ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

৫ দিনব্যাপী ‘ডিজিটাল আইসিটি ফেয়ার-২০১৮’ শুরু

এ মাসেই নেপাল ভুটানে দেশের তৈরি কম্পিউটার রফতানি

প্রকাশিত: ০৪:০৫, ৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

এ মাসেই নেপাল ভুটানে দেশের তৈরি কম্পিউটার রফতানি

অর্থনৈতিক রিপোর্টার ॥ এই মাসেই নেপাল ও ভুটানে দেশের তৈরি কম্পিউটার রফতানি করা হবে বলে জানিয়েছেন ডাক টেলিযোগাযোগ ও প্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তফা জাব্বার। তিনি বলেন, আমরা এখন কম্পিউটার আমদানিকারক দেশ থেকে উৎপাদনকারী দেশ হয়েছি। তবে হতাশাজনক হলো আমাদের ইন্টারনেট রয়েছে ১৭০০ জিবিপিএস। আর আমরা ব্যবহার করতে পারছি মাত্র ৫৬০ জিবিপিএস। তাই আমরা ২০১৮ সালের মধ্যে দেশের সকল এলাকায় উচ্চ গতির ইন্টারনেট পৌঁছে দিতে চাই। বুধবার সকাল ১১টায় দেশের সর্ববৃহত্তম আইটি মার্কেট কম্পিউটার সিটি সেন্টারে ৫ দিনব্যাপী ‘ডিজিটাল আইসিটি ফেয়ার-২০১৮’ উদ্বোধন করা হয়েছে। মেলার উদ্বোধন করেন, ডাক টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। নবম বারের মতো আয়োজিত ডিজিটাল আইসিটি ফেয়ারের এবারের প্রতিপাদ্য বিষয়ঃ ডিজিটাল লিটারেসি ফর এভরিওয়ান। প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত মেলা চলবে। মেলার সমাপনী আগামী ১১ ফেব্রুয়ারি। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মোস্তাফা জব্বার বলেন, ‘দেশের কম্পিউটার বাজার অনেক বড় হয়েছে। দেশ পরিবর্তন হয়েছে। একটা সময় দেশে প্রযুক্তি পণ্য আসতে সময় লাগতো, এখন আর সময় লাগে না। মানুষ দ্রুত প্রযুক্তি পণ্যে হাতে পাচ্ছে। বহির্বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে সর্বশেষ প্রযুক্তি পণ্যে এখন বাংলাদেশে পাওয়া যাচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘৫৬০ জিবিপিএস ইন্টারনেট বর্তমানে ব্যবহার করা হচ্ছে। আমাদের ইন্টারনেট রয়েছে ১৭০০ জিবিপিএস। আমরা ২০১৮ সালের মধ্যে দেশের সকল এলাকায় উচ্চ গতির ইন্টারনেট পৌঁছে দিতে চাই। আমরা কম্পিউটার আমদানিকারক দেশ থেকে উৎপাদনকারী দেশ হয়েছি। আশার কথা হলো, আমরা এই মাসেই নেপাল ও ভুটানে দেশের তৈরি কম্পিউটার রফতানি করব।’ অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তা ছিলেন মুক্তিযুদ্ধকালীন ঢাকা জেলা কমান্ডার ও সাবেক সাংসদ এবং বৃহত্তর এলিফ্যান্টরোড দোকান মালিক সমিতির প্রধান উপদেষ্টা মোস্তফা মহসীন মন্টু। তিনি বলেন, ‘মোবাইলের মাধ্যমে হাতের মুঠোয় বিশ্বকে পাচ্ছি। মাঝি, রিক্সাচালক, কৃষক সবাই এখন মোবাইল ব্যবহার করে তাদের প্রয়োজনীয় কাজ করতে পারছে। ইন্টারনেটের অপব্যবহার রোধ করতে হবে। ইন্টারনেটের যেমন ভাল ব্যবহার আছে তেমন এর অপব্যবহার রয়েছে। এই সেক্টরকে বিকাশমান করতে সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন মেলার আহ্বায়ক ও কম্পিউটার সিটি সেন্টারের সভাপতি তৌফিক এহ্সোন। সভাপতির বক্তব্যে তৌফিক এহ্সোন বলেন, ‘বর্তমান সরকার তথ্যপ্রযুক্তি খাতকে অগ্রাধিকার খাত হিসেবে ঘোষণা করেছে। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে বাজেটে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে বরাদ্দ বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি। এই বরাদ্দ গত বছরের তুলনায় ২ হাজার ১৩৯ কোট টাকা বেশি। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলমান ধারা অব্যাহত রাখা গেলে ২০১৮ সালে রফতানি ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং ২০২১ সালে রফতানি ৫ বিলিয়ন ডলারের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন সম্ভব হবে।’ তিনি আরও বলেন, ‘২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নত দেশের কাতারে যাওয়ার যে স্বপ্ন দেখছে তার জন্য ডিজিটাল লিটারেসির বিকল্প নেই। আধুনিক ও ডিজিটাল বাংলাদেশ গঠনে এ মেলার গুরুত্ব অত্যাধিক। দেশের আর্থ-সামাজিক অগ্রগতি ও অবকাঠামোগত উন্নয়নে এ ধরনের মেলা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে।’ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষাবিদ ও ইউনিভার্সিটি অব এশিয়া প্যাসিফিকের উপাচার্য অধ্যাপক ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী, এফবিসিসিআই এর সভাপতি শফিউল ইসলাম (মহিউদ্দিন), বাংলাদেশ কম্পিউটার সমিতির সভাপতি আলী আশফাক, বাংলাদেশ দোকান মালিক সমিতির চেয়ারম্যান মোঃ হেলাল উদ্দিন প্রমুখ। মেলায় বিশ্বের অত্যাধুনিক প্রযুক্তি পণ্যসমূহ সুলভ মূল্যে পাওয়া যাবে। প্রযুক্তি পণ্যে রয়েছে মূল্যছাড় ও উপহার। মেলায় বিশেষ আয়োজন হিসেবে থাকছে- শিশুদের চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, গেমিং জোন এবং আকর্ষণীয় নানা আয়োজন। এ ছাড়াও মেলা চলাকালীন প্রবেশ টিকেটের ওপর র‌্যাফেল ড্র অনুষ্ঠিত হবে। মেলার প্রবেশ টিকেটের মূল্য রাখা হয়েছে দশ টাকা মাত্র। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকদের জন্য মেলায় প্রবেশ উন্মুক্ত রাখা হয়েছে।
×