ঢাকা, বাংলাদেশ   মঙ্গলবার ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১

একনেক সভায় নির্মাণ প্রকল্প অনুমোদন

প্রতিষ্ঠার ১৪ বছর পর স্থায়ী সদর দফতর পাচ্ছে র‌্যাব

প্রকাশিত: ০৫:৩২, ৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

প্রতিষ্ঠার ১৪ বছর পর স্থায়ী সদর দফতর পাচ্ছে র‌্যাব

স্টাফ রিপোর্টার ॥ বাহিনী প্রতিষ্ঠার প্রায় ১৪ বছর পর স্থায়ী সদর দফতর পাচ্ছে র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)। ‘র‌্যাব ফোর্সেস সদর দফতর নির্মাণ শীর্ষক’ একটি প্রকল্পে চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে সরকার। রাজধানীর আশকোনায় হজ ক্যাম্পের পাশে হতে যাওয়া এই প্রকল্পটির জন্য ব্যয় ধরা হয়েছে ৪৯৫ কোটি টাকা। রবিবার জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রকল্পটি অনুমোদন পায়। শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এ সভায় প্রধানমন্ত্রী ও একনেক চেয়ারপার্সন শেখ হাসিনা সভাপতিত্ব করেন। রাজধানীর মিরপুর ৬ নং সেকশনে সরকারী কর্মকর্তাদের জন্য ২৮৮টি আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ এবং চট্টগ্রামে বিমান সেনাপ্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট স্থাপন প্রকল্প সভায় অনুমোদন পেয়েছে। এই তিনটি নতুন প্রকল্প ছাড়াও আটটি চলমান উন্নয়ন প্রকল্প সংশোধিত আকারে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে মোট ব্যয় হবে ৭ হাজার ৪২৩ কোটি ৭২ লাখ টাকা, যার পুরোটাই সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে দেয়া হবে। একনেক সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তাফা কামাল প্রকল্পগুলো সম্পর্কে ব্রিফ করেন। মন্ত্রী বলেন, বর্তমানে র‌্যাবের সদর দফতরের জন্য কোন স্থায়ী অবকাঠামো নেই। ২০০৩ সালে বাংলাদেশ পুলিশের পাশাপাশি এলিট ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে র‌্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব) গঠন করা হয়। বর্তমানে র‌্যাবের সদর দফতরে ১ হাজার ৪৮৬ জন বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা-কর্মচারী কর্মরত রয়েছে। র‌্যাবের ফোর্স ও কর্মচারীদের আবাসন, যোগাযোগ, যন্ত্রপাতি পরিবহনের যানবাহন, অস্ত্র গোলাবারুদ, ডগ স্কোয়াড এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির জন্য ভাড়া করা অস্থায়ী অফিস পর্যাপ্ত নয়। এ পরিপ্রেক্ষিতে সরকার আধুনিক সুবিধাসংবলিত র‌্যাব ফোর্সেস সদর দফতর স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রকল্পটি ২০২১ সালের জুনের মধ্যে বাস্তবায়ন করা হবে। জানা গেছে, প্রকল্পের আওতায় ১৪তলা ভিতসহ ১৩তলা বিশিষ্ট অফিস ভবন নির্মাণ ও ১২তলা ভিতসহ ১২তলা বিশিষ্ট ব্যাচেলর অফিসার্স কোয়ার্টার তৈরি করা হবে। এছাড়া ১০তলা ভিতসহ ১০তলা বিশিষ্ট ফোর্স ব্যারাক, ৮তলা ভিতসহ ৮তলা বিশিষ্ট এমটি শেড কাম উপ-পরিচালক মেস নির্মাণ, ১০তলা ভিতসহ ১০তলা বিশিষ্ট আবাসিক কোয়ার্টার তৈরিসহ প্রয়োজনীয় অন্যান্য অবকাঠামোও নির্মাণ করা হবে। মন্ত্রী বলেন, সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সংখ্যা বহুগুণে বৃদ্ধি পেলেও সরকারী আবাসন সুবিধা আগের মতোই রয়ে গেছে। ফলে বর্তমানে আবাসন সঙ্কট প্রকট আকার ধারণ করেছে। এজন্য সরকারী কর্মকর্তাদের আবাসন সুবিধা তথা স্বাস্থ্যকর ও উপযুক্ত বাসস্থান নিশ্চিত করতে ‘ঢাকার মিরপুর ৬নং সেকশনে সরকারী কর্মকর্তাদের জন্য ২৮৮টি আবাসিক ফ্ল্যাট নির্মাণ’ শীর্ষক প্রকল্পটি নেয়া হয়েছে। প্রকল্পটি গণপূর্ত অধিদফতর সেপ্টেম্বর ২০১৭ হতে জুন, ২০২০ মেয়াদে বাস্তবায়ন করবে। পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রত্যেক হাওড় অঞ্চলের জন্য আলাদা আলাদা প্রকল্প নেয়ার নির্দেশা দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, মাছের জন্য ল্যান্ডিং স্টেশন নির্মাণ, মাছ বাজারজাতকরণে ভ্যান কেনাসহ বিকল্প ফসল উৎপাদন ও বিকল্প আয়ের পথ খুঁজে বের করতে হবে। এ জন্য প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় ও হাওড় উন্নয়ন বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট সকল সংস্থাকে সমন্বিতভাবে কাজ করতে বলেছেন। তিনি আরও জানান, প্রধানমন্ত্রী জাতীয় রাজস্ব ভবন ২০তলার পরিবর্তে ১২তলা করার নির্দেশনা দিয়েছেন। কারণ, বিমানবন্দর কাছাকাছি থাকায় এটি ২০তলা করা যাচ্ছে না। এক প্রশ্নের জবাবে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, যাচাই বাছাই ছাড়া প্রকল্প প্রণয়নের সুযোগ নেই। প্রকল্পের কম্পোনেন্ট (কার্যক্রম) ও আওতা বাড়ায় সংশোধিত আকারে প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়। এতে প্রকল্প ব্যয় বেড়ে গেছে এমনটা ভাবার সুযোগ নেই। একনেকে অনুমোদন পাওয়া সংশোধিত প্রকল্পসমূহ হচ্ছে-উপজেলা ও ইউনিয়ন সড়কে দীর্ঘ সেতু নির্মাণ প্রকল্প, বৃহত্তর ফরিদপুর গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন (২য় পর্যায়), ‘বৃহত্তর ফরিদপুর গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন (৩য় সংশোধিত) প্রকল্প, সমন্বিত কৃষি উন্নয়নের মাধ্যমে পুষ্টি ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ প্রকল্প, ঢাকা-চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের ইন্দ্রপুল হতে চক্রশালা পর্যন্ত বাঁক সরলীকরণ প্রকল্প, চট্টগ্রাম বিএফ ঘাঁটি জহুরুল হক বিমান সেনা প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট স্থাপন প্রকল্প, বরিশাল টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ উন্নীতকরণ প্রকল্প, জামালপুরের মাদারগঞ্জে শেখ রাসেল টেক্সটাইল ইনস্টিটিউট প্রকল্প এবং জাতীয় রাজস্ব ভবন নির্মাণ (সংশোধিত) প্রকল্প।
×