ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১

খালেদা জিয়ার অসাংবিধানিক একটি দাবিও মানা হবে না

প্রকাশিত: ০৭:৩৬, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

খালেদা জিয়ার অসাংবিধানিক একটি দাবিও মানা হবে না

সংসদ রিপোর্টার ॥ রাষ্ট্রপতির ভাষণের ওপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে মন্ত্রী-এমপিরা বলেছেন, বিএনপি চেয়ারপার্সন খালেদা জিয়ার রায়কে কেন্দ্র করে বিএনপি-জামায়াত সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে আর দেশে ৫ জানুয়ারির মতো কোন অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টির সুযোগ দেয়া হবে না। সতর্ক অবস্থানে থেকে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তাদের মোকাবেলা করা হবে। খালেদা জিয়ার ৬ দফা প্রস্তাব নাকচ করে দিয়ে তারা বলেন, তার অসাংবিধানিক একটি দাবিও মেনে নেয়া হবে না। যতই হুমকিধমকি দিক, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের অধীনেই খালেদা জিয়াকে নির্বাচনে আসতে হবে। প্রথমে ডেপুটি স্পীকার এ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়া এবং পরে সভাপতিম-লীর সদস্য লে. কর্নেল (অব) মুহাম্মদ ফারুক খানের সভাপতিত্বে সোমবার রাতে অনুষ্ঠিত আলোচনায় অংশ নেন গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, সরকারী দলের অধ্যাপক ডাঃ হাবিবে মিল্লাত, বেগম হোসনে আরা লুৎফা ডালিয়া, ফিরোজা বেগম চিনু, ওয়ার্কার্স পার্টির ইয়াসিন আলী, তরিকত ফেডারেশনের মহাসচিব এমএ আউয়াল ও জাতীয় পার্টির মোহাম্মদ ইলিয়াছ। আলোচনায় অংশ নিয়ে গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বিএনপি প্রধান খালেদা জিয়ার ৬ দফা দাবি প্রত্যাখ্যান করে বলেন, এসব অসাংবিধানিক দাবির একটিও আমরা মানতে রাজি নই। তবে তার একটি দাবি আমরা মানব। অবশ্যই নির্বাচনে ভোটাররা নির্বিঘেœ ভোট কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারবে, কাউকেই বাঁধা দেয়া হবে না। তবে আগামী নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ীই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এবং নির্বাচন কমিশনের অধীনে অনুষ্ঠিত হবে। এর কোন ব্যত্যয় ঘটবে না। তিনি বলেন, নির্বাচন হবে এই বছর। খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মামলায় ৮ ফেব্রুয়ারি আদালত রায় দেবে। কেউ যদি অন্যায় করে প্রতিকারের জন্য আদালতে যেতে হয়। আমরা মন্ত্রী হিসেবে বিরোধী দলের সময়ও অনেক মামলা হয়েছে। আদালতের যাওয়ার পর মুক্তি পেয়েছি। এতিমের টাকা, জিয়া অরফানেজ ট্রাস্টের টাকা আত্মসাতের জন্য খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে মামলা চলছে। আদালত যদি রায়ে তাকে মুক্তি দেয় আমাদের কোন আপত্তি নেই, বরং আমরা ধন্যবাদ জানাব। আর যদি দোষী হন শাস্তি পাবেন। বিএনপি-জামায়াত জোট ৫ জানুয়ারি নির্বাচন বানচালের নামে যেভাবে দেশে অরাজকতা করেছে, এই রায়কে কেন্দ্র করে তাদের সেটি আর করতে দেব না। এ দেশ আবার অরাজকতার মধ্যে পড়ুক, আমরা তা চাই না। অন্যায় করলে নিশ্চয় শাস্তি মাথা পেতে নিতে হবে। মন্ত্রীর বক্তব্য চলাকালে প্লট পাওয়া থেকে বঞ্চিত সরকার ও বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা সমস্বরে দাবি জানাতে চাইলে ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, প্লটের কথা বলছেন, আপনাদের সুসংবাদ একটা আছে। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ হয়েছে। আমার কাছে যা আছে তা আমি তাকে দেখিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সকল এমপিকে (যারা প্লট পাননি) প্লটের ব্যবস্থা করতে। আমরা করব, আমরা করছি। জাতীয় পার্টির মোহাম্মদ ইলিয়াছ বলেন, সুশাসনের অভাব থাকার কারণেই ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে চরম দুর্নীতি চলছে। শেয়ার কেলেঙ্কারিতে লাখ লাখ বিনিয়োগকারী পথে বসলেও জড়িত হোতাদের কারও বিচার করা হয়নি। পুঁজিবাজার কেলেঙ্কারির ঘটনায় ইব্রাহিম খালেদের তদন্ত রিপোর্টে কী উল্লেখ রয়েছে জাতি তা জানতে চায়। তরিকত ফেডারেশনের মহাসচিব এম এ আউয়াল বলেন, রায়কে কেন্দ্র করে দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে বিএনপি-জামায়াত জোট। আমাদের সতর্ক অবস্থানে থেকে তা মোকাবেলা করতে হবে। পুলিশের ওপর হামলাকারীরা সবাই বিএনপির নেতাকর্মী। দশম জাতীয় সংসদ বর্জন করে বিএনপি এখন পস্তাচ্ছে। আগামীতেও তাদের পস্তাতে হবে। মুখে যত কথা বলুক খালেদা জিয়াকে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের অধীনেই নির্বাচনে আসতে হবে। তিনি অবিলম্বে সন্ত্রাসী রাজনৈতিক দল জামায়াত নিষিদ্ধের দাবি জানান। সরকারী দলের অধ্যাপক ডাঃ হাবিবে মিল্লাত বিএনপি-জামায়াত জোটের কঠোর সমালোচনা করে বলেন, দেশ আজ সবদিক থেকে এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের এই অগ্রযাত্রাকে বাধাগ্রস্ত করে আবারও পিছিয়ে দিতে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে স্বাধীনতাবিরোধী সাম্প্রদায়িক জোট নানা চক্রান্ত করছে। একটা ঝামেলা বাঁধিয়ে পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতায় যাওয়া যায় কিনা, সেই চেষ্টা করছে। কিন্তু নাশকতা ঘটাতে তারা যতই ট্রেন লাইনের ফিশপ্লেট খুলুক, পুলিশের ওপর হামলা চালিয়ে আসামি ছিনতাই করুক; বাঙালী জাতি জড়িত সবাইকে ধরে ধরে বিচার করবে।
×