ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

নদীতে মাছের ঘের ॥ নৌচলাচল ব্যাহত

প্রকাশিত: ০৩:৫৫, ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

নদীতে মাছের ঘের ॥ নৌচলাচল ব্যাহত

স্টাফ রিপোর্টার, নরসিংদী ॥ মাছের ঘেরের কারণে নরসিংদী মেঘনা, হাড়িধোয়া, আড়িয়াল খাঁ ও পুরনো ব্রহ্মপুত্র নদের স্বাভাবিক স্রোতধারায় মারাত্মক প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হচ্ছে। নদের মাঝে গাছগাছালির ডালপালা, বাঁশ ও কচুরিপানা দিয়ে তৈরি করা হয়েছে শ’ শ’ ঘের। স্থানীয়ভাবে এই ঘের ‘খেও’ বা ‘খাইর’ নামে পরিচিত। এসব ঘের মেঘনা, হাড়িধোয়া, আড়িয়াল খাঁ ও ব্রহ্মপুত্র নদের মোহনাসহ মূল মেঘনা শাখাসমূহে ছোট-বড় অসংখ্য ডুবোচরের সৃষ্টি করেছে। ফলে কয়েক দশকে নদীগুলোর মূল স্রোত বাধাগ্রস্ত হয়ে আড়িয়ালখাঁ, হাড়িধোয়া ও ব্রহ্মপুত্র নদ ভরাট হয়ে মরা নদে পরিণত হয়েছে। ভরাট হয়ে গেছে মেঘনার কয়েকটি শাখা। গতিপথ পরিবর্তিত হয়েছে মূল মেঘনাতেও। শুষ্ক মৌসুমে মূল মেঘনায় নৌযান চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। শাখাসমূহে কোন নৌযান চলাচল করতে পারছে না ফলে মারাত্মক দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে নদী পারের হাজার হাজার মানুষ। জানা গেছে, নদ-নদীতে এসব মাছের ঘের তৈরির আইনগত কোন ভিত্তি নেই। সম্পূর্ণ বেআইনীভাবে তৈরি এসব মাছের ঘের কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তির মোটা অঙ্কের অর্থ আয়ের উৎস। স্থানীয় প্রশাসনকে ম্যানেজ করে প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এই ঘের তৈরি করে নদীর পানিকে দূষণ ঘটাচ্ছে। অথচ জেলা প্রশাসন রহস্যজনক কারণে বেআইনী মাছের ঘের উচ্ছেদে কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না। মেঘনা তীরবর্তী মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এক সময়ে জেলে সম্প্রদায়ের লোকজন মাছের ঘের তৈরি করত। এখন ঘেরের মালিকানা প্রভাবশালী ব্যক্তিদের হাতে। ভাদ্র-আশ্বিন মাসে মেঘনা, আড়িয়াল খাঁ, হাড়িধোয়া, ব্রহ্মপুত্র নদের মোহনাসহ মূল মেঘনা ও শাখাসমূহে ঘের স্থাপনের কাজ শুরু হয়। জেলা মৎস্য কর্মকর্তা জানান, ইতোপূর্বে এক রনের বেশ কয়েকটা অভিযান চালিয়ে বাঁধ অপসারণ করা হয়েছে। তবে এ ধরনের বাঁধ যদি কোথাও থাকে তা হলে মোবাইল কোর্ট, উপজেলা অফিস ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নিয়ে এ ধরনের বাঁধ অপসারণ করা হবে। এ ধরনের কোন খবর আমরা পেলে সঙ্গে সঙ্গে পুলিশ নিয়ে দ্রুত বাঁধগুলো সরানোর ব্যবস্থা করা হবে। এ জন্য মৎস্য আইনে কঠিন আইন আছে। এভাবে নদীর গতিপথ ও মাছের গতিপথ বন্ধ করতে পারে না এটা শাস্তিযোগ্য অপরাধ।
×