ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

সংসদে আলোচনা

বিএনপি নেত্রী এখন পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার ষড়যন্ত্র করছেন

প্রকাশিত: ০৫:৪৭, ৭ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

বিএনপি নেত্রী এখন পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার ষড়যন্ত্র করছেন

সংসদ রিপোর্টার ॥ রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে সংসদ সদস্যরা বলেছেন, নির্বাচনে জিততে পারবেন না বুঝতে পেরেই বিএনপি নেত্রী এখন পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার ষড়যন্ত্র করছেন। কিন্তু যে নেত্রী (খালেদা জিয়া) এতিমের টাকা মেরে খান, তাকে দেশের মানুষ আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না। তাই আগামী নির্বাচনে স্বাধীনতাবিরোধী, অগ্নিসন্ত্রাসী এবং সাম্প্রদায়িক অপগোষ্ঠীকে আবারও পরাজিত করে রাজনীতি থেকে বিতাড়িত করতে হবে। স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ও আগে ডেপুটি স্পীকার এ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়ার সভাপতিত্বে মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর আলোচনায় অংশ নেন সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডাঃ আ ফ ম রুহুল হক, সরকারী দলের সামশুল হক, সাগুফতা ইয়াসমীন এমিলি, এ কে এম ফজলুল হক, শফিকুল ইসলাম শিমুল, আবুল কালাম, এ্যাডভোকেট নাভানা আকতার, রেজাউল হক চৌধুরী, জাসদের বেগম শিরীন আখতার, জাতীয় পার্টির মুহাম্মদ আলতাফ আলী ও মোঃ সেলিম উদ্দিন। আলোচনায় অংশ নেন সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডাঃ আ ফ ম রুহুল হক বলেন, গত ৯ বছরে বর্তমান সরকারের দু’মেয়াদে দেশের চেহারাই পাল্টে গেছে। দেশের এমন কোন স্থান নেই যেখানে উন্নয়ন-অগ্রগতি হয়নি। বর্তমান সরকারের আমলে স্বাস্থ্য খাতে ব্যাপক উন্নয়ন ঘটলেও একটা দুর্বলতা থেকেই যাচ্ছে। বিপুল চিকিৎসক নিয়োগ এবং পদোন্নতি দেয়া হলেও শহর ছেড়ে ডাক্তাররা গ্রামে যেতে চান না। সে কারণে স্বাস্থ্য খাতকে বিকেন্দ্রীকরণের বিষয়টি নিয়ে এখনই ভাবতে হবে। জাসদের সাধারণ সম্পাদক বেগম শিরীন আখতার বলেন, ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় নির্বাচন শুধু গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতার নির্বাচন নয়, এই নির্বাচন যারা দেশের স্বাধীনতায় বিশ্বাস করে না, ২৫ মার্চ গণহত্যা মানে না, সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীকে লালন-পালন করে তাদের আবারও পরাজিত করে রাজনীতি থেকে বিতাড়িত করার বড় চ্যালেঞ্জ। তাই আর কোন সময় নষ্ট নয়, মুক্তিযুদ্ধের পক্ষ থেকে ঐক্যবদ্ধ করে নির্বাচন নিয়ে ষড়যন্ত্রকারী এবং অসাংবিধানিক পথে দেশকে নিয়ে যাওয়ার চক্রান্তের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। জাতীয় পার্টির সেলিম উদ্দিন বলেন, জাতীয় পার্টি নির্বাচনমুখী দল। জেল-জুলুমের মুখেও আমরা নির্বাচনে অংশ নিয়েছি। আগামী নির্বাচনেও অংশগ্রহণ করবে বিরোধী দল জাতীয় পার্টি। দেশ উন্নয়নের মহাসড়ক দিয়ে গেলেও প্রশ্নপত্র ফাঁস, শেয়ার কেলেঙ্কারিসহ অনেক ঘটনাই সরকারকে প্রশ্নবিদ্ধ করছে। একজন মন্ত্রী সহনীয় পর্যায়ে ঘুষ খেতে বলেন। এটা কীসের আলামত। নৈতিকতা কোথায় গিয়ে দাঁড়িয়েছে। সরকার দলীয় সংসদ সদস্য সামশুল হক চৌধুরী বলেন, দেশ আজ সবদিক থেকে এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের এত উন্নয়ন-অগ্রগতি একটি রাজনৈতিক দলের সহ্য হয় না। তারা মুখে গণতন্ত্রের কথা বললেও সবসময়ই ক্ষমতায় যেতে বাঁকা পথ খোঁজে। দেশকে আরও উন্নয়ন-অগ্রগতির পথে নিয়ে যেতে এবং দেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আবারও ক্ষমতায় আনতে হবে। নইলে অপশক্তিরা দেশকে আবারও অন্ধকারের দিকে ধাবিত করবে। শিক্ষামন্ত্রীকে সহজ-সরল লোক উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাকে সরালেই এই সমস্যার সমাধান হবে না। তিনি একা কী করবেন? তাকে বাদ দিয়ে আর কাউকে মন্ত্রী করলেই যে প্রশ্নপত্র ফাঁস হবে না, তা বলা যায় না। প্রশ্নফাঁস রোধে শিক্ষামন্ত্রীর নিচে যারা আছেন তাদের বিরুদ্ধে তদন্তের প্রস্তাব করেন তিনি। সাগুফতা ইয়াসমীন এমিলি বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের কঠোর সমালোচনা করে বলেন, খালেদা জিয়া ক্ষমতায় থাকতে পাঁচবার দুর্নীতিতে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন করেছেন দেশকে। আর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারাবিশ্বের মধ্যে সততা-নিষ্ঠা ও পরিশ্রমী নেতাদের মধ্যে তৃতীয়স্থান অধিকার করেছেন। নির্বাচনে জিততে পারবেন না বুঝতে পেরেই বিএনপি নেত্রী এখন পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় যাওয়ার ষড়যন্ত্র করছেন। কিন্তু যে নেত্রী এতিমের টাকা মেরে খান, তাকে দেশের মানুষ আর ক্ষমতায় দেখতে চায় না। শফিকুল ইসলাম শিমুল পলাতক দ-প্রাপ্ত আসামি তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়ে বলেন, লন্ডনে বসে দ-প্রাপ্ত দুর্নীতিবাজ তারেক জিয়া দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে। জিয়া পরিবার এখন মহাদুর্নীতিবাজ হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। রায়কে কেন্দ্র করে খালেদা জিয়ারা সারাদেশে নাশকতা চালানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু দেশবাসী তাদের আর দেশে অগ্নিসন্ত্রাস করতে দেবে না।
×