চিকিৎসার মানোন্নয়ন দাবিতে রাজশাহীতে বিক্ষোভ

স্টাফ রিপোর্টার, রাজশাহী ॥ রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা সেবার মানোন্নয়নের দাবি জানিয়েছে সামাজিক সংগঠন রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের নেতৃবৃন্দ। সোমবার বেলা ১১টায় রাজশাহী নগরীর কোর্ট শহীদ মিনার চত্বরে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশ থেকে নেতৃবৃন্দ এসব দাবি জানান। পরে নেতৃবৃন্দ রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা সেবার মানোন্নয়নের দাবিতে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি পেশ করেন। এর আগে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন পরিষদের সভাপতি লিয়াকত আলী। অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, রাজশাহী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান আসাদ, রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মোঃ জামাত খান, রাজশাহী চেম্বারের পরিচালক হারুনার রশিদ, বীর মুক্তিযোদ্ধা শাজাহান আলী বরজাহান, এ্যাডভোকেট এন্তাজুল হক বাবু, মোতাসিম বিল্লাহ, পরিবেশবিদ মিজানুর রহমান মিজান, আওয়ামী নেতা অধ্যাপক লুৎফর রহমান প্রমুখ। বক্তারা বলেন, বিভাগীয় শহর রাজশাহীতে লাখ লাখ মানুষের বসবাস হলেও সরকারী আধুনিক সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। রাজশাহীর সরকারী হাসপাতাল, থানা হেল্থ কমপ্লেক্স থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যায় পর্যন্ত মানুষ চিকিৎসা সেবা ঠিকমতো পাচ্ছে না। চিকিৎসার নামে চিকিৎসকদের প্রায় খারাপ আচরণের শিকার হন রোগীরা। এসব অবিলম্বে বন্ধ করে চিকিৎসা সেবার মানোন্নয়ন করার দাবি জানান বক্তারা। ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যু, নবজাতকের মৃত্যু, রোগীর স্বজনদের সঙ্গে মারামারি এমন ঘটনা এখন প্রায় ঘটছে রামেক হাসপাতালসহ বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, সরকার স্বাস্থ্যসেবার ক্ষেত্রে অনেক আন্তরিক হলেও কতিপয় চিকিৎসকের কারণে সরকারের সাফল্য ম্লান হচ্ছে। বক্তারা বলেন, রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগেও চলছে ওষুধ কোম্পানির রিপ্রেজেন্টেটিভদের সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য। বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের জরুরী সময়ে বিরক্ত করে রিপ্রেজেন্টেটিভরা। বক্তারা বলেন, সরকারী হাসপাতালে নরমাল ডেলিভারির জন্য খরচ হয় প্রায় ৩ হাজার টাকা এবং অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে খরচ হয় সব মিলিয়ে ১২,৮০০ টাকা পর্যন্ত। বেসরকারী হাসপাতালে এই খরচ দাঁড়ায় প্রায় ২০ হাজার টাকা। বক্তারা উল্লেখ করেন, রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জন্য সরকার প্রতি বছর কোটি কোটি টাকার যন্ত্রপাতি ও ওষুধ সরবরাহ করলেও রহস্যজনক কারণে সব বিকল করে রাখা হয়। ওষুধ রোগীদের দেয়া হয় না। হাসপাতালের কতিপয় চিকিৎসক ও অসাধু কর্মচারীরা ভুয়া স্লিপ ইস্যু করে সেসব ওষুধ বাজারে বিক্রি করে দেয়। রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রোগীদের জন্য বরাদ্দকৃত খাবারও আত্মসাত করা হয় বলে উল্লেখ করে বক্তারা বলেন, রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ইনডোর ও আউটডোরে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা কেবলমাত্র নিজের যেসব ক্লিনিকের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সেসব ক্লিনিকের রোগী ধরার জন্য হাসপাতালে যান। হাসপাতালে মরণাপন্ন রোগীদের কতিপয় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা দিনে একবারও না দেখে বিভিন্ন ক্লিনিকে পালাক্রমে রোগী দেখে থাকেন। অবস্থাসঙ্কটাপন্ন রোগীদের ক্লিনিকে চিকিৎসা করার নাম করে হাসপাতাল থেকে নিয়ে যাওয়া হয়, আর দরিদ্র রোগীরা দিনের পর দিন হাসপাতালের বেডে শুয়ে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু যন্ত্রণায় কাতরায়।