ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

সংসদে শিক্ষা মন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করলেন জিয়াউদ্দিন বাবলু

প্রকাশিত: ০৬:০০, ৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

সংসদে শিক্ষা মন্ত্রীর পদত্যাগ দাবি করলেন জিয়াউদ্দিন বাবলু

সংসদ রিপোর্টার ॥ প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় সংসদে ক্ষোভ প্রকাশ করে শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদের পদত্যাগ দাবি করেছেন বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সাবেক মহাসচিব জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু। তিনি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, প্রশ্নপত্র ফাঁস এখন মহামারি আকার রূপ নিয়েছে। তাই শিক্ষামন্ত্রীকে বলব ব্যর্থতা স্বীকার করে পদত্যাগ করুন। নতুবা প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করব তাকে বরখাস্ত করে নতুন মন্ত্রী নিয়োগ করুন। সোমবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে পয়েন্ট অব অর্ডারে দাঁড়িয়ে তিনি এ দাবি করেন। তার বক্তব্য শেষে সভাপতির আসনে থাকা ডেপুটি স্পীকার এ্যাডভোকেট ফজলে রাব্বি মিয়া বলেন, নিশ্চয়ই প্রধানমন্ত্রী বিষয়টি শুনেছেন। তিনি তার বিবেক বিবেচনায় জাতির স্বার্থে যতটুকু প্রয়োজন অবশ্যই তিনি তা করবেন। ফ্লোর নিয়ে জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু বলেন, প্রশ্ন ফাঁস মহামারি আকারে বিস্তার লাভ করছে। এটা নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। রবিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে বলা হয়েছিল যে, প্রশ্ন ফাঁস ধরিয়ে দিতে পারলে ৫ লাখ টাকা পুরস্কৃত করা হবে। অথচ আজ (সোমবার) তুষার শুভ্র নামে একটা সাইটে বলা হয়েছে- ইংরেজি প্রশ্ন আছে সংগ্রহ করতে হলে এত টাকা লাগবে! তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী তাঁর নেতৃত্বে দেশে অনেক উন্নয়ন কর্মকা- হয়েছে এবং হচ্ছে। বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। এই কয়েক বছরে আমাদের অনেক অর্জন হয়েছে। কিন্তু আগামী প্রজন্মকে যদি সত্যিকারের শিক্ষায় শিক্ষিত না করতে পারি তাহলে এত উন্নয়ন-অগ্রগতি অর্থহীন হবে। তিনি বলেন, আগামী প্রজন্মকে যদি সত্যিকার শিক্ষায় শিক্ষিত করতে না পারি, শুধু সনদ বিক্রির জন্য যদি শিক্ষিত করি তাহলে তো কিছুই শিখবে না। এই শিক্ষা অর্থহীন। আমরা চাই সত্যিকার শিক্ষা। প্রধানমন্ত্রীও চান জ্ঞান ভিত্তিক সমাজ, আমরাও চাই জ্ঞান ভিত্তিক সমাজ। জিয়াউদ্দিন বাবলু বলেন, আমরা আগামীতে কাদের হাতে দেশটা দিয়ে যাব? শিক্ষিত সমাজ ছাড়া সমৃদ্ধ সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে পারব না। কয়েকদিন আগে শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষা অধিদফতরের এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, আপনারা ঘুষ খান তবে সহনীয় পর্যায়ে। তিনি এও বলেছেন আমিও ঘুষ খাই, অন্য মন্ত্রীরাও ঘুষ খান। এটা বলার পরে উনি কী মন্ত্রী হিসেবে আর থাকতে পারেন? আর একজন মন্ত্রী কী একথা বলতে পারেন? এটা যখন ছাত্ররা শুনবে মন্ত্রী বলছেন সহনীয় পর্যায়ে ঘুষ খেতে তাহলে প্রশ্ন ফাঁস ঠেকাবেন কিভাবে? শিক্ষামন্ত্রীর উচিত ছিল সেদিনই পদত্যাগ করা। এ সময় প্রধানমন্ত্রীকে এ ব্যাপারে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার অনুরোধ জানান তিনি। তিনি বলেন, মন্ত্রী যখন বলেন ঘুষ সহনীয় মাত্রায় খেতে তখন তার কথা কেউ শুনবে না। তার সচিবও শুনবে না, অধিদফতরের কর্মকর্তারা শুনবেন না, কেউ শুনবেন না। মন্ত্রী যেখানে ঘুষ খেতে উৎসাহিত করছেন, তাহলে কিভাবে প্রশ্নপত্র ফাঁস নিয়ন্ত্রণ করবেন, এটা আমার বোধদয় হয় না। তাই অবিলম্বে শিক্ষামন্ত্রী তার ব্যর্থতা, দুর্নীতি ও অনিয়ম স্বীকার করে নিয়ে পদত্যাগ করুন। অথবা প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ করছি তাকে বরখাস্ত করে শিক্ষার মানোন্নয়নের জন্য এবং শিক্ষার গুণগত মান নিশ্চিত করতে নতুন মন্ত্রী নিয়োগ করবেন।
×