ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪৩১

ইসলাম জঙ্গীবাদ সমর্থন করে না ॥ মেনন

প্রকাশিত: ০৫:৩৩, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

ইসলাম জঙ্গীবাদ সমর্থন করে না ॥ মেনন

স্টাফ রিপোর্টার ॥ সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেছেন, ধর্ম পরস্পরকে বিচ্ছিন্ন করে না বরং ধর্ম সকলকে ঐক্যবদ্ধ করে। ধর্মের নামে আজকে যে উগ্রতা এবং সহিংসতা করা হচ্ছে তার বিরুদ্ধে আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। রবিবার রাজধানীতে আহমদীয়া মুসলিম জামাত বাংলাদেশের ৯৪তম বার্ষিক সম্মেলনের শেষ দিনে শুভেচ্ছা বক্তব্য দিতে গিয়ে তিনি এসব কথা বলেন। মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে সকল ধর্মের লোকদের শান্তিপ্রিয়ভাবে সহাবস্থান অধিকার স্বীকৃত। পবিত্র ইসলাম ধর্মীয় সম্প্রীতি ও সহনশীলতার শিক্ষা দেয়, ইসলাম জঙ্গীবাদ সমর্থন করে না। সবাই যেন যার যার ধর্ম স্বাধীনভাবে পালন করতে পারে এটাই আমরা চাই। জলসায় বক্তৃতা রাখেন ২৭নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর উমর ইবনে আব্দাল আজিজ তামিম। তিনি আহমদীয়া জামা’তের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, আহমদীরা শান্তিপূর্ণভাবে ধর্ম সেবা করে যাচ্ছে, শান্তির বার্তা সকলের কাছে পৌঁছে দেয়ার জন্য আহমদীরা যেভাবে বিভিন্ন কাজ করে যাচ্ছেন তা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। সমাপ্তি অধিবেশনে আহমদীয়া মুসলিম জামা’ত বাংলাদেশের জাতীয় আমির আলহাজ মোবাশশের উর রহমান বছরব্যাপী আল্লাহতায়ালার পক্ষ থেকে বর্ষিত কল্যাণরাজীর ওপর বক্তৃতা প্রদান করেন। তিনি তার বক্তৃতায় বলেন, নিখিল বিশ্ব আহমদীয়া জামাতের খলীফা সমগ্র বিশ্ববাসীর প্রতি সমবেদনা রেখে বিশ্বময় অস্থিরতাপূর্ণ সময়ে সর্বস্তরে শান্তি প্রতিষ্ঠায় নিজ নিজ দায়িত্ব পালনের জন্য জোর তাগিদ দিয়েছেন। সমাপনী অধিবেশনে আরও বক্তব্য রাখেন সুইডেনের প্রতিনিধি মাওলানা কামাল ইউসুফ এবং মাওলানা জাফর আহমদ। জলসায় আহমদীয়া মুসলিম জামাতের প্রতিষ্ঠাতা হযরত মির্যা গোলাম আহমদের (আ.) এই উদ্ধৃতি দিয়ে বক্তৃতায় মহানবী (সা.)- এর শ্রেষ্ঠত্ব বর্ণনা করে বলা হয়, এখন আসমানের নিচে মাত্র একজনই নবী আছেন এবং মাত্র একটিই কিতাব আছে। অর্থাৎ হযরত মুহাম্মদ (সা.)-যিনি সকল নবীগণের চাইতে উন্নত এবং উত্তম এবং সকল রসূলগণের চাইতে শ্রেষ্ঠতর ও পূর্ণতর এবং যিনি নবীগণের মোহর, মানবগণের মধ্যে শ্রেষ্ঠতম, যার আনুগত্য করলে খোদাতায়ালাকে পাওয়া যায়। বক্তব্য রাখেন নিখিল বিশ্ব আহমদীয়া মুসলিম জামাতের পঞ্চম খলীফা হযরত মির্যা মাসরূর আহমদ (আই.)-এর প্রতিনিধি মাওলানা সৈয়দ মাহমুদ আহমদ শাহ। সমগ্র বিশ্ববাসীর জন্য কল্যাণ কামনা করে দোয়ার মাধ্যমে জলসার সমাপ্তি ঘোষণা করেন তিনি। উল্লেখ্য, এবারের আয়োজনে সারাদেশ থেকে অংশগ্রহণ করেন আট হাজারের বেশি সদস্য। এছাড়াও নরওয়ে, ইংল্যান্ড, কানাডা, আমেরিকা, বাহরাইন, ভারত ও পাকিস্তানসহ আরও কয়েকটি দেশের প্রতিনিধিও উপস্থিত ছিলেন বার্ষিক সালানা জলসায়। বয়স্ক বিধবা ও প্রতিবন্ধী ভাতা ১০ শতাংশ বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে- মেনন ॥ সমাজকল্যাণ মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলেছেন, বয়স্ক, বিধবা ও প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের ভাতাসহ সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় অন্যান্য ভাতাসমূহ ১০ ভাগ বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। একই সঙ্গে গ্রামের মতো শহরাঞ্চলেও বিধবা ভাতা চালু করার প্রস্তাব দিয়েছে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়। বর্তমান সরকার অসহায় প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছে। এর অংশ হিসেবে আগামী বাজেটে এ খাতে বরাদ্দ আরও বাড়ানোর চেষ্টা চলছে। রবিবার বিকেলে আগারগাঁওয়ে পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) মিলনায়তনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর টেকসই উন্নয়নে নেয়া বিশেষায়িত কর্মসূচী ‘সমৃদ্ধি’-এর কর্ম এলাকাভুক্ত ২০০টি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের সঙ্গে দিনব্যাপী মতবিনিময়ের আয়োজন করে পিকেএসএফ। এর সমাপনী পর্বে সমাজকল্যাণ মন্ত্রী প্রধান অতিথি ছিলেন। বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ ও পিকেএসএফের চেয়ারম্যান ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদের সভাপতিত্বে সমাপনী পর্বে বিশেষ অতিথি ছিলেন পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম। স্বাগত বক্তব্য রাখেন পিকেএসএফের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মোঃ আবদুল করিম। পিকেএসএফ। প্রধান অতিথির বক্তব্যে পিকেএসএফ-এর সমৃদ্ধি কার্যক্রমের প্রশংসা করে সমাজকল্যাণ মন্ত্রী বলেন, দারিদ্র্য বিমোচনের পাশাপাশি মানবমর্যাদা প্রতিষ্ঠায় যে পন্থায় সমৃদ্ধি কাজ করছে, তা অত্যন্ত প্রশংসনীয়। তিনি বলেন, অনেকে ভিন্নমত পোষণ করলেও আমি মনে করি, উন্নয়নের সঙ্গে অধিকারে কোনো সংঘাত নেই এবং ‘সমৃদ্ধি’ কর্মসূচীটি তার প্রকৃষ্ট উদাহরণ। দারিদ্র্য বিমোচনে দৃষ্টান্ত অগ্রগতিকে সাম্প্রতিক সময়ে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় সাফল্য আখ্যা দিয়ে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেন, বর্তমান সরকার গত নয় বছরে দরিদ্র মানুষের সংখ্যা অর্ধেকে নামিয়ে এনেছে। দেশের ১২ শতাংশ মানুষ এখনও অতিদরিদ্র এবং শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার এ হারকে শূন্যের কাছাকাছি আনতে বদ্ধপরিকর। সভাপতির বক্তব্যে ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, সমৃদ্ধি কর্মসূচীর সকল কার্যক্রম সাজানো হয়েছে স্বাধীনতার ঘোষণা, বাংলাদেশের সংবিধান ও রূপকল্প ২০২১-এর আলোকে, যেখানে অসাম্য, বঞ্চনা ও দারিদ্র্য দূরীকরণ এবং সকলের জন্য মানবমর্যাদা নিশ্চিতে বিশেষ গুরুত্ব প্রদান করা হয়েছে। তিনি বলেন, দেশে টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিতে সরকারের কর্মযজ্ঞে পিকেএসএফ যথাযথ ভূমিকা পালন করবে।
×