ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

থিয়েটার আমার অস্তিত্বের সঙ্গে মিশে আছে ॥ আসিফ মোঃ নজরুল

প্রকাশিত: ০৪:২৯, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

থিয়েটার আমার অস্তিত্বের সঙ্গে মিশে আছে ॥ আসিফ মোঃ নজরুল

আসিফ মোঃ নজরুল। এই সময়ের মেধাবী তরুণ সংস্কৃতি কর্মীদের মধ্যে অন্যতম। একাধারে তিনি নাট্য সংগঠক, নাট্যকার, নাট্য নির্দেশক, মডেল, অভিনেতা ও প্রযোজক। অঙ্গীকার নাট্যদলের প্রধান পরিচালক। সম্প্রতি দেশের বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে তার অভিনীত একটি বিজ্ঞাপনচিত্র প্রচার হচ্ছে। এবারের বইমেলায় আসছে তার নতুন গল্পগ্রন্থ। সাম্প্রতিক সময়ে তার ব্যস্ততা নিয়ে তার সঙ্গে কথা হয়। আপনার অভিনীত একটি বিজ্ঞাপন কয়েকটি চ্যানেলে প্রচার হচ্ছে, অনুভূতি কেমন? আসিফ নজরুল : আমি এর আগেও কয়েকটি বিজ্ঞাপন করেছি। তবে এবারের বিজ্ঞাপনের চরিত্রটি একটি ভিন্ন ধরনের এবং চরিত্রটি চোখে পড়ার মতো। তাই বিজ্ঞাপনটি নিয়ে আমি উচ্ছ্বসিত। এজন্য নির্মাতা সেলিম রেজার প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। উনি সুযোগ না দিলে এটি সম্ভব হতো না। আপনার রচিত মঞ্চ প্রযোজনা ‘মগজ ধোলাই’ নাটক নিয়মিত মঞ্চায়ন হচ্ছে না কেন? আসিফ নজরুল : মহড়া কক্ষ সঙ্কটের কারণে নিয়মিত মঞ্চায়ন করতে পারছি না। যে স্কুলে মহড়া করতাম সেটি এখন হাইরাইজ বিল্ডিং হচ্ছে। তাছাড়া শিল্পকলায়ও নিয়মিত মহড়া কক্ষ পাওয়া যায় না। টানা মহড়া না করে নাটক মঞ্চায়ন করতে চাই না। যেহেতু প্রতিটি প্রদর্শনী এক একটি শৈল্পিক উন্নতির সিঁড়ি সেহেতু টানা মহড়া না করলে আগের চেয়ে ভাল প্রদর্শনী হবে না। নিয়মিত মহড়ার সুযোগ হলে আবার মঞ্চে নিয়মিত প্রদর্শনী করব। এবারের বইমেলায় আপনার কি বই আসছে? আসিফ নজরুল : এবারের বইমেলার ‘শেষ বিকেলের হাসি’ নামে আমার একটি গল্পের বই আসছে। এর আগে ‘নাম না বলা কথা’ নামে আমার একটি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশ হয়েছে। আমার রচিত বিভিন্ন নাটকের গল্প সংকলন করে বইটি প্রকাশিত হচ্ছে। বৈচিত্র্যময় ১২টি গল্প এতে স্থান পেয়েছে। এটি আলোকবর্তিকা প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হচ্ছে। আর মেলায় দোয়েল এর বইটি স্টলে পাওয়া যাচ্ছে। আপনার রচিত কতটি নাটক প্রচার হয়েছে? আসিফ নজরুল : এ পর্যন্ত আমার রচিত ৪টি নাটক প্রচার হয়েছে। এগুলো হলো নুরুল ইসলাম পরিচালিত ‘রূপান্তর’, সুমন রেজা পরিচালিত ‘রাত আঁধারী’, লিপু খন্দকারের ‘লাভ ওয়াচ’ এবং নতুন নাটক ‘ভ্রান্তি বিলাস। এ মাসে আরও দুটো নাটক নির্মাণের কথা চলছে। আপনি তো নাটক প্রযোজনাও করেছেন? আসিফ নজরুল : এ পর্যন্ত আমার প্রায় ১০টির মতো নাটক প্রযোজনা করেছি। এর মধ্যে রয়েছে ‘পুতুল রহস্য’, ‘গেন্দুচোরা’, ‘গো আউট অব রুলস’, ‘কমিটমেন্ট’, ‘তবুওতো পেঁচা জাগে’, ‘একটি অস্তিত্বহীন মানুষের গল্প’, ‘ছুটিতে সুগন্ধি’ প্রভৃতি। এর মধ্যে কয়েকটি নাটক এখনও প্রচারের অপেক্ষায়। আপনার অভিনীত এবং নির্দেশিত নাটকের বিষয়ে জানতে চাই। আসিফ নজরুল : আমি মঞ্চে মোট ৩টি নাটকের নির্দেশনা দিয়েছি। মিডিয়াতে আমি কোন নাটকের পরিচালনা করিনি করার ইচ্ছা নেই। আর মঞ্চে ১০টি নাটকের প্রায় ৫০টির মতো প্রদর্শনী করেছি। টিভিতে অভিনীত নাটকের হিসাব মেলানো কঠিন। এরপরও ৪০ থেকে ৫০টির মতো হতে পারে। এর মধ্যে ‘হৈমন্তী’ নামে কলকাতার একটি নাটকে কাজ করেছি। নাটকটি এশিয়ান টিভিতে প্রচার হয়েছে। সাংস্কৃতিক অঙ্গনের কোন শাখায় স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন? আসিফ নজরুল : আসলে মিডিয়া হলো শখের জায়গা। আমি একটি স্থানীয় বায়িং হাউসে কাজ করি। এর অবসরে কিছু করার চেষ্টা করি। তবে লেখালেখি এবং থিয়েটার নিজের অস্তিত্বের সঙ্গে মিশে আছে। অঙ্গীকার নাট্যদল নিয়ে আপনার পরিকল্পনা কী? আসিফ নজরুল : থিয়েটার আমার প্রাণের স্পন্দন। আমি মনে করি থিয়েটার একজন মানুষের জীবনকে পরিপূর্ণতা দেয়, সভ্য হতে শেখায়, শুদ্ধ এবং শৈল্পিক হতে শেখায়। সর্বোপরি মানুষের প্রতিভাকে জাগ্রত করে সভ্য মানুষের কাতারে দাঁড়াতে সাহায্য করে। আমি যদি থিয়েটার না করতাম তাহলে এতদূর আসতে পারতাম না। তবে এও ঠিক প্রতি বছর ছেলে মেয়েরা থিয়েটারে আসে আবার অনেকেই মিডিয়ার হাতছানিতে উড়াল দেয়। সব চেয়ে বড় আনন্দের বিষয় যখন কোন ছেলে মেয়ে দল থেকে বের হয়ে মিডিয়াতে প্রতিষ্ঠিত হয়। আর সবচেয়ে কষ্টদায়ক বিষয় যখন কোন ছেলে মেয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়ে দলের অবদানকে অস্বীকার করে। এরপরও আমার প্রচেষ্টা চলবে নিরন্তর। -সাজু আহমেদ
×