যশোরে নষ্ট ইউরিয়া নতুন প্যাকেটে বিক্রি

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর অফিস ॥ নওয়াপাড়ায় সাউথ ডেল্টা শিপিং এ্যান্ড ট্রেডিং লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠান নষ্ট ইউরিয়া সার গুঁড়া করে নতুন প্যাকেটে ভরে সরকারী বাফারে প্রেরণ ও খুচরা বিক্রি করছে বলে অভিযোগ করেছে ডিলার ও কৃষকরা। ডিলার ও কৃষকদের অভিযোগের ভিত্তিতে গত রবিবার বিকেলে সরেজমিনে নওয়াপাড়া পৌরসভার মশরহাটি গ্রামে ভৈরব নদ তীরবর্তী সাউথ ডেল্টার কয়েকটি গুদামে গিয়ে দেখা গেছে, বৃষ্টির পানিতে ভেজা প্রায় ২ বছরের পুরাতন নষ্ট জমাট বাঁধা হাজার হাজার বস্তা ইউরিয়া সার বরফ ভাঙ্গা মেশিনের সাহায্যে গুঁড়া করে নতুন বিসিআইসি’র ৫০ কেজির বস্তায় ভরা হচ্ছে। এছাড়া আরো কয়েকটি গুদামের মধ্যে নষ্ট সার মাটিতে ফেলে গুঁড়া করে শোকানো হচ্ছে। কর্মরত শ্রমিকরা জানান, বড় বড় জমাট বাঁধা সার পুরাতন বস্তা থেকে বের করে মেশিনে গুঁড়া করাই তাদের কাজ। এরপর গুঁড়া করা সার নতুন লাল ও সাদা বস্তায় ভরছে আমাদের অপর একটি শ্রমিক দল। সাউথ ডেল্টা নওয়াপাড়া অফিসের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তা মাহাবুবুর রহমান লাবু জানান, আশুগঞ্জ ফার্টিলাইজার এ্যান্ড কেমিক্যাল কোম্পানীর নির্দেশনা মোতাবেক মজুদ ও ড্যাম্পিংকৃত শক্ত জমাট বাঁধা ব্যবহার অনুপযোগী সার ভেঙ্গে গুঁড়া করে ব্যবহার উপযোগী নিট ৫০ কেজি ওজনের ব্যাগে ভরে যশোর বাফার গুদামে পৌঁছানোর অনুমতি নেয়া আছে। ওই নির্দেশনা পত্রটি গত বছরের ১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ এর হওয়ায় তাঁর নিকট জানতে চাওয়া হয় এটাতো এক বছর আগের নির্দেশনা। এ বছরের নির্দেশনাপত্র চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে যোগাযোগ করতে বলেন। এ সময় সাউথ ডেল্টার লজিস্টিক ম্যানেজার এমডি মাহাবুবুর রহমান খান সোহেলের ০১৭২০-৫৪৪৭৩৩ মুঠোফোনে বারবার যোগাযোগ করা হলে তিনি কল রিসিভ করেননি। এ ব্যাপারে বিসিআইসি যশোর বাফার গুদামের হিসাবরক্ষক ও ইনচার্জ আব্দুর রহিম খন্দকার জানান, ২০১৭ সালে সাউথ ডেল্টার জমাট বাঁধা সার গুঁড়া করে যশোর বাফারে প্রেরণের নির্দেশনা ছিল। তবে ২০১৮ সালের বিষয়টি তিনি জানাতে পারেননি। গোপন সূত্রে জানা গেছে, সাউথ ডেল্টা নওয়াপাড়া গুদাম থেকে নি¤œমানের চায়না পানপাতা চিকন ইউরিয়া সার লাল বস্তায় ভরে ডিলারদের নিকট সরবরাহ করছে। এছাড়া চায়না থেকে আমদানিকৃত ইউরিয়া সার নিজেদের অব্যবস্থাপনার কারণে জমাট বাঁধায় পুনরায় তা গুঁড়া করে বিসিআইসির বলের প্যাকেটে ভরে বাজারজাত করছে। যে কারণে সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে সাধারণ কৃষক। বর্তমান সরকার কৃষিবান্ধব সরকার। আর এ কৃষকের মাঝে বিভিন্ন ডিলারদের মাধ্যমে নষ্ট ইউরিয়া সার বিক্রির ফলে চরম অর্থনৈতিক ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে তারা। ফসল উৎপাদন থেকে বঞ্চিত হচ্ছে কৃষক। এর সাথে জড়িত প্রতিষ্ঠান ও কর্মকর্তা এবং ডিলারদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন কৃষক ও একাধিক ডিলারবৃন্দ।