ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

আমার ভাইয়ের রক্তের রাঙানো

প্রকাশিত: ০৬:০২, ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

আমার ভাইয়ের রক্তের রাঙানো

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাংলা ভাষার মর্যাদা সমুন্নত রাখার পক্ষে জাতীয় সংবাদপত্রগুলোর পাশাপাশি দেশের আঞ্চলিক সংবাদপত্র, সাময়িকী, সাহিত্য পত্রিকাগুলোও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিল। ওই সময়ে সিলেট থেকে প্রকাশিত হতো মাসিক ‘আল ইসলাহ।’ বাংলা ১৩৩৯ সালে (১৯৩২) সালে অগ্রহায়ণ মাসে এর প্রথম সংখ্যা বের হয়। পত্রিকাটির প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক ছিলেন মুহম্মদ নুরুল হক। রাষ্ট্রভাষার প্রশ্নে এই পত্রিকাটি প্রথম সম্পাদকীয় প্রকাশ করে ১৩৫৪ বঙ্গাব্দের (আগস্ট ১৯৪৭) ভাদ্র সংখ্যায়। ওই সম্পাদকীয়তে মন্তব্য করা হয় ‘পূর্ব পাকিস্তানের জনসাধারণ বাঙালী এবং ইহার মাতৃভাষা ও সাহিত্য বাংলা। সুতরাং পূর্ব পাকিস্তানের রাষ্ট্রভাষা বাংলা হওয়ার পক্ষে আমাদের মতো থাকা স্বাভাবিক। রাষ্ট্রভাষা বাংলা হওয়ার পক্ষে পূর্ব পাকিস্তানের সাহিত্যিক গোষ্ঠী যে মত দিয়েছেন তাহা আমরা বিশেষভাবে লক্ষ্য করিয়াছি এবং আমরাও রাষ্ট্রভাষা বাংলা হওয়ার পক্ষে মত দিয়েছি। বাংলার পরিবর্তে অন্য কোন ভাষা আমাদের রাষ্ট্রভাষা হোক- ইহা আমরা কখনও সমর্থন করিতে পারি না। ওই সময় চট্টগ্রাম থেকে প্রকাশিত সাময়িকীতেও বাংলার ভাষার পক্ষে সোচ্চার ভূমিকা পালন করা হয়। ‘সীমান্ত’ নামে সাময়িকী পত্রিকাটি প্রথম প্রকাশিত হয় নবেম্বর ১৯৪৭ সালে। পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন মাহবুব আলম চৌধুরী। সহযোগী সম্পাদক ছিলেন সুচরিত চৌধুরী। সীমান্ত পত্রিকার ৪৭ সালের ডিসেম্বর সংখ্যায় রাষ্ট্রভাষা বাংলার স্বপক্ষে ‘রাষ্ট্রভাষা’ শীর্ষক সম্পাদকীয় প্রকাশিত হয়। এটা ছিল চট্টগ্রাম থেকে প্রকাশিত সৃজনশীল সাময়িক পত্রিকায় প্রকাশিত প্রথম সম্পাদকীয়। এতে উল্লেখ করা হয় ‘ভাষার দিক দিয়ে যদি বিচার করা যায় তবে বাংলাভাষা অপাঙতেয় নয়। বরং পৃথিবীর মধ্যে অন্যতম শ্রেষ্ঠ ভাষা বলে পরিচিতি লাভ করেছে। এর সাহিত্য পৃথিবীর কোন সাহিত্যের দরবারে স্বচ্ছন্দে আসন করে নিতে পারে। যদি লোক গণনার ভিত্তিতেও এতে বিচার করা যায় পৃথিবীর কম দেশই আছে যেখানে একটি ভাষাই এত লোক কথা বলে। কিন্তু এগুলোই রাষ্ট্রের ভাষার বিচার্য হবে কেন? রাষ্ট্র যদি জনসাধারণের হয় তবে জনগণের ভাষাই স্থান পাবে। তা সে যত অপাঙতেয় বিচার্য হোকনা কেন, কারণ এই ভাষাতেই রাষ্ট্রের মঙ্গল নিহিত।
×