ঢাকা, বাংলাদেশ   বুধবার ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১

সাইকেলিং বাঁচাবে সময় ও অর্থ

প্রকাশিত: ০৬:১৩, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

সাইকেলিং বাঁচাবে সময় ও অর্থ

দিন যত যাচ্ছে ততই আমরা যান্ত্রিক হয়ে যাচ্ছি। স্বল্প দূরত্বের রাস্তাটি পাড়ি দিতেও আমরা ব্যবহার করছি যান্ত্রিক যানবাহন। এতে করে যেমন বাড়ছে পরিবেশ দূষণ তেমনি বাড়ছে যানজট, ভুগছি নানা জটিল রোগে। এ থেকে বেরিয়ে আসার মহাঔষধ হতে পারে ‘সাইকেল’। সাইকেল চালাতে প্রয়োজন নেই কোন তেল, গ্যাস। স্বল্প দূরত্ব এমনকি দীর্ঘ দূরত্বের পথ পাড়ি দিতে জুড়ি নেই সাইকেলের। ইদানীং তরুণ প্রজন্মের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে দলবেঁধে সাইকেল চালানো বা ‘সাইকেলিং’। এখনও গ্রামের স্কুলের ছেলেরা দলবেঁধে স্কুলে আসে সাইকেলের প্যাডেল চেপে। পিছিয়ে নেই নারীরাও। যার বাস্তব প্রমাণ বগুড়া সদরের লাহিড়ীপাড়া ইউনিয়নের সাতশিমুলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রীরা এখন ১০ কি.মি. পথ পাড়ি দিয়ে স্কুলে পৌঁছায়। সেদিন গণমাধ্যমে পড়লাম, দু-একজন নয়, তাঁরা দলবেঁধে স্কুলে পৌঁছায় সাইকেলে করে। ব্যস্থতম নগরী ঢাকা। যে শহরের নিত্যদিনের সমস্যা ‘যানজট’। ব্যক্তিগত গাড়ি আর রং রুট ব্যবহারের ফলে ঘন্টার পর ঘণ্টা নগরীর মানুষ জ্যামের কষ্ট সহ্য করছে প্রতিনিয়ত। ১০ মিনিটের পথ পাড়ি দিতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা লেগে যাচ্ছে। এ সমস্যা থেকে উত্তোরণের জন্য নগরীর তরুণরা সাইক্লিং করছে। ব্যক্তিগত গাড়ি কমিয়ে যদি স্বল্প দূরুত্বের পথ পাড়ি দিতে সাইকেলকে ব্যবহার করা যায় তবে যানজটের কবল থেকে কিছুটা হলেও মুক্তি মিলবে নগরবাসীর। এছাড়া সময় মতো গাড়ি পাওয়ার যে ভোগান্তি তা লাঘবে সাইকেলিং এর প্রতি তরুণ সমাজ ঝুঁকছে। সাইকেলিংয়ের সুফল -সাইকেলের দুদিক চাকা মধ্যে ফাঁকা, চাপতে হয় ঠ্যাং তুলে। আর এ ঠ্যাং তুলে চাপার মাঝেই শারীরিক যে ব্যায়াম হয় তা সত্যি শরীরের জন্য উপকারী। মেদ কমাতেও সাইকেলিংয়ের বিকল্প নেই। - নিয়মিত সাইকেল চালানোর ফলে ওজন কমে। সাইকেল চালালে ‘হাইপারটেনশন’ জনিত রোগীদের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। - নিয়মিত সাইকেলিং কার্ডিয়ভাসকুলার ফিটনেসকে উন্নত করে। -সাইকেল চালালে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে আসে। সাইকেল চালালে স্ট্রোকের ঝুঁকি কমে যায়। -সাইকেল চালানো এক প্রকার ব্যায়াম। এতে করে ডায়াবেটিকস কমানোর সম্ভাবনা বেশি থাকে। - মাংসপেশীর গঠনে চমৎকার কাজ করে সাইকেলিং। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ে। নিয়মিত সাইকেলিংয়ের ফলে ডিপ্রেশন, স্ট্রেস ও অ্যাংজাইটি কমায়। নিয়মিত সাইকেলিংয়ের ফলে মানুসিক স্বাস্থ্যেরও উন্নতি ঘটে। -সাইকেল চালানোর সময় আমাদের শরীরের সমস্ত অঙ্গের ব্যায়াম হয়। -নিয়মিত সাইকেলিংয়ের ফলে পরিবেশ দূষণ থেকেও পৃথিবীকে বাঁচানো সম্ভব। . সাইকেলিং এর সঙ্কট সাইকেলিং ছেলেদের বেলায় সহজ হলে ও আমাদের এ সমাজে এখনো মেয়েদের ব্যাপারে বিষয়টি তেমন মেনে নেয় না সমাজ। কুসংস্কার আর কিছু মূর্খ মানুষের কারণে অনেক পরিবারই তার মেয়ে সন্তানকে দিয়ে হয়তো সাইকেলিং করতে চায় না। এতে করে অনেক পরিবারের মেয়েরা ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও সাইকেলিং করতে পারছে না। আবার অনেক ধর্ণাঢ্য পরিবারের সন্তানরাও সাইকেল চালাতে অনীহা প্রকাশ করেন। বেশি বেশি প্রচারণার মাধ্যমে যদি সাইকেলিং কে জনপ্রিয় করে তোলা যায় তবে আমাদের দেহ, মন এমনকি পরিবেশ ও থাকবে সুন্দর। আমরা পাব একটি দূষণ মুক্ত পৃথিবী।
×