ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১

জেগে উঠেছে আওয়ামী লীগ, দক্ষিণাঞ্চলে ভোট উৎসবের আমেজ

প্রকাশিত: ০৫:২৫, ৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

জেগে উঠেছে আওয়ামী লীগ, দক্ষিণাঞ্চলে ভোট উৎসবের আমেজ

খোকন আহম্মেদ হীরা, বরিশাল থেকে ॥ আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি বিভাগীয় নগরী বরিশালে আসছেন। প্রায় ছয় বছর পর প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে নগরীসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চল জুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে উৎসবের আমেজ। দলের নেতৃত্বস্থানীয় নেতাদের পাশাপাশি ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন উৎফুল্ল নেতাকর্মীরা। চলছে সৌন্দর্য বর্ধনের কাজ। প্রধানমন্ত্রীর সফরকে কেন্দ্র করে জেগে উঠেছে আওয়ামী লীগ ও তার সব সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা। সূত্র মতে, ২০১৮ সালকে বলা হচ্ছে নির্বাচনী বছর। এ বছরের শেষের দিকে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। আর বছরের প্রথমার্ধেই বরিশালসহ ছয় সিটি কর্পোরেশনে নির্বাচন আয়োজনের কথা জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এই দুই নির্বাচনের জন্য তৃণমূলে দলকে সংগঠিত ও উজ্জীবিত করতে ঢাকার বাইরে সফরে বের হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রীর সফরের মাধ্যমে আসন্ন সিটি ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচার আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে বলে মনে করছেন দলীয় নেতারা। ফলে প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় গুরুত্ব পাচ্ছে নির্বাচনকেন্দ্রিক ভাবনা। সিটি ও জাতীয় নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থীরা প্রধানমন্ত্রীর সফরকে ঘিরে সবচেয়ে তৎপর। বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের আওয়ামী লীগের প্রস্তাবিত একক মেয়র প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর ছবি সংবলিত তোরণ, বিলবোর্ড, ব্যানার, ফেস্টুনে ভরে গেছে গোটা নগরী। গত কয়েকদিন ধরে সিটি মেয়র আর বিভিন্ন আসনের সাংসদ পদপ্রার্থীদের ব্যানার-ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে নগরীসহ বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ স্থান ও স্ব-স্ব নির্বাচনী এলাকা। প্রধানমন্ত্রীর বরিশাল আগমনে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে এবং নেতাকর্মীদের দলে দলে দলীয় সভাপতির জনসভায় যোগদানের মাধ্যমে জনসমুদ্রে পরিণত করার আহ্বান জানিয়ে মহাসড়কের দোয়ারিকা সেতু থেকে শুরু করে বরিশাল ক্যাডেট কলেজ পর্যন্ত প্রায় চার কিলোমিটার এলাকায় কয়েক হাজার ফেস্টুন ও বিলবোর্ড স্থাপন করা হয়েছে। সড়কের দুইপাশে দৃষ্টিনন্দন ও নজরকারা ফেস্টুন এবং বিলবোর্ড স্থাপনের মাধ্যমে বরিশালজুড়ে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছেন বরিশাল-৩ (বাবুগঞ্জ-মুলাদী) আসন থেকে আওয়ামী লীগের সম্ভ্রাব্য প্রার্থী যুবলীগের কেন্দ্রীয় সহসম্পাদক মোঃ মিজানুর রহমান। এছাড়া বরিশাল নগরীর বঙ্গবন্ধু উদ্যানের জনসভায় বিপুল লোক সমাগমের মাধ্যমে নিজের অবস্থান জানান দিতে ব্যাপক শোডাউনেরও প্রস্তুতি নিয়েছেন মিজানুর রহমানসহ অন্য আসনের সম্ভাব্য প্রার্থীরা। মিজানুর রহমান বলেন, গণমানুষের নেত্রী শেখ হাসিনা দক্ষিণাঞ্চলে যে উন্নয়নের স্রোত এনেছেন, তাতে এ অঞ্চলের মানুষ শেখ হাসিনার কথা শুনতে শুধু বঙ্গবন্ধু উদ্যানই নয় গোটা বরিশাল শহর জনসমুদ্রে পরিণত করবে। ইতোমধ্যে গত ১ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রীর জনসভাস্থল বরিশাল নগরীর বঙ্গবন্ধু উদ্যান পরিদর্শন করেছেন জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ এমপি, সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট তালুকদার মোঃ ইউনুস এমপি, জেলা প্রশাসক মোঃ হাবিবুর রহমানসহ প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তারা। দলের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভাকে জনসমুদ্র থেকে মহাসমুদ্রে পরিণত করতে জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহর নেতৃত্বে প্রতিদিনই প্রস্তুতি সভা অব্যাহত রেখেছেন। সম্ভাব্য প্রার্থীরা তৎপর ॥ ২০১৮ সালকে বলা হচ্ছে নির্বাচনী বছর। এ বছরের শেষের দিকে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। আর বছরের প্রথমার্ধেই বরিশালসহ ছয় সিটি কর্পোরেশনে নির্বাচন আয়োজনের কথা জানিয়েছে নির্বাচন কমিশন। এই দুই নির্বাচনের জন্য তৃণমূলে দল সংগঠিত ও উজ্জীবীত করতে ঢাকার বাইরে সফরে বের হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা। ৩০ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী সিলেট সফর করেছেন। তার বরিশাল সফর ঘিরে ইতোমধ্যে আওয়ামী লীগ ও সব সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে বিরাজ করছে উৎসবের আমেজ। বরিশালজুড়ে অনেকটা আগেভাগেই নির্বাচনী আমেজ দেখা দিলেও প্রধানমন্ত্রীর সফরের মাধ্যমে আসন্ন সিটি ও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচার আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হবে বলে মনে করছেন দলীয় নেতারা। ফলে প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় গুরুত্ব পাচ্ছে নির্বাচনকেন্দ্রিক ভাবনা। সিটি ও জাতীয় নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থীরাও প্রধানমন্ত্রীর সফর ঘিরে সবচেয়ে তৎপর। শহরজুড়ে তোরণ, বিলবোর্ড, ব্যানার, ফেস্টুন টানিয়ে প্রধানমন্ত্রীর নজরকাড়ার প্রস্তুতি নিয়েছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা। গত কয়েকদিন ধরে সিটি মেয়র আর বিভিন্ন আসনের সাংসদ পদপ্রার্থীদের ব্যানার-ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে নগরীসহ বরিশাল-ঢাকা মহাসড়কের গুরুত্বপূর্ণ স্থান ও স্ব-স্ব নির্বাচনী এলাকা। প্রধানমন্ত্রীর বরিশাল আগমনে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়ে এবং নেতাকর্মীদের দলে দলে দলীয় সভাপতির জনসভায় যোগদানের আহ্বান জানিয়ে মহাসড়কের দোয়ারিকা সেতু থেকে শুরু করে বরিশাল ক্যাডেট কলেজ পর্যন্ত প্রায় চার কিলোমিটার এলাকায় কয়েক হাজার ফেস্টুন ও বিলবোর্ড স্থাপন করা হয়েছে। এরইমধ্যে প্রধানমন্ত্রীর বরিশাল সফরকে সফল করার লক্ষ্যে গত ২৮ জানুয়ারি বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বরিশাল জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাডভোকেট তালুকদার মোঃ ইউনুস এমপি জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৮ ফেব্রুয়ারি বরিশাল এসে বাকেরগঞ্জের লেবুখালিতে ‘শেখ হাসিনা সেনানিবাস’র উদ্বোধন করবেন। পরে বিকেলে তিনি বরিশাল নগরীর বঙ্গবন্ধু উদ্যানে আওয়ামী লীগের জনসভায় প্রধান অতিথি হিসেবে ভাষণ দেবেন। কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের সহসাংগঠনিক সম্পাদক এ্যাডভোকেট বলরাম পোদ্দার জানান, ইতোমধ্যে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের ১৫ সাংগঠনিক টিম মাঠে নেমেছে। কেন্দ্রীয় নেতাদের নেতৃত্বে গঠিত এ টিমের সদস্যরা গত ২৬ জানুয়ারি থেকে সারাদেশে সফর শুরু করেছেন। দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার নির্দেশে মূলত তারা দলকে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত করতেই মাঠে নেমেছেন। এ সফরের মধ্যদিয়ে তারা বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায় দলীয় কোন্দল নিরসন এবং কর্মীদের নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত করছেন। আওয়ামী লীগের ৭৬ সাংগঠনিক জেলা সফর করবে এ ১৫ টিম। টার্গেট সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন ॥ দলের একাধিক দায়িত্বশীল নেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিভাগীয় সফর শুরু করা হচ্ছে জাতীয় নির্বাচনের পাশাপাশি সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনকে মাথায় রেখে। আগামী মার্চ কিংবা এপ্রিল মাসে বরিশালসহ গাজীপুর, রাজশাহী, খুলনা, সিলেট সিটি কর্পোরেশনের নির্বাচন হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। নির্বাচনী জনসভায় যা তুলে ধরা হবে ॥ প্রধানমন্ত্রীর বরিশাল সফর প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল একাধিক নেতারা বলেন, আওয়ামী লীগকে আবারও বিজয়ী করতে হলে প্রচারের প্রয়োজন আছে। গত ৯ বছরে সরকার অনেক উন্নয়ন করেছে। এসব উন্নয়ন কর্মকান্ড জনগণের মধ্যে তুলে ধরতে বিভিন্ন জনসভা ও সফরের আয়োজন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সর্বশেষ ২০১২ সালের ২১ মার্চ বরিশাল সফর করেছিলেন।
×