ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

আদমদীঘিতে ছাত্রের হাত ভেঙ্গে দিল শিক্ষক

প্রকাশিত: ০৪:২৮, ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

আদমদীঘিতে ছাত্রের হাত ভেঙ্গে দিল শিক্ষক

নিজস্ব সংবাদদাতা সান্তাহার থেকে জানান, বগুড়ার আদমদীঘি উপজেলা সদরের এক বিএনপি নেতা প্রতিষ্ঠিত অবৈধ স্কুলের শিক্ষক শাসন করার নামে পিটিয়ে অষ্টম শ্রেণীর নিরপরাধ এক কৃতি ছাত্রের হাত ভেঙ্গে দিয়েছেন বলে অভিযোগ মিলেছে। শিক্ষক শুধু পিটিয়ে হাত ভেঙ্গে দিয়ে ক্ষ্যান্ত থাকেনি। তার এই নির্মম ও ন্যক্কারজনক নির্যাতনের ঘটনা কাউকে না জানানোর জন্য হুমকিধমকি দিয়ে ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টাও করেছে। নির্যাতিত ওই ছাত্র উপজেলার ছোট আখিড়া গ্রামের নুরে আলমের ছেলে। আর নির্যাতনকারী ওই স্কুলের গণিত বিষয়ক শিক্ষক মামুনুর রশিদ। মঙ্গলবার সন্ধা রাতে সরেজমিন দেখা যায় ডান হাতে ব্যান্ডেজ করা অবস্থায় বিছানায় শুয়ে কাতরাচ্ছে কৃতি ছাত্র আরাফাত রহমান। সাংবাদিক আসার খবরে সে বিছানায় শোয়া অবস্থা থেকে উঠে বসে। ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে সে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে। সান্ত¡না দেয়ার পর সে বলেÑঘটনার দিন অনুমান ১৪ জানুয়ারি বেলা ১১টার দিকে তাদের ক্লাসের কয়েক ছাত্র হট্টগোল করছিল। এ সময় গণিতের স্যার মামুনুর রশিদ ক্লাসে প্রবেশ করে। কিছু বুঝে ওঠার আগে স্যার আমার হাত ধরে মোচড় দেয়। এক পর্যায়ে বেধড়ক ঘুষি মারতে থাকেন। এতে আমি মেঝেতে পড়ে যাই। এর পরও সে মারপিট অব্যাহত রাখেন। ঘটনার সময় আমাকে রক্ষার জন্য সহপাঠি নাদিম হোসেন এগিয়ে এলে তিনি তাকেও ব্যাপক মারপিট করে। এর পর ওই পাষ- শিক্ষক ঘটনাটি বাড়িতে গিয়ে কাউকে না বলার জন্য শাসায় এবং ঘটনা জানালে আমার অবস্থা আরও খারাপ করে দেবে বলে হুমকিধমকি দেয়। আমি বাড়িতে ফিরে মা-বাবাকে ক্লাসের বেঞ্চ থেকে পড়ে গিয়ে ব্যথা পেয়েছি বলে মিথ্যা কথা বলি। এভাবে কেটে যায় প্রায় ১২ দিন। তীব্র ব্যথা ও শিক্ষকের ভয়ে স্কুল যাওয়া বন্ধ। এক সময় ব্যথা বেড়ে অসহ্য হতে থাকলে আমি বাধ্য হয়ে ২৬ জানুয়ারি সত্য ঘটনাটি মাকে খুলে বলি। এর পরদিন বাবা উন্নত চিকিৎসার জন্য আমাকে বগুড়ায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যায়। ওই চিকিৎসক জানায়, আমার হাত ভেঙ্গে গেছে। আমার বাবা ঘটনাটি স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা প্রধান শিক্ষক উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বুলবুল ফারুককে জানালে তিনি ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান। কিন্তু কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি এবং আমাকে দেখতে পর্যন্ত আসেননি। এ বিষয়ে অভিযুক্ত শিক্ষক মামুনুর রশিদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমি আরাফাতকে সেভাবে আঘাত করতে চাইনি। হঠাৎ করেই জোরে লেগে গেছে। এ জন্য আমি দুঃখিত।
×