সংবাদদাতা, নান্দাইল, ময়মনসিংহ, ৮ ফেব্রুয়ারি ॥ ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার শেষ প্রান্তে অবস্থিত অবহেলিত রাজগাতী ইউনিয়ন। এই ইউনিয়ন দিয়ে বয়ে গেছে নরসুন্দার শাখা নদী সুখাইজুড়ি। নদীটিকে কেন্দ্র করে আশপাশে রয়েছে সাতটি গ্রাম। আর সাত গ্রামের নদী পার হওয়ার একমাত্র ভরসা একটি নৌকা। জীবনের ঝুঁিক নিয়ে গ্রামবাসীসহ প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন চলাচল করে। নৌকাডুবির মতো বড় ধরনের দুর্ঘটনাও একাধিকবার ঘটেছে। সুখাইজুড়ি নদীর উত্তরদিকে কুলঘেঁষে অবস্থিত একটি এবতেদায়ি ও দাখিল মাদ্রাসা। তাই প্রতিদিনই শিক্ষার্থীদের মাদ্রাসায় আসতে ও বাড়ি ফিরতে হয় নৌকায়। স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সুখাইজুড়িতে কোন সেতু না থাকায় তাদের দুর্ভোগের শেষ নেই। এতে শিক্ষা, চিকিৎসা ও ব্যবসা-বাণিজ্যসহ বিভিন্ন দিকে পিছিয়ে রয়েছে এ অঞ্চলের মানুষ। মাদ্রাসার উদ্যোগে তৈরি করা একটি নৌকা দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন শিশু, নারী, পুরুষ ও শিক্ষার্থীসহ হাজার হাজার মানুষ চলাচল করছে। স্বাধীনতার কয়েক যুগ পেরিয়ে গেলেও সুখাইজুড়ি নদীর ওপর একটি সেতু নির্মিত না হওয়ায় বিচ্ছিন্ন রয়েছে দরিল্যা, দাসপাড়া, বিলভাদেরা, রাজগাতী, বনাটিসহ আশপাশের ৭টি গ্রামের যোগাযোগ ব্যবস্থা।
হোসাইনিয়া দাখিল মাদ্রাসার সুপার আব্দুর রহিম জানান, প্রতিদিনই মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা ৫ টাকার বিনিময়ে নদী পারাপার হয়। তাই মাদ্রাসার অর্থায়নে একটি নৌকা কিনে দিয়েছি। এখন তাদের পারাপারে টাকা দিতে হয় না। তবে সাধারণ মানুষ ৫ টাকার বিনিময়ে নদী পার হয়। তিনি বলেন, গত বছর ২ বার মাদ্রাসার শিক্ষার্থী নিয়ে নদীতে নৌকাটি ডুবে যায়। তখন কলাগাছের ওপর ভর দিয়ে কোনমতে জীবন বাঁচায় শিক্ষার্থীরা। কয়েক অভিভাবক জানায়, ঝড়বৃষ্টির দিনে দুর্ঘটনার ভয়ে তাদের সন্তানদের মাদ্রাসায় পাঠাতে ভয় পান। তখন স্কুল ও মাদ্রাসায় ছাত্রছাত্রীর উপস্থিতি কমে যায়। রাজগাতী ইউপি চেয়ারম্যান রোকন উদ্দিন বলেন, নদী পারাপারে বছরজুড়ে নৌকাই একমাত্র ভরসা সুখাই। কোন সেতু না থাকায় সকল মৌসুমেই দুর্ভোগ পোহাতে হয় এই এলাকার মানুষকে। এখানে সেতু নির্মাণ হলে এলাকার শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও কর্মজীবী মানুষের ভোগান্তির শেষ হবে। স্থানীয় সংসদ সদস্য মোঃ আনোয়ারুল আবেদিন খান বলেন, সুখাইজুড়ি নদীর ওপর একটি ব্রিজ নির্মাণে দাফতরিক প্রক্রিয়া চলছে।