ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

লন্ডনে বাংলাদেশ দূতাবাসে ভাংচুর

প্রকাশিত: ০৬:৪৪, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

লন্ডনে বাংলাদেশ দূতাবাসে ভাংচুর

বিডিনিউজ ॥ খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতি মামলার রায়কে কেন্দ্র করে যুক্তরাজ্য বিএনপির বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে লন্ডনে বাংলাদেশ দূতাবাসে ভাংচুর করা হয়েছে। ঢাকার আদালতে রায়ের আগের দিন বুধবার বিকেলে বিএনপির শতাধিক নেতাকর্মী ব্যানার-ফেস্টুন নিয়ে দূতাবাস চত্বরে জড়ো হয়। তারা স্লোগান দেয়- ‘আমার মায়ের কিছু হলে জ্বলবে আগুন ঘরে ঘরে, আমার নেত্রী বন্দী হতে দেব না’। যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালেক বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে বিক্ষোভ ও স্মারকলিপি দিতে গিয়েছিলাম, তখন হাইকমিশনের কর্মকর্তারা তা নিতে অস্বীকার করেন’। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে কিছু মানুষ ভিতরে প্রবেশ করে শেখ হাসিনা ও শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি খুলে নিয়ে ভাংচুর করে। স্বেচ্ছাসেবক দলের যুক্তরাজ্য সভাপতি নাসির আহমদকে সেখান থেকে গ্রেফতার করেছে লন্ডন পুলিশ। এদিকে দূতাবাসের একজন কর্মকর্তা বলেন, ‘বিএনপি নেতাকর্মীরা ভাংচুর চালিয়েছে, যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি স্বয়ং মানুষ নিয়ে ভেতরে ঢোকেন। হাইকমিশনের একজন কর্মচারীকে মারধরও করেন।’ বৃহস্পতিবার স্থানীয় সময় ভোর ৪টা থেকে ৬টা পর্যন্ত তারা ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর দফতর ডাউনিং স্ট্রিটের সামনে বাংলাদেশে ‘সরকার নির্দেশিত’ রায়ের প্রতিবাদ জানাবেন। এজন্য যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতিও নিয়ে রেখেছেন বলে জানান বিএনপি নেতা। অন্য একটি সূত্র জানায়, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলার রায় ঘোষণাকে কেন্দ্র করে লন্ডনে বাংলাদেশ হাইকমিশনের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশের আয়োজন করে যুক্তরাজ্য বিএনপি। স্থানীয় সময় বেলা আড়াইটা থেকে বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত চলা ওই বিক্ষোভে দুইশ’র বেশি নেতাকর্মী যোগ দেয়। লন্ডন মহানগর বিএনপির নির্বাহী সদস্য দেলোয়ার হোসেন বলেন, ‘সরকার জোর করে আমাদের নেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে জেলে বন্দী রাখতে চায়। সরকারকে হুঁশিয়ার করে দিতেই আমরা এখানে হাজির হয়েছি।’ পশ্চিম লন্ডনের কেনসিংটন এলাকার ‘কুইন্স গেট’ রাস্তায় অবস্থিত বাংলাদেশ হাইকমিশন। হাইকমিশনের বিপরীত পাশের ফুটপাথে বিএনপি কর্মীদের বিক্ষোভের জন্য বেষ্টনী তৈরি করে দেয় । একপর্যায়ে রাস্তা পার হয়ে বিএনপির কিছু নেতাকর্মী হাইকমিশন ভবনে ঢুকে পড়ে। হাইকমিশনের এক কর্মকর্তা বলেন, বিএনপি নেতাকর্মীরা শুরু থেকেই আগ্রাসী এবং বেপরোয়া ছিলেন। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে হাইকমিশনের কর্মকর্তা কে এম শামীম রেজা ও আজিজুর রহমানকে বাইরে নিয়োজিত করা হয়। তাদের উদ্দেশ্য করে বিক্ষোভকারীরা গালাগাল এবং নানা হুমকি-ধমকি দিতে থাকেন। একপর্যায়ে হাইকমিশনের কর্মকর্তা শামীম রেজাকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাইকমিশনের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, স্মারকলিপি দেয়ার জন্য বিএনপির একজনকে ভেতরে প্রবেশের অনুমতি দেয়া হয়। কিন্তু পুলিশকে ধাক্কা দিয়ে ওই সময় বিএনপির ১৫ থেকে ২০ জন নেতাকর্মী ভেতরে ঢুকে পড়েন। অভ্যর্থনা কক্ষে রাখা বঙ্গবন্ধুর একটি ছবির ফ্রেম ভেঙ্গে ছবিটি বাইরে নিয়ে যান। বিএনপির লোকজন একটি চেয়ারও ভাংচুর করেন বলে জানান এই কর্মকর্তা। হাইকমিশনের ওই কর্মকর্তা আরও জানান, বিএনপির এই বিক্ষোভ সম্পর্কে ‘ডিপ্লোম্যাটিক পুলিশ’কে আগেভাগে জানিয়ে রাখা হয়েছিল। কিন্তু নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যাপ্ত ছিল না। ঘটনার পর মেট্রোপলিটন পুলিশের স্থানীয় কমান্ডারকে টেলিফোন করা হয়। তিনি হাইকমিশনে এসে দুঃখ প্রকাশ করেন এবং অপরাধীদের আটকের আশ্বাস দেন। যোগাযোগ করা হলে যুক্তরাজ্য বিএনপির সভাপতি এম এ মালেক বলেন, তারা শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ করছিলেন। কিন্তু হাইকমিশনের কর্মকর্তারা সেখানে তাদের ছবি তুলতে যান। গুমের লিস্টে নাম দিয়ে দেয়ার হুমকি দেন। হাইকমিশন তাদের স্মারকলিপি দেয়ার অনুমতি দিচ্ছিল না। যে কারণে নেতাকর্মীরা ক্ষুব্ধ হন।
×