[মুক্তিযোদ্ধা শেখ আবদুল বাতেন, প্রিয়ভাজন।]
প্রিয় মাতল আমার
যেদিন পূর্ব পাকিস্তান উদ্ধারকল্পে, মধ্যপ্রাচ্য থেকে
ঢাকায় এলেন,
সেদিন আমরা কয় ভাই
খুশিতে এমনই আত্মহারা হয়েছিলাম
যা পাড়া প্রতিবেশীদের কাছে ছিল কল্পনার অতীত
সেই দিন রাতে মাতুলের স্যুটকেস খুলে
মাতুলের জামা-শাড়ি বের করতে গিয়ে দেখি
একটি লাল পাসপোর্ট। এক দৃষ্টে তাকিয়ে আছে আমার দিকে।
হঠাৎ আমার মনে হলো
মাতুলের পাসপোর্ট যেন কথা বলছে আমার সাথে
দেখলাম তার চোখ দুটি ভেজা ছলো ছলো।
বললো আমাকে,
সোনার পূর্ব পাকিস্তান রেখে গেলাম। এখন দেখছি কয়লার মরুভূমি
আজ হোক কাল হোক যে করেই হোক, পূর্ব পাকিস্তান
আমাকে উদ্ধার করতেই হবে।
পাসপোর্টটি হয়তোবা আরও কিছু বলতো আমাকে তার
আগে মাতুল এসে দাঁড়ালেন পাশে, তিনি বললেন
তোরা কয় ভাই থাকবি আমার সাথে, আরও থাকবে
অন্ধ খন্ধ শত শত।
পূর্ব পাকিস্তান উদ্ধার কমিটির সভাপতি হব আমি, সম্পাদক হবে
রাউজানের বড়ো চৌধুরী।
সেদিন মাঝরাতে মাতুলকে বললাম, আপনার প্রিয় পাকিস্তানী পাসপোর্ট
আপনার বিরুদ্ধে বলেছে অপ্রিয় অনেক সত্য কথা। তখুনি রোকোনালী
জানতে চাইলেন,- কি-কি-বলেছে তোকে, বললাম,Ñ বলেছেÑ
আপনি নাকি মাতৃভূমির সঙ্গে করেছেন বিশ্বাসঘাতকতা
আরো বলেছেনÑ
চুক্তিযোদ্ধা আর হিন্দুদের পোড়াবেন একসাথে পোস্তগোলার মহাশ্মশানে,
রোকোনালী মাতুল আবার হেসে বললেন,
পাসপোর্টটি এক্ষুনি ফেলে দিয়ে আয় বুড়িগঙ্গায়
প্রিয় মাতুল এখনো আমাদের সাথেই আছেন
শুধু তার লাল পাসপোর্টটি ঘুমিয়ে আছে
বুড়িগঙ্গার দূষিত জলে।
শীর্ষ সংবাদ: