ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

সংস্কৃতি সংবাদ

গানে ও আলোচনায় শিল্পী শাম্মী আক্তার স্মরণ

প্রকাশিত: ০৫:৫১, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

গানে ও আলোচনায় শিল্পী শাম্মী আক্তার স্মরণ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ চলে যায় শিল্পী, রয়ে যায় তার কীর্তি। শ্রোতার হৃদয় জয় করা তেমনই এক কণ্ঠশিল্পী শাম্মী আক্তার। তার গাওয়া ‘ঢাকা শহর আইসা আমার আশা ফুরাইছে’ কিংবা ‘আমি যেমন আছি তেমন রব’ গানের সুর আজও দোলা দেয় সুররসিকের অন্তরে। তাই শরীরী অস্তিত্ব না থাকলেও আপন সৃষ্টির ঐশ্বর্যে শিল্পীর হাজির হন অনুরাগী ও শুভাকাক্সক্ষীর হৃদয় বন্দরে। মঙ্গলবার এক স্মরণসন্ধ্যায় নন্দিত এই কণ্ঠশিল্পী তেমনভাবেই উঠে এলেন গানের সুরে ও বক্তার আলোচনায়। বিশিষ্টজনের কথন ও সঙ্গীতশিল্পীর গানের সুরে জানানো হলো শ্রদ্ধাঞ্জলি। শিল্পকলা একাডেমির সঙ্গীত ও নৃত্যশালা মিলনায়তনে এ স্মরণানুষ্ঠানের আয়োজন করে বাংলাদেশ সংগীত সংগঠন সমন্বয় পরিষদ। গান ও কথায় সাজানো হয় শিল্পীকে স্মরণের আয়োজন। অনুষ্ঠানের শুরুতেই শাম্মী আক্তারকে শ্রদ্ধা জানিয়ে পালন করা হয় এক মিনিটের নীরবতা। এরপর অতুলপ্রসাদ সেনকে আশ্রয় মাহমুদ সেলিম গেয়ে শোনানÑ আমি বাঁধিব তোমার তীরে তরণী আমার ...। স্মৃতিচারণ ও স্মরণগানের আয়োজনে শিল্পীর বর্ণিল সঙ্গীত জীবন নিয়ে কথা বলেন কবি আসাদ চৌধুরী, গীতিকবি মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান, সঙ্গীত পরিচালক ও সুরকার শেখ সাদী খান এবং শাম্মী আক্তারের জীবনসঙ্গী কণ্ঠশিল্পী আকরামুল ইসলাম। রফিকুল আলম, সুবীর নন্দী, মাহমুদ সেলিম প্রমুখ। কণ্ঠশিল্পী তপন মাহমুদের সভাপতিত্বে স্বাগত বক্তব্য দেন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিৎ রায়। শাম্মী আক্তারকে দেশের সঙ্গীতাঙ্গনের প্রতিনিধিত্বকারী শিল্পী উল্লেখ করে মোহাম্মদ রফিকউজ্জামান বলেন, আমার দৃষ্টিভঙ্গিতে ফেরদৌসী রহমান, কনকচাপা ও শাম্মী আক্তারের মতো শিল্পীরা দেশের সঙ্গীত ভুবনের সম্ভ্রম রক্ষায় কাজ করেছে। শাম্মী আক্তারের মতো শিল্পীরা গান দেখাতে নয়, শোনাতে ভালবাসতো। তার কণ্ঠস্বরটিও ছিল একেবারে স্বতন্ত্র। যেসব শিল্পীদের নবীন প্রজন্মের শিল্পীরা সম্মান জানাতে পারেÑতেমন মাপেরই এক কণ্ঠশিল্পী শাম্মী আক্তার। অন্যদিকে এই শিল্পী ছিলেন একই আত্মমর্যাদাবোধসম্পন্ন এবং অপরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। ভেতরে কোন লোভ ছিল না। এত নির্লোভ শিল্পী আমি খুব কম দেখেছি। এ কারণে ওর প্রতি আমার রাগও হয়। কারণ, শিল্পী হিসেবে যে স্থানের অবস্থান করার সেই স্থানটুকু সে আদায় করতে পারেনি কিংবা আমরা দিতে ব্যর্থ হয়েছি। বিশ্বজিৎ রায় বলেন, দারুণ পরিচ্ছন্ন ইমেজের এক শিল্পী ছিলেন শাম্মী আক্তার। তার মুখে কখনো কটু কথা শুনিনি। স্বভাব ও আচরণÑসবকিছু মিলিয়েই তিনি ছিলেন একজন পরিপূর্ণ শিল্পী। কথার ফাঁকে পরিবেশিত হয়েছে গান। ‘ফাগুন এলেই পাখি ডাকে’ শিরোনামের সঙ্গীত পরিবেশন করেন ঐশিকা নদী। শামীমা পারভীন শিমুর গাওয়া গানের শিরোনাম ছিল ‘কানে আমার ঝুমকো’ ও ‘মনে বড় আশা ছিল’। ইফফাত আরা নার্গিস গেয়েছেন ‘আমি বৃষ্টিতে ভেজা রজনীগন্ধা’ ও ‘মনে হয় হাজার বছর ধরে’। আলম আরা মিনুর কণ্ঠে গীত হয় ‘ভালবাসলেও সবার সঙ্গে’, ‘আমার বাউল মনের একতারাটা’ ও ‘এই বাংলার মাটিতে’। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন হাসান মাহমুদ। আলিয়ঁসে যৌথ চিত্রকর্ম প্রদর্শনী ॥ আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দো ঢাকার গ্যালারি জুমে মঙ্গলবার থেকে শুরু হলো প্রসারিত শীর্ষক যৌথ চিত্রকর্ম প্রদর্শনী। এদিন বিকেলে প্রধান অতিথি হিসেবে প্রদর্শনী উদ্বোধন করেন বিশিষ্ট শিল্পী সমরজিৎ রায় চৌধুরী। সভাপতিত্ব করেন আলিয়ঁস ফ্রঁসেজ দো ঢাকার পরিচালক ব্রুণো প্লাস। ইউনিভার্সিটি অফ ডেভেলপমেন্ট অল্টারনেটিভ (ইউডা)র চারুকলা বিভাগের ছাত্র-ছাত্রীরা ২০১৭ সালের সেপ্টেম্বর মাসে একটি কর্মশালায় আয়েজন করে। এই কর্মশালায় অংশগ্রহণকারী শিল্পীদের আঁকা ছবি দিয়ে সাজানো হয়েছে এ প্রদর্শনী। সেই সুবাদে প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণকারী শিল্পীরা হলেন এস এম এহসান, কুন্তল বাড়ৈ, দিলরুবা শারমিন রুমকি, নয়ন ত্রিপুরা, মাহমুদা আহমেদ ছোটন, বাপ্পী লিঙ্কন রায়, সুমন বিশ্বাস, রাজিন মোস্তফা দীপ্র, মেধবী সুলতানা ও সাজিয়া রহমান সন্ধ্যা। প্রদর্শনীতে ঠাঁই পেয়েছে ৩৩টি চিত্রকর্ম। এটিই চলবে ২০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। সোমবার থেকে বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টা থেকে রাত ৯টা এবং শুক্র ও শনিবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা এবং বিকেল ৫টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত প্রদর্শনীটি খোলা থাকবে। রবিবার সাপ্তাহিক বন্ধ। প্রদর্শনীটি সবার জন্য উন্মুক্ত।
×