ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

দু’দলের স্পিনারদেরই সমান চ্যালেঞ্জ ॥ চান্দিমাল

প্রকাশিত: ০৬:২৩, ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

দু’দলের স্পিনারদেরই সমান চ্যালেঞ্জ ॥ চান্দিমাল

স্পোর্টস রিপোর্টার ॥ সাগরিকা টেস্টের আগে নিশ্চিতভাবেই বোঝা যাচ্ছিল স্পিনই খেলবে, স্পিনারদের ভূমিকার সামনে নাজেহাল হবে ব্যাটসম্যানরা। পিচ রিপোর্টেও বলা হয়েছিল তৃতীয় দিনের পর থেকেই সাগরিকার উইকেটে ঘূর্ণি বলের ইন্দ্রজালে বেসামাল হয়ে যাবেন। কিন্তু তেমনটা হয়নি, ব্যাটসম্যানরা রাজত্ব করেছেন। কিন্তু মিরপুর বরাবরই ছিল স্পিনারদের জন্য বন্ধুপ্রতীম। এবারও ম্যাচ শুরুর আগেই উইকেট যেমন শুকনো, খটখটে করে গড়া হয়েছে তাতে নিশ্চিতভাবে বোঝা যাচ্ছে চিরাচরিত নিয়মে এই টেস্টে স্পিনারদের ভূমিকা হবে ভয়াবহ। আর এটিকে উভয় দলের ব্যাটসম্যানের জন্য চ্যালেঞ্জিং বলে দাবি করলেন শ্রীলঙ্কার অধিনায়ক দিনেশ চান্দিমাল। চট্টগ্রাম টেস্টে রানোৎসবে মেতেছিলেন উভয় দলের ব্যাটসম্যানরা। বোলাররা ম্যাচের শেষদিন পর্যন্ত কোন ভূমিকাই রাখতে পারেননি। সেটা নিয়ে লঙ্কানদের ছিল অনেক আক্ষেপ। কারণ, প্রথম ইনিংসে ২০০ রানের লিড নিয়েও স্বাগতিক বাংলাদেশেকে বিপদে ফেলতে পারেনি। বিষয়টি নিয়ে আবার বুধবার সংবাদ সম্মেলনে চান্দিমাল বলেন, ‘প্রথমত এটি ব্যাটসম্যানদের জন্য খুব ভাল পিচ ছিল, কিন্তু বোলারদের জন্য নয়। বোলারদের জন্য ছিল দুঃস্বপ্ন। চট্টগ্রাম টেস্ট শুরুর আগে আমরা ভেবেছিলাম তৃতীয় দিনে কিছু টার্ন থাকবে উইকেটে।’ তবে সাগরিকা টেস্ট ড্র হয়েছে, সেই স্মৃতি ভুলে যেতে চান চান্দিমাল, ‘চট্টগ্রাম থেকে আমাদের ইতিবাচক বিষয়গুলো বের করতে হবে। তারা ৫০০ করার পর আমরা ৭০০ করেছিলাম। এটাই আমাদের জন্য প্লাস পয়েন্ট। যেকোন কন্ডিশনেই এটা সহজ নয়। বোর্ডে ভাল স্কোর তোলা সবসময়ই খুব ভাল ব্যাপার। আর এটাই আমাদের জন্য ইতিবাচক দিক।’ মিরপুরে অবশ্য কন্ডিশনটা অন্যরকমই দেখছেন তিনি। ত্রিদেশীয় সিরিজে যেমন দেখেছেন তারচেয়েও আলাদা মনে হচ্ছে তার কাছে মিরপুরের উইকেট, ‘এখানে কন্ডিশন পুরোপুরিই ভিন্ন। আমরা ত্রিদেশীয় সিরিজে দেখেছি খুব খারাপ ধরনের পিচ। স্পিনারদের জন্য ভাল হলেও ব্যাটসম্যানদের জন্য ভাল ছিল না। ব্যাটসম্যানদের জন্য চ্যালেঞ্জিং ছিল। এখন এটা দেখে পুরোপুরি শুকনো সমতল মনে হচ্ছে। এই খেলায় স্পিনাররা কিছু করে দেখাবে।’ স্পিন ট্র্যাক অপেক্ষা করছে মিরপুরে। আর সেজন্য হয়তো মনে মনে খুশিই লঙ্কানরা। কারণ, অভিজ্ঞ রঙ্গনা হেরাথের সঙ্গে আছেন পরিক্ষীত দিলরুয়ান পেরেরা এবং লক্ষণ সান্দাকান। এ বিষয়ে চান্দিমাল বলেন, ‘সান্দাকান আমাদের উইকেট শিকারী বোলার। যদি এটা খুব ভাল পিচ হয় রঙ্গনা ও দিলরুয়ান ধরে রাখার দায়িত্ব পালন করতে পারবে। সান্দাকান সেটা পারে না। তাকে আমি আনি উইকেট নেয়ার জন্য- সেটাই তার দায়িত্ব। আমরা জানি যে বাংলাদেশী ব্যাটসম্যানরা তাকে তেমন ভালভাবে খেলতে পারে না।’ প্রতিপক্ষ বাংলাদেশও স্পিন ঘাঁটি হিসেবে স্বীকৃত। আর দেশের মাটিতে সচরাচরই বাংলাদেশ ভয়ঙ্কর। এ কারণে স্পিনিং ট্র্যাকে উভয় দলের জন্যই চ্যালেঞ্জ দেখছেন চান্দিমাল, ‘তারা সত্যিই খুব ভাল, বিশেষ করে নিজেদের মাটিতে। তারা এখানে ভাল নৈপুণ্য দেখিয়েছে। আমরা কখনও তাদের খাটো করে দেখিনি, তারা খুব ভাল ক্রিকেট খেলছে। ওয়ানডের তুলনায় আমাদের টেস্ট দলে বেশ কিছু অভিজ্ঞ খেলোয়াড় আছে। এখনও আমাদের জন্য চ্যালেঞ্জ আছে। কিন্তু তাদের খেলোয়াড় ও কন্ডিশন অনুসারে আমাদের কিছু ভাল পরিকল্পনা আছে। আমাদের সেগুলোর খুব ভালভাবে প্রয়োগ ঘটাতে হবে। যখন পিচের দিকে লক্ষ্য করবেন, তখন বুঝবেন যে এখানে ফলাফল আসবে। পিচটা শুকনো দেখাচ্ছে। স্পিনাররা অবশ্যই এখানে ভাল করবে। এটা উভয় দলের জন্যই চ্যালেঞ্জিং। চট্টগ্রামের মতো এখানে হবে না।’ সর্বশেষ দুই টেস্টের মধ্যে একটি জয় বাংলাদেশের। কলম্বোয় গত বছর নিজেদের শততম টেস্টে (সিরিজের দ্বিতীয়) জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ। আর চট্টগ্রাম টেস্টে জয়-পরাজয় কিছু হয়নি। মিরপুরে কি এবার সেই প্রতিশোধ নেয়ার দিকে মনোযোগ লঙ্কানদের? চান্দিমাল বললেন, ‘আমরা কোন দলের ওপর প্রতিশোধ তুলতে চাই না। আমাদের প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক ক্রিকেট খেলার প্রয়োজন, সেটাই আমাদের মূল লক্ষ্য। যখন আপনি ভাল ক্রিকেট খেলবেন, তখন ফলটা আপনার পথেই আসবে।’ আর সেজন্য চট্টগ্রাম টেস্টে উভয় ইনিংসে শতক হাঁকানো মুমিনুল হক সৌরভকে নিয়ে বিশেষ পরিকল্পনাও আছে বলে জানালেন চান্দিমাল। মুমিনুলের ভূয়সী প্রশংসা করেন চান্দিমাল। এ কারণেই এবার তাকে দ্রুত আউট করার জন্য মনোযোগী লঙ্কানরা। সেজন্য যথেষ্ট রসদও আছে সেই দাবিও করেছেন তিনি।
×