অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ প্রতিকেজি পেঁয়াজ ৫ টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৪৫ টাকায়। আরও কমেছে সব ধরনের সবজির দাম। চাল, আটা, ভোজ্যতেল, চিনি, ডাল ও ডিমের দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ফের বেড়েছে রসুন ও আদার দাম। আগের দামে বিক্রি হচ্ছে মাছ ও মাংস। সবজি ও পেঁয়াজের দাম কমায় স্বস্তি বিরাজ করছে বাজারে।
শুক্রবার রাজধানীর কাওরান বাজার, কাপ্তান বাজার, ফকিরাপুল বাজার এবং যাত্রাবাড়ী বাজার ঘুরে নিত্যপণ্যের দরদামের এসব তথ্য পাওয়া গেছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, ধীরে ধীরে কমছে পেঁয়াজের দাম। এ কারণে পেঁয়াজের দাম নিয়ে ক্রেতাদের মধ্যে এখনও অস্বস্তি রয়েছে। তবে পাইকারি ব্যবসায়ীদের মতে, এ বছর বাংলাদেশসহ ভারতে পেঁয়াজের উৎপাদন কম হয়েছে। এ কারণে গত কয়েক মাস ধরে দাম চড়া। তবে এখন মুড়িকাটা পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়ায় ধীরে ধীরে দাম কমছে। খুচরা ক্রেতারা বলছেন, এখনও ৪৫-৫০ টাকার নিচে বাজারে কোন পেঁয়াজ নেই। অথচ এখন মৌসুমে ২৫-৩০ টাকার মধ্যে পেঁয়াজ বিক্রি হওয়ার কথা।
কাওরান বাজারে সবজি কিনছিলেন তেজতুরি পাড়ার বাসিন্দা নাজমুল হোসেন। তিনি
বলেন, সরবরাহ বাড়ায় সব ধরনের সবজির দাম এখন কমেছে। কেজিপ্রতি দেশী ও আমদানি করা পেঁয়াজ ৪৫ থেকে ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা গত সপ্তাহে ৫৫-৬০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, গত সপ্তাহের শেষ থেকেই আমদানি করা পেঁয়াজের আমদানি মূল্য অনেক কমে গেছে। ফলে আমরাও কিছুটা কম দামে বিক্রি করতে পারছি। সামনের দিনগুলোতে পেঁয়াজের দাম কমে স্বাভাবিক পর্যায়ে চলে আসবে বলেও জানান তিনি।
একই কথা জানালেন মুগদা বড় বাজারের খুচরা বিক্রেতা আবুল হোসেন। তিনি বলেন, পেঁয়াজ আমদানি বেড়েছে। এছাড়া দেশীয় পেঁয়াজের সরবরাহ বাড়ছে। ফলে পেঁয়াজের দাম কমছে। সামনের দিনগুলোতে আরও দাম কমবে বলে জানালেন তিনি। তবে সবজির দাম কমায় সপ্তাহিক ছুটির দিনে বাজার করতে আসা রাজধানীর বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার ক্রেতারা বাজারে স্বস্তি পেয়েছেন। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, প্রতিকেজি বেগুন ৪০ টাকা, শিম ৪০ টাকা, পেঁপে ২০ টাকা, মুলা ১৫ টাকা, টমেটো ৪০ টাকা, কাঁচামরিচ ৬০-৮০ টাকা, শসা ৪০ টাকা, লাউ প্রতিপিস ৪০ টাকা, গাজর ৪০ টাকা, আলু ২০ টাকা, প্রতিপিস বাঁধাকপি ও ফুলকপি ২০ থেকে ২৫ টাকা, লালশাক, পালংশাক ও ডাটাশাক দুই আঁটি ১৫ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে।
এছাড়া বাজারে রসুন ৯০-১২০, আদা ৭০-১১০, ব্রয়লার মুরগি ১২৫-১৩৫, দেশী মুরগি প্রতিপিস ৩৫০-৩৮০, মসুর ডাল ৬০-১২০, ডিম হালী ২৫-২৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতিকেজি আটা বিক্রি হচ্ছে ২৮-৩৫ টাকায়। এছাড়া সরু চাল ৫৮-৬৮, বিশেষ করে নাজির ও মিনিকেট বিক্রি হচ্ছে ৫৬-৬২ টাকায়। মাঝারি মানের পাইজাম ও লতা ৪৮-৫২ এবং মোটা স্বর্ণা ও চায়না ইরি চাল বিক্রি হচ্ছে ৪৪-৪৬ টাকায়। ব্যবসায়ীরা বলছেন, মাঝে চালের দাম একটু বাড়লেও আপাতত আর বৃদ্ধি পাওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই। এবছর সরকারী-বেসরকারী পর্যায়ে প্রচুর পরিমাণে চাল আমদানি করা হয়েছে।
এদিকে মাছ ও মাংসের দাম স্থিতিশীল রয়েছে। শীতে ইতোপূর্বে এত ইলিশ বাজারে দেখা যায়নি। সাগর ও নদীতে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ায় বাজারে সরবরাহ বেড়েছে মাছের। তুলনামূলক কিছুটা কম দামে বিক্রি হচ্ছে ইলিশ মাছ। মাঝারি সাইজের প্রতিজোড়া ইলিশ বিক্রি হচ্ছে ৮০০-১০০০ টাকায়। এছাড়া বাজারে দেশী জাতীয় সকল মাছের সরবরাহ বেড়েছে। কিছুটা স্বস্তায় পাওয়া যাচ্ছে দেশী মাছ। বিশেষ করে শোল, টাকি, কৈ এবং বড় সাইজের দেশী বোয়াল পাওয়া যাচ্ছে বাজারে। মাছ বিক্রেতারা বলছেন, বিত্তশালীরা বাজারে এসে বোয়াল মাছের খোঁজ করছেন। বড় আকারের প্রতিকেজি বোয়াল মাছ বিক্রি হচ্ছে ৬০০-৮০০ টাকায়। আকারভেদে প্রতিটি শোল মাছ বিক্রি হচ্ছে ৪০০-৬০০ টাকায়।