণ করে বাড়তি ধান মেলে। উৎপাদন খরচ ৩০ থেকে ৩৫ ভাগ কমে যায়। এর পাশাপাশি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের আওতায় নিজস্বভাবে আদর্শ বীজতলা তৈরি করা হয়। সুপরিসর (কয়েক একর) ভূমিতে নির্দিষ্ট দূরত্বে ড্রেনেজ সেচের ব্যবস্থা ও নিবিড় পরিচর্যা থাকায় এসব বীজতলা থেকে উন্নতমানের চারা তৈরি হয়। দেশের প্রতিটি এলাকায় চলতি আদর্শ বীজতলার পাশাপাশি কমিউনিটি ভিত্তিক বীজতলা তৈরি করা হচ্ছে। এ ধরনের বীজতলার অন্যতম লক্ষ্য, চারার বিষয়ে কৃষকদের সচেতন করা তোলা। যাতে তারা নিজেরাই নিজেদের উদ্যোগে উন্নতমানের চারা তৈরি করে। বগুড়ার মোকামতলা এলাকার কৃষক আব্দুর রহমান বললেন, আগে কৃষক নিজেদের ইচ্ছামতো বিচ্ছিন্নভাবে অল্প ভূমিতে বীজতলা তৈরি করত। একসঙ্গে অনেক বীজ ছড়িয়ে দেয়ায় অপচয় হতো। চারা বেড়ে ওঠার পর নিবিড় পরিচর্যা হতো না। অল্প ভূমিতে পরিচর্যা করাও ছিল কঠিন। ফলে পায়ে দলেও অনেক চারা নষ্ট হয়ে যেত। সনাতন এই পদ্ধতিতে তৈরি চারা হতো দুর্বল। মান সম্পন্ন চারা না হওয়ায় ফলনে বিরূপ প্রভাব পড়ত। উৎপাদন কমে যেত। বগুড়ার সোনাতলার রানীরপাড়া গ্রামের কৃষক বাসেত আলী বললেন, সনাতন পদ্ধতির চারার ঘনত্ব বেশি হওয়ায় চারা খুবই সরু ও লিকলেকে হতো। বেশি শীতে বিশেষ করে শৈত্যপ্রবাহে চারা রক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়ত। রোগাক্রান্ত চারা সহজেই নষ্ট হয়ে যেত। তিনি জানান এক এলাকায় কমিউনিটি ভিত্তিক বীজতলা তৈরি করা দেখে অন্য এলাকার কৃষক একইভাবে (কমিউনিটি ভিত্তিক) বীজতলা তৈরি করছে। এতে তারা লাভবান হচ্ছে।
×