ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

আন্তঃসীমান্ত বিদ্যুত বিক্রয় নীতি চূড়ান্ত করেনি ভারত

ভারত থেকে বিদ্যুত ক্রয় দরপত্র খোলায় জটিলতা

প্রকাশিত: ০৪:১৫, ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

ভারত থেকে বিদ্যুত ক্রয় দরপত্র খোলায় জটিলতা

রশিদ মামুন ॥ আন্তঃসীমান্ত বিদ্যুত বিক্রয় নীতি বা ক্রস বর্ডার ট্রেড অব ইলেক্ট্রিসিটি ট্রেড এর ফ্রেমওয়ার্ক চূড়ান্ত না হওয়ায় ভারত থেকে বিদ্যুত আমদানির দরপত্র উন্মুক্ত করা যাচ্ছে না। ভারতীয় পক্ষের অনুরোধের প্রেক্ষিতে দেশটির খোলা বাজার থেকে কেনা ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের ক্রয় চুক্তি আরও একবার বৃদ্ধি করা হচ্ছে। বিদ্যুত বিভাগ বলছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইতোমধ্যে আগের ক্রয় চুক্তির মেয়াদ আরও এক দফা বৃদ্ধির প্রস্তাব অনুমোদন করেছেন। ভারতের সরকারী খাতের পাশাপাশি বেসরকারী খাত থেকে ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুত আমদানি করা হয়। এই বিদ্যুত পাওয়ার ট্রেডিং কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া লিমিডেট (পিটিসি) বাংলাদেশকে সরবরাহ করে। এ জন্য পিটিসি এবং বাংলাদেশ বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) এর মধ্যে ২০১৩ সালের ১৪ নবেম্বর একটি পিপিএ সই হয়। যার মেয়াদ গত বছর ৩১ জুলাই শেষ হয়ে গেছে। ভারত থেকে বিদ্যুত আমদানির জন্য বাংলাদেশ ইতোমধ্যে দরপত্র আহ্বান করে। কিন্তু ভারত বলছে ক্রস বর্ডার ট্রেড অব ইলেক্ট্রিসিটি ট্রেড এর ফ্রেমওয়ার্ক এখন তারা চূড়ান্ত করতে পারেনি। সঙ্গত কারণে এখনই এই দরপত্র উন্মুক্ত করার ক্ষেত্রে তাদের সম্মতি নেই। বিদ্যুত বিভাগ বলছে, বাংলাদেশ আরও ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত ভারতের খোলা বাজার থেকে আমদানি করতে চায়। ইতোমধ্যে ভারত এ বিষয়ে সম্মতি দিয়েছে। এই লক্ষ্যে কুষ্টিয়ার ভেড়ামারাতে ৫০০ মেগওয়াট ক্ষমতার আরও একটি ব্যাক টু ব্যাক সাব স্টেশন নির্মাণ করা হচ্ছে। এখন নীতিমালা চূড়ান্ত করতে ভারত দেরি করলে ওই ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত আমদানিও পিছিয়ে যেতে পারে। বিদ্যুত বিভাগ সূত্র জানায়, ভারতের সরকারী খাত থেকে (২৫০ মেগাওয়াট) প্রতি ইউনিট বিদ্যুত আমদানি হচ্ছে দুই টাকা ৭৮ পয়সায়। একই সময়ে ভারত থেকে আমদানি করা আরও ২৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুত আমদানি হচ্ছে ৬ টাকা ১৪২৬ টাকায়। এর বাইরে ত্রিপুরার পালাটানা বিদ্যুত কেন্দ্র থেকে ১৬০ মেগাওয়াট বিদ্যুত আমদানি হচ্ছে ৬ দশমিক ১৩২৪ টাকায়। সরকার বলছে প্রতি বছর দেশে ১০ ভাগ হারে বিদ্যুতের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। পাওয়ার সিস্টেম মাস্টারপ্ল্যান অনুযায়ী ২০২১ সালের মধ্যে দেশে ২৪ হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুত প্রয়োজন হবে। সরকার চাহিদা সামাল দিতে দেশী বিদেশী খাত থেকে বিদ্যুতের সংস্থান করছে। এই সময়ের মধ্যে ভারত থেকে আরও তিন হাজার হাজার ১০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত আমদানির প্রক্রিয়া চলছে। এর মধ্যে ৫০০ মেগাওয়াট চলতি বছর আসার কথা। বিহার এবং আসামকে সংযুক্ত করা গ্রিড লাইন দিয়ে আরও এক হাজার মেগাওয়াট বিদ্যুত পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। এ ছাড়া ভারতের মধ্যে আদানির স্থাপন করা বিদ্যুত কেন্দ্র থেকে আরও এক হাজার ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত আমদানি করা হবে। ইতোমধ্যে পিডিবির সঙ্গে আদানী পাওয়ার কোম্পানির এ সংক্রান্ত চুক্তিসই হয়েছে। আদানীর কাছ থেকে প্রতি ইউনিট বিদ্যুত আট দশমিক ৬১২৭ সেন্ট বা ৬ টাকা ৯৩ পয়সায় কেনা হবে বলে জানা গেছে। বিদ্যুত বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, অতীতে এত বেশি পরিমাণ বিদ্যুত ভারত প্রতিবেশী কোন দেশে রফতানি করেনি। এখন ভারত এই বিদ্যুত বিক্রিতে কর বসাতে চায়। বাংলাদেশ চাইছে করমুক্তভাবে বিদ্যুত আমদানি করতে।
×