নিজস্ব সংবাদদাতা, কেরানীগঞ্জ, ১ ফেব্রুয়ারি ॥ বুড়িগঙ্গা দখলের পর এবার প্রভাশালীরা দখল করতে শুরু করেছে কেরানীগঞ্জের সিংহ নদী। অবৈধ দখলের ফলে দিনে দিনে সিংহভাগ মরা নদীতে পরিণত হচ্ছে। বিগত তিন দশকে নদীর ১০ কিলোমিটার জমি দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে শতাধিক ভবন ও মার্কেট। নদীর প্রবাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় ফসলি জমিতে সেচ ও নৌ চলাচল বিঘিœত হচ্ছে । সরেজমিনে দেখা গেছে, নদী ক্রমাগত ভরাট করে সেখানে গড়ে তোলা হয়েছে বহুতল ভবন ও মার্কেট। ভূমিদস্যুরা দুই হাত ভরে কামিয়ে নিচ্ছে কালো টাকা। এই অপকর্মে জড়িত উপজেলা ভূমি ও রাজস্ব বিভাগের কিছু অসাধু কর্মকর্তা কর্মচারী। ভূমিদস্যুরা ভুয়া ও জাল কাগজপত্র দেখিয়ে কেউবা রাজনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতায়, কেউ বা কোন প্রকার কাগজপত্র না দেখিয়েই দখল করে নিয়েছে সিংহ নদী। এ বিষয়ে রামেরকান্দা এলাকার বাসিন্দা মনির হোসেন বলেন, আগেকার দিনে লোকজন এই নদী দিয়ে বুড়িগঙ্গা ও ধলেশ্বরী নদীতে নৌপথে যাতায়াত করত। তাছাড়া ব্যবসায়ীরা রাজেন্দ্রপুর, বিক্রমপুর, শরীয়তপুর, মাদারীপুর, ফরিদপুর, দিনাজপুর, রাজশাহী, যশোর, কুষ্টিয়া, বরিশাল, খুলনা এমনকি ভারতের সঙ্গে যোগাযোগ ক্ষেত্রেও এই নদী ব্যবহার করত। রুহিতপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল আলী বলেন, কেরানীগঞ্জ উপজেলায় ভূমি রাজস্ব অফিসের কিছু দালালচক্র রয়েছে যারা ড্রইং, ডিজাইন, মৌজা, নাম, খতিয়ান সবকিছু জালিয়াতি করছে। তাছাড়া ওই অফিসের কিছু অসাধু কর্মকর্তা কর্মচারীর সহায়তায়ও জমির নাম বদলি করে কালো টাকা কামাচ্ছে। ভূমিদস্যুরা বেলনা এলাকা সিংহ নদী দখল করে ৭/৮ টি মসজিদ নির্মাণ করেছে। বলার কেউ নেই। সিংহ নদীটি ধলেশ্বরীর আকশাইল এলাকা দিয়ে রামেরকান্দা, অগ্রখোলা, শিকারীটোলা ও খাড়াকান্দি এলাকা দিয়ে প্রবাহিত হয়ে পুনরায় ধলেশ্বরীর সঙ্গে মিশছে। অপরদিকে নদীটির রামেরকান্দা দিয়ে প্রবাহিত হয়ে বেলনা, আকশাইল ও কলাতিয়া হয়ে বুড়িগঙ্গা নদীর সঙ্গে মিশেছে। ভারতবর্ষের সময় এই খরস্রোতা দিয়ে শত শত হাজার মণের ধান-পাট বোঝাই নৌকা পাল তুলে যাতায়াত করত। সিংহের মতো এই নদীর আওয়াজ ছিল। এজন্য লোকেরা এই নদীকে সিংহ নদী বলে আখ্যায়িত করছে। এ বিষয়ে কেরানীগঞ্জ উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) পারভেজুর রহমান বলেন, সারাদেশের নদ-নদী দখল করে নিচ্ছে। ঢাকার কাছে কেরানীগঞ্জের জমির মূল্য অনেক বেশি। এ জন্য কেরানীগঞ্জের খাল ও নদীগুলো দখল হয়ে যাচ্ছে। অতি শীঘ্রই সিংহ নদী, খাল ও শাখা খালগুলোতে উচ্ছেদ অভিযান চালানো হবে।
আরো পড়ুন
শীর্ষ সংবাদ: