ঢাকা, বাংলাদেশ   বৃহস্পতিবার ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০

বাংলাদেশের হার না ড্র, ফয়সালা আজ

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

বাংলাদেশের হার না ড্র, ফয়সালা আজ

মিথুন আশরাফ ॥ চট্টগ্রাম টেস্টে যে পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তাতে বড়ই বিপদে আছে বাংলাদেশ। হারের শঙ্কাতেই এখন পড়ে গেছে। এ হার থেকে মুক্ত হওয়ার পথ একটাই। শ্রীলঙ্কার বোলারদের সামনে প্রাচীর হয়ে দাঁড়িয়ে থেকে যদি ব্যাটসম্যানরা নিজের সেরাটা দিতে পারেন। তাহলেই কেবল ১১৯ রানে পিছিয়ে থাকার সঙ্গে ৭ উইকেট হাতে নিয়েও ম্যাচ ড্র করা সম্ভব। শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশের হার হবে না টেস্ট ড্র হবে। সেই ফয়সালা আজই হয়ে যাবে। আজ যে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা প্রথম টেস্টের পঞ্চম ও শেষদিন। ইনিংস ব্যবধানে হার এড়াতে হলে বাংলাদেশকে প্রথমে ১২০ রান করতে হবে। এই রান তোলার পরও দলের ব্যাটসম্যানদের লক্ষ্যই থাকছে উইকেটে টিকে থাকা। যত বেশি সময় পারা যায় উইকেটে থাকা। তা করতে পারলে কোনরকম যদি দ্বিতীয় সেশনটাও পার করে দেয়া যায় তাহলে ম্যাচ ড্র হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি থাকছে। তা না হলেই হারের কোলে ঢলে পড়তে পারে মাহমুদুল্লাহবাহিনী। প্রথম ইনিংসে ৫১৩ রানের বড় স্কোর করেছে বাংলাদেশ। অসাধারণ ব্যাটিং। এমন ব্যাটিংয়ের পর হারের সম্ভাবনা তৈরি হবে তা ভাবাই যায়নি। কিন্তু এত বেশি স্পিনার নিয়েও কোন কাজ হয়নি। নখদন্তহীন স্পিন বোলিংই দেখার মিলেছে। শ্রীলঙ্কা ব্যাটসম্যানদের বিপদে ফেলতে না পারায় ৭১৩ রান করে ফেলে লঙ্কানরা। ২০০ রানে পিছিয়ে থেকে খেলতে নেমে ৩ উইকেট হারিয়ে যখন ৮১ রান করে বাংলাদেশ হারের সম্ভাবনা তৈরি হয়ে যায়। বাংলাদেশ স্পিনাররা যেখানে অসময়ে ভেল্কি দিয়েছেন সেখানে শ্রীলঙ্কা স্পিনারদের চিত্র একেবারেই ভিন্ন। তারা শুরুতেই ঝলক দেখান। আর তাতে করেই বাংলাদেশের বিপদ দেখা যাচ্ছে। শুরুতে অবশ্য তামিম ইকবাল ও ইমরুল কায়েস খুব ভালভাবেই এগিয়ে যেতে থাকেন। কিন্তু ৫২ রান স্কোরবোর্ডে যোগ হতেই ইমরুল (১৯) যখন আউট হন তখন উইকেট পড়া যেন শুরু হয়। ৭৬ রানে তামিম (৪১) ও হিসেবে দিনের শেষ বলে গিয়ে যখন ৮১ রানে মুশফিকুর রহীমও (২) সাজঘরে ফেরেন তখন বিপদ সঙ্কেতই মেলা শুরু করে দেয়। এখন উইকেটে থাকা মুমিনুল হকের (১৮*) সঙ্গে লিটন কুমার দাস, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত, মেহেদী হাসান মিরাজ, সানজামুল ইসলাম, তাইজুল ইসলাম ও মুস্তাফিজুর রহমানই দলকে হার থেকে বাঁচাতে পারেন। যদি ব্যাট হাতে বিশেষ কিছু করে দেখাতে পারেন। তৃতীয়দিন যেখানে ৩ উইকেট হারিয়ে ৫০৪ রান করেছিল শ্রীলঙ্কা সেখানে চতুর্থদিন ৯ উইকেট হারিয়ে আরও ২০৯ রান যোগ করে। ৭১৩ রান করে ইনিংস ঘোষণা করে। শ্রীলঙ্কান ব্যাটসম্যানরা এদিন মারমুখী হয়ে দ্রুত রান তোলার তাগিদেই খেলেন। তাতে করে তৃতীয়দিন ৮৭ রানে অপরাজিত থাকা রোশেন সিলভা (২৩০ বলে ১০৯ রান) ক্যারিয়ারের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরি করেন। তৃতীয়দিন ৩৭ রানে অপরাজিত থাকা দিনেশ চান্দিমালও (১৮৫ বলে ৮৭ রান) সেঞ্চুরির কাছাকাছি গিয়ে আউট হন। দুইজন মিলে চতুর্থ উইকেটে ১৩৫ রানের জুটি গড়েন। এরপর এক এক করে ধুন্ধুমার ব্যাটিং করে নিরোশান ডিকভেলা (৬১ বলে ৬২ রান) হাফ সেঞ্চুরি করে ফেলেন। দিলরুয়ান পেরেরা (৩২), রঙ্গনা হেরাথও (২৪) স্কোরবোর্ডে রান বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা রাখেন। হেরাথ যখন ৭১৩ রানে আউট হয়ে যান তখনই ইনিংস ঘোষণা করে শ্রীলঙ্কা। সেই সঙ্গে প্রথম ইনিংসে ২০০ রানে এগিয়েও যায়। এদিন স্পিন ভেল্কি দেখা যায়। কিন্তু সেই ভেল্কি এমন সময় মিলে যখন সুসময় আসার আর কোন সম্ভাবনা নেই যেন। শ্রীলঙ্কা যে চতুর্থদিনে ৬ উইকেট হারায়, সবকটি উইকেটই স্পিনাররা শিকার করেন। কিন্তু ততক্ষণে শ্রীলঙ্কা ২০০ রানের লিড নিয়ে নেয়। সেই লিডের পর যখন চতুর্থদিন শেষ হওয়ার আগেই ৩ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশ চাপে পড়ে যায়। হারের শঙ্কাও এখন উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছে না। তবে ব্যাটসম্যানরা যদি হাল ধরতে পারেন তাহলে ড্র করার সম্ভাবনাও থাকছে। এখন দেখা যাক শেষ পর্যন্ত আজ ম্যাচ থেকে কি ফল বের হয়।
×