ঢাকা, বাংলাদেশ   শনিবার ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

রাজধানীতে রশীদ চৌধুরীর পেইন্টিং ও ট্যাপেস্ট্রি শিল্পকর্ম প্রদর্শনী

প্রকাশিত: ০৭:০০, ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

রাজধানীতে রশীদ চৌধুরীর পেইন্টিং ও ট্যাপেস্ট্রি শিল্পকর্ম প্রদর্শনী

স্টাফ রিপোর্টার ॥ দেশের বরেণ্য চিত্র শিল্পী রফিকুন নবী বলেছেন, ট্যাপেস্ট্রি শিল্পকর্মে রশীদ চৌধুরী সারা বিশে^র বিচারে প্রথম সারির শিল্পী। পঞ্চাশের দশকে বাঙালী রেনসাঁর যে উদ্ভব ঘটেছিল রশীদ চৌধুরী ও তাঁর বন্ধুরা ছিলেন অগ্রগণ্য। কাইয়ুম চৌধুরী, ইমদাদ হোসেন, আবদুর রাজ্জাক, মুর্তজা বশীর, রশীদ চৌধুরী এরা প্রত্যেকেই এক সঙ্গে ঢাকা আর্ট কলেজে লেখাপড়া করেছেন। এরা প্রত্যেকেই পরে বাংলাদেশের বড় শিল্পী হিসেবে স্বীকৃত। তিনি বলেন রশীদ চৌধুরী আমার সরাসরি শিক্ষক ছিলেন। তবে শুধু ক্লাসে নয় তার শিল্পজীবন থেকে অবিরত শিক্ষা গ্রহণ করেছি আমি। বিদ্যুত ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, ছোটবেলায় ছবি আঁকার চেষ্টা করতাম। তার সঙ্গে পরিচয় হয়নি কখনও। তবে সংসদ ভবনে গিয়ে রশীদ চৌধুরীর কাজ প্রথম দেখি। পরে এ শিল্পী সম্পর্কে জানতে পারি। তার শিল্পভুবন যে শিল্পীকে অনুপ্রেরণা জোগাবে, সন্দেহ নেই। এ কথা বলার অপেক্ষা রাখে না যে বাংলাদেশের চিত্রকলার ইতিহাসে অন্যতম রশীদ চৌধুরী ছিলেন একজন পরিপূর্ণ শিল্পী। তিনি খুব দ্রুত তাঁর প্রকাশ মাধ্যম পরিবর্তন করতেন। সাহিত্যচর্চাও করেছেন। তাঁর কিছু হৃদয়গ্রাহী কবিতা আছে; আছে জাক প্রেরভে এবং রবের দেস্নোস-এর অনুবাদ, যা তিনি মূল ফরাসী থেকে ভাষান্তরিত করেন। ষাটের দশকের শেষ দিকে তিনি তরুণ কবি-প্রকৌশলী-স্থপতিদের একটি দল নিয়ে বিদ্রোহাত্মক ‘না’ গ্রুপ সৃষ্টির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ছিলেন। বাংলাদেশে শিল্পচর্চার ক্ষেত্রে সৃজনশীলতা ও মৌলিকতায় সর্বজন স্বীকৃত ছিলেন রশীদ চৌধুরী ছিলেন। প্রচলিত ফর্ম ভেঙে নতুন করে ফর্ম গড়া, ট্যাপেস্ট্রিতে লোকজ ফর্মের মিশেল এবং একইসঙ্গে উত্তর আধুনিকতার স্পর্শ তাকে এ মাধ্যমে পথিকৃৎ শিল্পীতে পরিণত করেছিল। নস্টালজিয়া ও রোমান্টিকতার মিশ্রণে চিরায়ত বাংলার দৃশ্যপট সম্পূর্ণ নতুন করে তিনি নির্মাণ করেন। পাশ্চাত্যের আধুনিক শৈলীর প্রয়োগে একদিকে যেমন এঁকেছেন বিমূর্ত চিত্রকলা, অন্যদিকে পাট-রেশমের মিশ্রণে বুনন শিল্প (ট্যাপেস্ট্রি) নির্মাণ তাঁকে বাংলাদেশের চিত্রকলার ইতিহাসে অনন্য স্থান দিয়েছে। জীবনের শেষ দশ বছর ইসলামী ক্যালিগ্রাফি এবং অন্যান্য সাংস্কৃতিক প্রভাব তাঁর শিল্পকর্মে রূপায়িত হতে দেখা গেছে। প্রসঙ্গত, শিল্পী রশীদ চৌধুরীর শিল্পকর্ম নিয়ে ধানম-ির গ্যালারি চিত্রকে শুরু হয়েছে প্রদর্শনী। গত ২৮ জানুয়ারি বিকেলে ১৪ দিনব্যাপী প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন বিদ্যুত, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ। বিশেষ অতিথি ছিলেন রশীদ চৌধুরীর ছোট ভাই মেজর (অব.) জুলফিকার এইচ চৌধুরী ও ঢাকা বিশ^বিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক নিসার হোসেন। সভাপতিত্ব করেন বরেণ্য শিল্পী রফিকুন নবী। সঞ্চালনা করেন গ্যালারি চিত্রকের পরিচালক শিল্পী মোঃ মুনিরুজ্জামান। প্রদর্শনীতে শিল্পীর বিভিন্ন সময়ের আঁকা পেইন্টিং ও ট্যাপেস্ট্রি মিলিয়ে ৪২টি শিল্পকর্ম স্থান পেয়েছে। প্রদর্শনী চলবে ১০ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। প্রদর্শনীর জন্য গ্যালারি সকাল ১০টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকবে।
×