ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০

বাড়ির ছাদে বা রাস্তায় উচ্চশব্দে গান বাজানো নিষিদ্ধ

প্রকাশিত: ২৩:৩১, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

বাড়ির ছাদে বা রাস্তায় উচ্চশব্দে গান বাজানো নিষিদ্ধ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাড়িতে বা বাড়ির ছাদে বা রাস্তায় উচ্চশব্দে গান বাজানো নিষিদ্ধ করেছে ঢাকা মহানগর পুলিশ। নগরবাসীর শান্তিপূর্ন বসবাস নিশ্চিত করতেই আইন মোতাবেক এমন নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। সম্প্রতি ওয়ারীতে এক বিয়ের অনুষ্ঠানে উচ্চশব্দে গান বাজানোর জেরধরে এক ব্যক্তির মৃত্যুর ঘটনার পর এমন নির্দেশনা দিলেন ঢাকা মহানগর পুলিশ কমিশনার মো. আছাদুজ্জামান মিয়া। মঙ্গলবার ডিএমপি কমিশনার স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এমন নির্দেশনা দেয়া হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, অনুমোদন ছাড়া কোন বাড়ি বা ছাদ বা রাস্তায় উচ্চশব্দে গানবাজনা বা কনসার্ট বা সঙ্গীতানুষ্ঠান আয়োজন করা যাবে না। সাধারণ নাগরিকদের শান্তিপূর্ণ বসবাস নিশ্চিত করতেই এমন নির্দেশ দেয়া হলো। ঢাকা মহানগরী অধ্যাদেশ ১৯৭৬ এর ২৭ ও ৩১ ধারায় প্রদত্ত ক্ষমতাবলে এ নির্দেশ দেয়া হলো। প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ১৮ জানুয়ারি ঢাকার ওয়ারী থানাধীন আর কে মিশন রোডের ৪৪ নম্বর বাড়িতে একটি বিয়ের গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে উচ্চশব্দে গান বাজানোর প্রতিবাদের সূত্রধরে মারধরের ঘটনায় ভূমি মন্ত্রণালয়ের অবসরপ্রাপ্ত অডিট কালেক্টর নাজমুল হকের (৬৫) মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। বাড়িটির নয়তলায় স্ত্রী, এক ছেলে আর এক মেয়েকে নিয়ে বসবাস করছিলেন নাজমুল হক। তিনি বাইপাস সার্জারির রোগী ছিলেন। ওইদিন বাসার ছাদে ফ্ল্যাট মালিকদের কমিউনিটি হলে গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান চলছিল। সেখানে উচ্চশব্দে গান চলছিল। এতে নাজমুল হকের শারীরিক সমস্যা হচ্ছিল। তিনি উচ্চশব্দে গান না বাজানোর জন্য বর হৃদয় রহমান ও তার মামা বাড়িটির ফ্ল্যাট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক আলতাফ হোসেনসহ সেখানে উপস্থিত সকলকে অনুরোধ করেন। এ নিয়ে বর পক্ষের সঙ্গে নাজমুল হকের চরম বাগবিতন্ডা হয়। একপর্যায়ে বর পক্ষের লোকজন নাজমুল হককে মারধর করে। মারধরে গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে তাৎক্ষণিকভাবে নিকটস্থ আজগর আলী হাসপাতালে নেয়া হয়। সেখানেই পরদিন ১৯ জানুয়ারি তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় নিহতের ছেলে বাদি হয়ে ওয়ারী থানায় সাত জনকে এজাহারনামীয় আসামী করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পুলিশ ওইদিনই মামলার ১ নম্বর আসামী বরের মামা আলতাফ হোসেন (৬৫), তার ছেলে সাজ্জাদ হোসেন (৪১), মেয়ে রাইয়ান হাসনিন (৩১) ও রাইয়ানের স্বামী মির্জা জাহিদ হাসানকে (৩৮) গ্রেফতার করে। মামলার তিন নম্বর আসামী বরসহ অপর দুই আসামী হোসনে আরা ও জিনাতকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। গ্রেফতারের পর সাজ্জাদ হোসেন ও মীর্জা জাহিদ হাসানকে এক দিনের করে রিমান্ডে পাঠিয়ে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেয় সিএমএম আদালত। অপর দুইজনকে কারাগারে পাঠানো হয়। মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা ওয়ারী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হারুন-উর-রশীদ জনকণ্ঠকে বলেন, গ্রেফতারকৃত চার আসামীই কারাগারে রয়েছে। বর ও অপর দুই আসামীকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। রিমান্ডে ও প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদেই আসামীরা পেটানোর কারণে অসুস্থ হয়ে নাজমুল হকের মৃত্যু হওয়ার কথা স্বীকার করেছে। জানা গেছে, এমন ঘটনার পর বিপাকে রয়েছে মেয়ের পরিবার। প্রাথমিকভাবে মেয়ের পরিবার ওই ছেলের সঙ্গে কনের বিয়ে না দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। যে বর বিয়ের আগেই মানুষকে পিটিয়ে হত্যা করতে পারে, তার সঙ্গে বিয়ে দিতে নারাজ মেয়ের পক্ষ। বিয়ের বিষয়টি ঝুঁলে আছে।
×