ঢাকা, বাংলাদেশ   শুক্রবার ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১

জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলা

আইনজীবীদের হট্টগোল, বিচার কাজ বন্ধ

প্রকাশিত: ০৫:৫৮, ১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮

আইনজীবীদের হট্টগোল, বিচার কাজ বন্ধ

স্টাফ রিপোর্টার ॥ জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায় আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক অব্যাহত রয়েছে। এদিকে যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের দ্বিতীয় দিনে আসামিপক্ষ ও রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে হট্টগোলের ঘটনা ঘটে। এসময় দুই পক্ষই বাগবিত-ায় জড়িয়ে পড়েন। আদালতে সৃষ্টি হয় চরম উত্তেজনা। এক পর্যায়ে বিচারক ড. আখতারুজ্জামান এজলাস কক্ষ ত্যাগ করে তার খাসকামরায় চলে যান। হট্টগোলের কারণে প্রায় ১৫ মিনিট বিচারকাজ বন্ধ থাকে। এরপর পরিস্থিতি শান্ত হলে ১৫ মিনিট পর পুনরায যুক্তিতর্ক শুরু হয়। আসামি জিয়াউল ইসলাম মুন্নার পক্ষে যুক্তি উপস্থাপন শেষ না হওয়ায় পরবর্তী যুক্তি উপস্থাপনের জন্য আজ বৃহস্পতিবার দিন ধার্য করেন আদালত। বকশীবাজারের ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার খেলার মাঠে স্থাপিত ঢাকার ৫নং বিশেষ জজ ড. আখতারুজ্জামান এ আদেশ প্রদান করেছেন। এ প্রসঙ্গে দুদকের প্রধান আইনজীবী মোশারফ হোসেন কাজল জনকণ্ঠকে বলেন , আদালতের সময় নষ্ট করার জন্য প্রতিনিয়ত তারা এ সমস্ত কাজ করছে। তাদের জন্যই বুধবার ১৫ মিনিট বিচার কাজ বন্ধ ছিল। ওরা (আসামিপক্ষের আইনজীবী ) আদালতকে রাজনৈতিক প্লাটফরম বানাতে চায়। তারা আদালতে রাজনৈতিক বক্তব্য দিয়ে যাচ্ছে। আমি এর প্রতিবাদ করেছি। তারা কথায় কথায় রাজনৈতিক রেফারেন্স টেনে আনছে। প্রতিনিয়ত সরকার , প্রধানমন্ত্রী , দুদকের আইনজীবী, তদন্তকর্মকর্তাদের নিয়ে কটূক্তি করে যাচ্ছে। আমি আদালতে প্রতিবাদ করে বলেছি প্রধানমন্ত্রীকে রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করা উচিত নয়। বুধবার বেলা ১১টা ৩০ মিনিটে আদালতে উপস্থিত হয়ে হাজিরা প্রদান করেন বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়া। এর আগে বেলা ১১টা ১৮ মিনিটে এ মামলার আসামি ট্রাফিক বিভাগের সাবেক ভারপ্রাপ্ত পরিচালক জিয়াউল ইসলাম মুন্নার পক্ষে দ্বিতীয় দিনের মতো যুক্তি উপস্থাপন শুরু করেন আইনজীবী আমিনুল ইসলাম। বেলা ৩টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত যুক্তি উপস্থাপন চলে। তবে যুক্তি উপস্থাপনের একপর্যায়ে রাষ্ট্রপক্ষ এবং আসামিপক্ষের আইনজীবীরা হট্টগোল শুরু করেন। আসামিপক্ষের আইনজীবী আমিনুল ইসলাম যুক্তি উপস্থাপনের সময় মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সিলেট সফরে জনসভা করা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা সিলেটে গিয়ে যে ভোট চেয়েছেন, সেটা তার ব্যক্তিগত কাজ নাকি সরকারী কাজ।’এসময় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মোশারফ হোসেন কাজল উঠে দাঁড়িয়ে বলেন, ‘আপনি আদালতে এসব কথা বলতে পারে না। আপনি মামলার রেকর্ড অনুযায়ী কথা বলেন।’ পেছন থেকে খালেদার আইনজীবীরা এ সময় চিৎকার করে ওঠেন। কাজলকে উদ্দেশ করে তারা বলতে থাকেন, ‘আপনি চুপ করেন। আপনি আদালতের অনুমতি নিয়ে কথা বলেন। এটা রেফারেন্স।’ পরে মোশারফ হোসেন কাজল বলেন, ‘না না, প্রধানমন্ত্রীর বিষয়ে আপনি এভাবে বিষয়বস্তুর বাইরে কথা বলবেন না, এভাবে বলতে দেয়া হবে না।’ এরপর দুই পক্ষে হট্টগোল চলতে থাকে। বেলা ১১টা ৫৪ মিনিটে বিচার ড. আখতারুজ্জামান তার চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়িয়ে ভেতরের কক্ষে চলে যান। এরপর শান্ত হয়ে বসে পড়ে দুই পক্ষই। আর মিনিট ১৫ পর বিচারক আবার এজলাসে এলে শুরু হয় যুক্তিতর্ক। জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্টের নামে অবৈধভাবে তিন কোটি ১৫ লাখ ৪৩ হাজার টাকা লেনদেনের অভিযোগে খালেদা জিয়াসহ চারজনের বিরুদ্ধে ২০১০ সালের ৮ আগস্ট তেজগাঁও থানায় আরও একটি মামলা করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।
×