ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

রূপগঞ্জে আওয়ামী লীগ-পুলিশ সংঘর্ষ, নিহত ১ আহত ৫০

প্রকাশিত: ০৬:১১, ৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

রূপগঞ্জে আওয়ামী লীগ-পুলিশ সংঘর্ষ, নিহত ১ আহত ৫০

নিজস্ব সংবাদদাতা, রূপগঞ্জ, ৮ ফেব্রুয়ারি ॥ রূপগঞ্জে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষে সাংবাদিক, পুলিশসহ অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছে। সংঘর্ষে সুমন (৩৭) নামে এক স্বেচ্ছাসেবক লীগ কর্মী নিহত হয়েছেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ৫ শতাধিক রাউন্ড টিয়ারসেল ও গুলি বর্ষণ করে। এ সময় পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। সংঘর্ষের ঘটনায় ৩৫ জনকে আটক করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার দুপুরে উপজেলার হাবিবনগর এলাকার কাঞ্চন-কুড়িল বিশ^রোড সড়কে ঘটে এ সংঘর্ষের ঘটনা। নিহত সুমন মিয়া উপজেলার তারাব পৌরসভার গন্ধর্বপুর এলাকার মনু মিয়ার ছেলে। পুলিশ, প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্র জানায়, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার রায়কে কেন্দ্র করে বিএনপি, জামায়াত-শিবির নাশকতামূলক কর্মকা- করতে পারে। সে জন্য পুলিশকে সহযোগিতা করতে উপজেলার হাবিবনগর এলাকার কাঞ্চন-কুড়িল বিশ^রোড সড়কে স্থানীয় এমপি গোলাম দস্তগীর গাজী (বীর প্রতিক) এর সমর্থিত নেতাকর্মীরা অবস্থান নেয়। একই স্পটে ৫০০ গজের মধ্যে অবস্থান নেয় কায়েতপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম রফিক সমর্থিত নেতাকর্মীরাও। সেখানে রফিক সমর্থিতরা পেন্ডেলও স্থাপন করে। দু’পক্ষের মধ্যে আগে থেকেই বিরোধ চলে আসছিল। একই স্থানে দুটি পক্ষ অবস্থান কেন্দ্র করে সংঘর্ষের আশঙ্কায় জেলা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মুস্তাফিজুর রহমান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) ফারুক আহাম্মেদ ও রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসমাইল হোসেনের নেতৃত্বে পুলিশ সদস্যরা রফিকুল ইসলাম রফিক সমর্থিতদের আধা কিলোমিটার দূরত্ব বজায় রেখে অবস্থান নেয়ার জন্য অনুরোধ করেন। কিন্তু তারা পুলিশের কথা না মেনে সেখানেই অবস্থান নেন। এদিকে, ৫০০ গজের মধ্যে দুই পক্ষের নেতাকর্মীরা মিছিল নিয়ে অবস্থান করায় উভয় পক্ষের মাঝে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে পৌনে ১২টার দিকে কাঞ্চন ব্রিজের দিক থেকে রফিক সমর্থিতরা একটি লাঠি মিছিল নিয়ে আসলে উভয় পক্ষের মধ্যে আরও উত্তেজনার সৃষ্টি হয়ে সংঘর্ষের আশঙ্কা দেখা দেয়। এ সময় পুলিশ উভয় পক্ষকে ধাওয়া করে এবং টিয়ারসেল নিক্ষেপ শুরু করে। শুরু হয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের ত্রিমুখী ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, ইটপাটকেল, টিয়ারসেল নিক্ষেপ ও গুলি। প্রায় দেড় ঘণ্টা ব্যাপী সংঘর্ষে স্বেচ্ছাসেবক লীগ কর্মী সুমন নিহত হন। এছাড়া অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ডিএসবি) ফারুক আহাম্মেদ, রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ইসমাইল হোসেন, ইন্সপেক্টর তদন্ত রফিকুল ইসলাম, পুলিশ সদস্য মজিবুর রহমান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবুল ফাতে মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম, সাংবাদিক আশিকুর রহমান হান্নান, এস এম শাহাদাত হোসেন, সাইফুল ইসলাম, সুজন মিয়া, যুবলীগ নেতা জয়নাল, শামিম, জুয়েল, আমির হোসেন, শামিম, সবুজ, হিরা, কালাম, তারেক, খালেদা, আন্নি, সুলতানা, শারমিন, শিমু, নাজমিন, কহিনুর, শাকিলা, ফাতেমা, জেসমিন, রুনা, তানজিলা, ছনিয়াসহ অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন। দেড় ঘণ্টা এ সংঘর্ষের ঘটনাকে কেন্দ্র করে এশিয়ান হাইওয়ে (বাইপাস) সড়ক ও কাঞ্চন-কুড়িল বিশ^রোড সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। পুরো এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এদিকে, উপজেলা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে উপজেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি তোফাজ্জল হোসেনসহ নেতাকর্মীরা রূপগঞ্জ প্রেসক্লাব কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছে।
×