ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

অতিথি পাখিশূন্য রামসাগর

প্রকাশিত: ০৬:৩৭, ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

অতিথি পাখিশূন্য রামসাগর

প্রতি বছর শীতের এই সময় দেশের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র ‘রামসাগরে’ পর্যটকদের উপচে পড়া ভিড়, আর অতিথি পাখির আনাগোনায় মুখরিত হয়ে থাকে চারপাশ। কিন্তু চলতি মৌসুমে রামসাগরে পর্যটক থাকলেও অতিথি পাখির কোন দেখা নেই। পর্যটক ও স্থানীয়রা বলছেন, দীঘিতে শ্যালো ইঞ্জিন চালিত একাধিক নৌকা চলাচলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হওয়ায়, অতিথি পাখিরা আর আসছে না। যে কারণে শীতকালেও মিলছে না অতিথি পাখির দেখা। শ্যালো ইঞ্জিন চালিত একাধিক নৌকা চলাচলে দীঘির পানি দূষণসহ নষ্ট হচ্ছে প্রাকৃতিক পরিবেশ। রামসাগর একটি জাতীয় উদ্যান। কয়েক শ’ বছরের ইতিহাসের সাক্ষ্য বহন করা বিশাল এ দীঘি। প্রতি বছর শীতের ভরা মৌসুমে বিভিন্ন প্রজাতির অতিথি পাখির সমাগমে ভরে যায় রামসাগর দীঘির পানি ও আশপাশের গাছপালা। পর্যটকরা দীঘির চারপাশে ভিড় করে দীঘির পানিতে খেলা করা অতিথি পাখি দেখেন। শীত আসলে পাখিপ্রেমীরাও ভিড় জমান রামসাগরে। মঙ্গলবার সরেজমিন দেখা যায়, পাখির দেখা না পেয়ে পর্যটক ও পাখিপ্রেমীরা হতাশ হয়ে ফিরছেন। গত দুই-তিন বছর থেকে দীঘিতে নৌকা চলাচল করায়, অতিথি পাখির আর দেখা মেলে না। নৌকার ডিজেল দীঘির পানিতে পড়ে দূষিত হচ্ছে পানি ও পরিবেশ। নৌকায় ভ্রমণ করা দর্শনার্থীরা চিপস-বিস্কুটের খালি প্যাকেটসহ বিভিন্ন প্লাস্টিক জাতীয় দ্রব্য ফেলছেন দীঘিতে। অন্যদিকে, নৌকায় ভ্রমণে দর্শনার্থীদের কাছ থেকে জনপ্রতি ত্রিশ-চল্লিশ টাকা করে আদায় করা হলেও তা জমা হচ্ছে না সরকারী কোষাগারে। স্থানীয় সিকদারহাটের বাসিন্দা কুরবান আলী বলেন, যেদিন থেকে রামসাগর দীঘিতে নৌকা চলতে শুরু করেছে, সেদিন থেকেই এখানকার পরিবেশের পরিবর্তন ঘটতে শুরু করে। গত কয়েক বছর থেকে দীঘিতে নৌকা চলাচলের মাধ্যমে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে শীতকালীন অতিথি পাখিদের আসতে বাধা দেয়া হচ্ছে। অনেকেই আগের মতো অতিথি পাখির অভয়ারণ্য ভেবে রামসাগর দীঘিতে এসে হতাশ হয়ে ফিরছেন। প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষায় অতিথি পাখিদের প্রতিবন্ধকতা সরিয়ে অভয়ারণ্য সৃষ্টি করতে প্রশাসনের পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন। রামসাগর জাতীয় উদ্যানের তত্ত্বাবধায়ক আব্দুস সালাম তুহিন বলেন, এ উদ্যানের গাছ-গাছালি দেখাশোনার দায়িত্ব বন বিভাগের। দীঘির দায়িত্বে রয়েছে জেলা প্রশাসন। এ বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না। নৌকা পরিচালনাকারী মোজাহার হোসেন বলেন, রাতে আমরা কয়েকজন রামসাগর দীঘির মাছ পাহাড়া দেই। এর জন্য জেলা প্রশাসকের কাছ থেকে কোন পারিশ্রমিক পাই না। দিনের বেলা নৌকা চালিয়ে পর্যটকরা যা দেয় তা দিয়েই সন্তুষ্ট থাকি। -সাজেদুর রহমান শিলু, দিনাজপুর থেকে
×