রাবি সংবাদদাতা ॥ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) শিবির ক্যাডারদের নৃশংসতার শিকার ছাত্রলীগ কর্মী ফারুক হোসেন হত্যাকা-ের আট বছর পেরিয়ে গেলেও বিচার কাজ শেষ না হওয়ায় এখনও শাস্তি হয়নি হত্যাকারী শিবির ক্যাডারদের। মামলার অধিকাংশ আসামি পলাতক থাকায় থেমে আছে মামলার বিচারিক কার্যক্রম। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে দায়ী শিবির ক্যাডারদের নাম উঠে এলেও তাদের বিরুদ্ধে কোন শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। এদিকে আট বছরেও ফারুক হত্যা মামলার বিচার কাজ শেষ না হওয়ায় হতাশ তার স্বজনরা। পরিবারের একমাত্র সন্তানের মৃত্যুর পর অসহায় ফারুকের পরিবারকে দেখারও কেউ নেই। নিহত ফারুকের বোন আসমা আক্তার বলেন, আট বছর পরও ভাই হত্যার বিচার না পেয়ে আমরা হতাশ। আমাদের পরিবারের এমন অবস্থা যে মামলার খোঁজ নেয়ার মতো কেউ নেই। ভাইয়ের মৃত্যুর পর বাবা অসুস্থ হয়ে আছেন, হাঁটাচলা করতে পারেন না। টাকার অভাবে চিকিৎসাও করাতে পারছি না। ২০১০ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি আবাসিক হল দখলকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালায় শিবিরের ক্যাডাররা। তারা রাবি ছাত্রলীগের কর্মী ও গণিত বিভাগের মেধাবী শিক্ষার্থী ফারুক হোসেনকে নির্মমভাবে খুন করে লাশ শাহ মখদুম হলের পেছনের একটি ম্যানহোলে ফেলে রাখে। একই রাতে শিবির ক্যাডাররা ছাত্রলীগ কর্মী সাইফুর রহমান বাদশা, ফিরোজ আরিফুজ্জামান ও রুহুল আমীন লেলিনের হাত ও পায়ের রগ কেটে দেয়। এরপর থেকে তারা পঙ্গু অবস্থায় দিন কাটাচ্ছেন। আরেক ছাত্রলীগ কর্মী আসাদুর রহমানের মাথায় হাতুড়ি দিয়ে আঘাত করে শিবির ক্যাডাররা। এ ঘটনার পর থেকে তিনি অন্ধ।
জানা যায়, ঘটনার পরদিন রাবি ছাত্রলীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মাজেদুল ইসলাম অপু বাদী হয়ে শিবিরের ৩৫ নেতাকর্মীর নাম উল্লেখ করে নগরীর মতিহার থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার পর সন্দেহভাজন হিসেবে জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতা আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ, মতিউর রহমান নিজামী, দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী, মহানগর জামায়াতে ইসলামীর আমির আতাউর রহমান, শিবিরের রাবি শাখার তৎকালীন সভাপতি শামসুল আলম ওরফে গোলাপ, বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব আব্দুল লতিফ হল শাখা শিবিরের সভাপতি হাসমত আলী, শহীদ হবিবুর রহমান হল শিবিরের সভাপতি রাইজুল ইসলাম, মার্কেটিং বিভাগের ছাত্র ও শিবিরকর্মী রুহুল আমিন এবং শিবির ক্যাডার বাপ্পীসহ ২৫ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: